ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ১:৩৬:২৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি, মাছ-মাংসে আগুন আরও ২ দিন দাবদাহের পূর্বাভাস আজ থেকে বাড়ছে ট্রেনভাড়া, দেখে নিন কোন রুটে কত ব্রাজিলে প্রবল বর্ষণে নিহত ৩৯, নিখোঁজ ৭০ আজ যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে মুন্সিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত ৩ বিশ্বব্যাপী ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ছে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ

রংপুর বিভাগের ৪৬১৯ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৪৮ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ঐতিহাসিক প্রতীক শহীদ মিনার। যে মিনার বাংলাদেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসের সাক্ষী। অথচ রংপুর বিভাগের ৫০ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো সেই শহীদ মিনার গড়ে তোলা হয়নি।

ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর আর স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার গড়ে না ওঠায় শিক্ষার্থীরা সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানতে পারছে না। শুধু তাই নয় বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানও করতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি দ্রুত সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরসহ বিভাগের আট জেলায় ৯ হাজার ৫৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ৪ হাজার ৯২৫টিতে। বাকি ৪ হাজার ৬১৯টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। তবে বিভাগের মধ্যে দিনাজপুর জেলায় প্রায় শতভাগ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। আর সবচেয়ে কম শহীদ মিনার রয়েছে গাইবান্ধা জেলায়।

স্থানীয়রা জানান, যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, তারা জাতীয় দিবসগুলোতে বাঁশ ও কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদ ও সংগ্রামীদের স্মরণ করেন। আবার কেউ কেউ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। এতে দুর্ভোগসহ নানা সমস্যা হয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি করছেন সর্বস্তরের মানুষ।

রংপুর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলার ১ হাজার ৪৫৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ৮৩৫টিতে, ঠাকুরগাঁওয়ে ৯৯২টির মধ্যে ৩৫৪টিতে, পঞ্চগড়ে ৬৬৩টির মধ্যে মাত্র ১২৩টিতে, দিনাজপুরে ১ হাজার ৮৭০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১ হাজার ৮৬৪টিতে, নীলফামারীতে ১ হাজার ৮৫টির মধ্যে ৮৩২টিতে, লালমনিরহাটে ৬৬৮টির মধ্যে ৪৪৭টিতে, কুড়িগ্রামে ১ হাজার ২৪০টির মধ্যে ২১৬টি রয়েছে এবং গাইবান্ধায় ১ হাজার ৪৬৫টির মধ্যে ২৫৪টিতে শহীদ মিনার রয়েছে।

সরেজমিনে রংপুর মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিবসটি পালন করে থাকেন। আবার কেউ কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পরেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলো না এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়গুলোতে সরকারিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণে বরাদ্দের অভাব রয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণে বেসরকারিভাবে কেউ এগিয়ে আসে না। অনেক বিদ্যালয়ে জায়গা স্বল্পতার কারণে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তারা বলেন, ভাষা শহীদদের স্মরণ করতে পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করতে হবে।

রংপুরের ভাষাসৈনিক আশরাফ হোসেন বড়দা বলেন, সরকারি-বেসরকারি সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা উচিত। এই মিনার আমাদের ইতিহাস ও অর্জনের অন্যতম স্তম্ভ। বর্তমানে বিভাগের অর্ধেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এতে করে জাতীয় দিবসগুলোতে শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছে না। ফলে তারা ইতিহাস চর্চার সুযোগ পাচ্ছে না। যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, সেসব বিদ্যালয়ে জরুরি ভিত্তিতে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় প্রাথমিকের উপপরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, সেসব বিদ্যালয়ের তালিকা করে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। বেশ কিছু বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে। বাকিগুলোর জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।