ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৬:৪৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের দখলে যাচ্ছে বাংলাদেশের শস্যের বাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৩৯ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৫ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নতুন নতুন বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে। ফলে বৈশ্বিক শস্য ও তেলবীজ বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি পরিমাণে শস্য ও কৃষিপণ্য কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এ পদক্ষেপে এশিয়ার বাজার হারাতে পারে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও রাশিয়া।

ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ তাদের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক কমানোর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্ধিত কৃষিপণ্য কেনার বিষয়ে একমত হয়েছে। আঞ্চলিক শস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডও খাদ্যশস্য ক্রয় বাড়াতে পারে।

সিডনির আইকন কমোডিটিজের পরিচালক ওলে হাউ বলেন, ‘মার্কিন কৃষি রপ্তানি এশিয়ায় স্পষ্টভাবে বাজার দখল করতে চলেছে। বাণিজ্য চুক্তিগুলো একদিকে চাপ সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে মার্কিন গম, ভুট্টা ও সয়ামিলের কম দামও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এটা প্রতিদ্বন্দ্বী রপ্তানিকারকদের চেয়ে সস্তা।’

এশিয়া প্রধান খাদ্য আমদানিকারক অঞ্চল এবং এটি বৈশ্বিক সরবরাহকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার। জনসংখ্যা ও আয় বাড়ায় এই অঞ্চলে খাদ্যপণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী গম, ভুট্টা ও সয়ামিল আমদানির প্রায় ৩০ শতাংশ এশিয়ায় উৎপাদন হয়ে থাকে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন শস্যের এই ঢেউ প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য মূল্য কমাতে বাধ্য করবে। সেই সঙ্গে নতুন বাজার খুঁজতে গিয়ে দীর্ঘ দূরত্বে শস্য পরিবহনের খরচও বাড়বে।

গত দশকে কৃষ্ণসাগর ও দক্ষিণ আমেরিকার সরবরাহকারীরা এশিয়ার বাজারে অবস্থান শক্ত করেছে। ইন্দোনেশিয়ার গম-ময়দা উৎপাদক সমিতির তথ্য অনুসারে, গত পাঁচ বছরে ইন্দোনেশিয়ায় ইউক্রেন, রাশিয়া ও আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি বাড়ায় মার্কিন গমের হিস্যা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে।

সিঙ্গাপুরের দুজন শস্য ব্যবসায়ী জানান, ইন্দোনেশিয়ার আটা-ময়দার কলগুলো গত জুলাই থেকে প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার টন মার্কিন গম কিনেছে। দেশটির অ্যাসোসিয়েশনটি শুল্ক কমানোর আলোচনার অংশ হিসেবে বছরে ১০ লাখ টন মার্কিন গম কেনার জন্য সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় ছয় লাখ ৯৩ হাজার টন গম বেচেছে। অস্ট্রেলিয়া সাধারণত ইন্দোনেশিয়ার চাহিদার প্রায় এক-চতুর্থাংশ গম সরবরাহ করে। তবে নতুন চুক্তির কারণে কয়েক লাখ টন বিক্রয় হারাতে পারে দেশটি।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার টন মার্কিন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো গম কেনা হয়নি। গত ২০ জুলাই বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে বছরে সাত লাখ টন মার্কিন গম আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ভিয়েতনাম পশুখাদ্যের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল বাজার। দেশটি মার্কিন গম, ভুট্টা ও সয়ামিল আমদানি করবে। গত জুনে ভিয়েতনামের কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, সেখানকার ফার্মগুলো ২০০ কোটি ডলারের মার্কিন কৃষিপণ্য কেনার জন্য সমঝোতা স্মারকে সই করবে। এর মধ্যে আইওয়া থেকে ৮০ কোটি ডলারের পণ্যও অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে– ভুট্টা, গম, শুকনো শস্য (মূলত পশুখাদ্য) ও সয়াবিন খাবার।

দুজন সিঙ্গাপুরভিত্তিক ব্যবসায়ীর মতে, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন মার্কিন ভুট্টার প্রধান আমদানিকারক হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। একজন ব্যবসায়ী জানান, থাইল্যান্ড কৃষ্ণসাগরের ফিড গম এবং এশিয়ার ভুট্টার বিকল্প হিসেবে ১০ লাখ টনের বেশি মার্কিন ফিড ভুট্টা কিনতে পারে।

মার্কিন সয়াবিন রপ্তানি কাউন্সিলের আঞ্চলিক পরিচালক টিমোথি লোহ বলেন, ‘ফলপ্রসূ বাণিজ্য আলোচনা হয়েছে, এটা আমাদের অঞ্চলে মার্কিন পণ্যের বাজারকে শক্তিশালী করার সুযোগ এনে দিয়েছে।’

বর্তমানে কিছু মার্কিন কৃষিপণ্য অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। এই সপ্তাহে মার্কিন নরম সাদা গম প্রতি টন প্রায় ২৮০ ডলার মূল্যে বেচা হয়েছে, যা একই মানের কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের গমের সমান। মার্কিন ভুট্টা দক্ষিণ আমেরিকার পণ্যের চেয়ে প্রতি টনে ১০-১৫ ডলার কম। এ ছাড়া মার্কিন সয়ামিল প্রতিদ্বন্দ্বী সরবরাহকারীদের তুলনায় পাঁচ ডলার ছাড়ে পাওয়া যাচ্ছে।