ঢাকা, শনিবার ১৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:০৪:২৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বিশ্বে প্রতি ২০ নারীর মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন না পলাতক ব্যক্তিরা ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান হাদির পরিবারের পাশে ডা. জুবাইদা রহমান

আজ ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস 

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:১৯ এএম, ৯ ডিসেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

বেগম রোকেয়া।  সংগৃহিত ছবি।

বেগম রোকেয়া। সংগৃহিত ছবি।

আজ বৃহস্পতিবার ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছর এ দিবসটি সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পালন করা হয়।

বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও তিনি নারী জাগরণের অগ্রদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তিনি উনবিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিমান বাঙালী সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোকেয়া পদক প্রদান ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি থাকবেন।

রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া নারীমুক্তি, সমাজ সংস্কার ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পথিকৃৎ। কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিধিনিষেধের অন্ধকার যুগে শৃঙ্খলিত বাঙালি মুসলিম নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি পর্দার অন্তরালে থেকেই নারীশিক্ষা বিস্তারে প্রয়াসী হন এবং মুসলমান মেয়েদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তির পথ সুগম করেন।

তিনি বলেন, সামাজিক নানা বিধিনিষেধ, নিয়ম-নীতির বেড়াজাল অগ্রাহ্য করে বেগম রোকেয়া আবির্ভূত হন অবরোধবাসিনীদের মুক্তিদূত হিসেবে। রাষ্ট্রপতি আশা করেন, বৈষম্যহীন সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বেগম রোকেয়ার জীবনাদর্শ ও কর্ম আমাদের নারী সমাজের অগ্রযাত্রায় প্রেরণা যোগাবে।

প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণের অগ্রদূত। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনালগ্নে নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণে তিনিই প্রধান নেতৃত্ব দেন। সাহিত্যচর্চা, সংগঠন পরিচালনা ও শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া সমাজ সংস্কারে এগিয়ে আসেন এবং স্থাপন করেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বেগম রোকেয়ার আদর্শ, সাহস, কর্মময় জীবন নারী সমাজের এক অন্তহীন প্রেরণার উৎস।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঢাকায় ও শাখাগুলোতে আলোচনা সভা, সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।

বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান রংপুরের পায়রাবন্দে দিবসটি পালন উপলক্ষে বেগম রোকেয়া ফোরাম দিনব্যাপি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

যে সময় এ উপমহাদেশে নারীদের শিক্ষা অর্জনের কথা ভাবাই যেত না, সে সময় বেগম রোকেয়া পরিবার ও সমাজের সমস্ত প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে শিক্ষার্জনে ব্রতী হন। তার সেই সাধনার পথ ধরেই রচিত হয় নারী শিক্ষার পথ। তারপর দিনে দিনে প্রশস্ত হয় সেই পথ। তারই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশেও আজ শিক্ষা ও সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে নারীদের সদম্ভ পদচারণা আমাদের দেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করছে।

তৎকালীন মুসলিম সমাজব্যবস্থা অনুসারে বেগম রোকেয়া ও তার বোনদের বাইরে পড়াশোনা করতে পাঠানো হয়নি। তাদের ঘরে আরবি ও উর্দু শেখানো হয়। তবে রোকেয়ার বড় ভাই ইব্রাহীম সাবের আধুনিকমনস্ক ছিলেন। তিনি তার দুই বোন রোকেয়া ও করিমুন্নেসাকে ঘরেই গোপনে বাংলা ও ইংরেজি শেখান।

১৮৯৮ সালে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয় খান বাহাদূর সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। তিনি ছিলেন উর্দুভাষী। তা সত্ত্বেও তিনি রোকেয়াকে শিক্ষা এবং সাহিত্য সাধনায় অনুপ্রেরণা দিতেন। ১৯০২ সালে রোকেয়া লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ‘পিপাসা’ রচনার মধ্য দিয়ে। ১৯০৯ সালে সাখাওয়াত হোসেন মারা যান।

স্বামীর মৃত্যুর পাঁচ মাসের মাথায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতিন’ নামে একটি নারী সংগঠনেরও প্রতিষ্ঠাতা।

বেগম রোকেয়ার উল্লেখিত রচনাসমূহ হলো পিপাসা (১৯০২), মতিচূর (১৯০৪), সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৮), সওগাত (১৯১৮), পদ্মরাগ (১৯২৪) ও অবরোধবাসিনী (১৯৩১)।