মিনুর মুত্যু দুর্ঘটনা নাকি হত্যা, তদন্তের দাবি আইনজীবীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ৪ জুলাই ২০২১ রবিবার
ছবি: সংগৃহীত
আসামি না হয়েও খুনের মামলায় প্রায় তিন বছর কারাগারে থাকার পর মুক্তি পাওয়া মিনু আক্তার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। ১৬ জুন চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তি পাবার ১৩ দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়। নাম পরিচয় না জানায় তাকে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হলেও গতরাতে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এদিকে মিনুর মুত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় নাকি হত্যা সেটি পরিস্কার করে জানতে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, গত ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদার হাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায় দ্রুতগতির একটি ট্রাক মিনুকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (২৯ জুন) ভোরে মিনুর মৃত্যু হয়।
পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় একদিন পর অজ্ঞাত হিসেবে লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। কিন্তু গতরাতে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয়, অজ্ঞাত দাফন করা লাশটি মিনুর।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ট্রাকচাপায় আহত মিনুকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়েছিল। পরের দিন তিনি মারা যান। তবে নাম পরিচয় না জানায় তাকে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়। পরে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে, মিনুর পক্ষে হাইকোর্টে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী মোহাম্মাদ শিশির মনির বলেন, মিনুর জেল খাটার বিষয়টি যেহেতু উচ্চ আদালতে বিচারাধীন, তাই মিনুর মৃত্যুর কারণটি সুনিদির্ষ্টভাবে উঠে আসা উচিত। যদি মিনু সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় সেটিও আসা উচিত। আবার অন্য কেউ যদি মিনুকে হত্যা করে থাকে সেটিও আসা উচিত। আমি এ বিষয়টি খুব তাড়াতাড়ি উচ্চ আদালতের নজরে আনবো।
মিনুর চট্টগ্রামের আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ বলেন, আমার কাছে মিনুর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে খটকা লাগছে। মিনুর মৃত্যূর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। কারণ মিনুর জেলে যাওয়ার বিষয়ে অনেক কিছুই হয়ে গেল। এজন্য তার সড়ক দুর্ঘটনায় মুত্যুর বিষয়টি তদন্ত হওয়া দরকার। মিনু আসলেই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, নাকি অন্য কেউ মিনুকে মেরেছে। তদন্ত করলে সঠিক বিষয়টি জানা যাবে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের একটি বস্তিতে বসবাস করতেন মিনু। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। তাকে ছেড়ে গেছেন পঙ্গু রিকশাচালক স্বামী। বাবার বাড়িতেও তেমন কেউ নেই। একমাত্র ভাই মাঝেমধ্যে খোঁজখবর নিতেন এই অভাবী নারীর। মিনুর বড় ছেলে একটি মুদি দোকানের কর্মচারী, মেজোটা চায়ের দোকানে কাজ করত ফুটফরমেয়াশির। অভাব লেগেই থাকতো তার পরিবারে। ছোট মেয়েটা পাঁচ বছর বয়সে মারা গেছে।
অভাবের তাড়নায় জেল-জুলুমকে পাত্তা না দিয়েই গিয়েছিলেন কারাগারে। হত্যা মামলার আসামি কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমির প্রস্তাব মেনে নিয়েছিলেন সহজেই। কিছু চাল-ডালের লোভে অনেকটা অপ্রকৃতিস্থ ও সহজ প্রকৃতির মিনু বিচারকের কাছে গিয়ে হাত তুলেছিলেন নির্ভয়ে। মিনুর এই সরলতাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে লাপাত্তা খুনের মামলার আসামি কুলসুমি আক্তার কুলসুম।
মিনু সম্পর্কে এমনটাই বলছিলেন তার আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ। ঘটনার মূল বিষয়বস্তু আলোচনায় আসে মিনুর শিশু মেয়ে জান্নাতকে কেন্দ্র করে। আড়াই বছরের জান্নাতকে ঘরে রেখেই কারাগারে গিয়েছিলেন মিনু। উপায়ান্তর না দেখে এতিমখানায় ভর্তি করানো হয় শিশু জান্নাতকে। কারাগারে যাওয়ার পর শিশু জান্নাতের খরচ চালাতে না পেরে এতিমখানা থেকে পড়া বাদ দিতে হয়। ছোট শিশু জান্নাতকে নিয়ে লালন-পালন করতে থাকেন প্রতিবেশী একজন। ওই বাসায় জান্নাত অন্য শিশুদের সঙ্গে থাকত।
করোনাকালে একদিন মিনুর মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় আইনজীবী মুরাদের। তিনি তার পরিচয় জানতে চাইলে শিশুটি বলে আমার মা কারাগারে। কিন্তু কেন? এরপর বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রামের কারাপরিদর্শক নথি ঘাঁটাঘাটি করে দেখেন কুলসুমির পরিবর্তে জেল খাটছেন মিনু। কারাগারে রাখা বালাম বইসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে এমনটাই পাওয়া যায়। এরপর চট্টগ্রামের আদালতের হস্তক্ষেপে ধাপে ধাপে বের হয় মিনুর কারাগারে যাওয়ার বিষয়।
পরে এ মামলার উপনথি বিশেষ বাহকের মাধ্যমে পাঠানো হয় হাইকোর্টে। কয়েকদফা শুনানি শেষে গত ৭ জুন মিনুকে কারামুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সে আদেশের কপি চট্টগ্রামের আদালতে পৌঁছানোর পর বুধবার (১৬ জুন) মিনু কারামুক্ত হন। কারামুক্ত হয়ে চলে যান আরফিন নগর ছিন্নমূল বস্তিতে। মিনু কারামুক্ত হলেও তার রেখে যাওয়া শিশু জান্নাত এরই মধ্যে মারা গেছে বলে জানিয়েছে আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ।
মিনু যেভাবে হলেন ‘কুলসুমি’।
জানা যায়, ২০০৬ সালের ৯ জুলাই মুঠোফোন নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে চট্টগ্রাম নগরের রহমতগঞ্জ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পোশাককর্মী কোহিনুর বেগমকে হত্যা করা হয়। ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর ওই ঘটনায় কারাগারে পাঠানো হয় কুলসুমিকে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ (চতুর্থ আদালত) আদালত থেকে ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান কুলসুমি।
ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর। রায়ে কুলসুমিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ১২ জুন কুলসুমি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান মিনু আক্তার। ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে কুলসুমি হিসেবে হাইকোর্টে আপিল করা হয়। এই আপিল আজ হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। মামলার নথি পর্যালোচনায় কারাগারের মহিলা ওয়ার্ড পরিদর্শনের সময় কুলসুমির বদলে মিনুর সাজা খাটার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
-জেডসি
- হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু
- সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম
- সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
- কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাক-সবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
- চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি
- শিশু হাসপাতালের আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে
- শিব নারায়ণ দাশের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
- পরলোকে জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ন
- মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে
- ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট
- আজ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন
- তীব্র তাপপ্রবাহ, সতর্ক থাকতে মাইকিং
- ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপ আজ শুরু
- ২০২৩ সালে দেশে ধর্ষণের শিকার দুই শতাধিক শিশু
- বিশিষ্ট প্রচ্ছদ শিল্পী ধ্রুব এষ আইসিইউতে
- বইমেলায় কানিজ কাদীরের কবিতার বই ‘মন’
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- ২৯ ফেব্রুয়ারি বা লিপ ইয়ার নিয়ে ১০টি মজার তথ্য
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- ২৬৩ সাংবাদিকের জন্য ২ কোটি টাকা অনুমোদন
- জাপার সভায় গান গাইলেন রওশন এরশাদ
- কচি-কাঁচার আয়োজনে ভাষা দিবসে সাংস্কৃতিক আয়োজন
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
- গুলবদন বেগম: এক মুঘল শাহজাদির সাহসী সমুদ্রযাত্রার গল্প
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- রোমান্টিক যুগের অন্যতম কবি জন কিটস
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ