ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:০৭:০০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

ফেন্সিংয়ে আলো ছড়াচ্ছেন ইশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:২৩ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৫ রবিবার

এমিলি রায় ইশা। ছবি : সংগৃহীত

এমিলি রায় ইশা। ছবি : সংগৃহীত

হাসপাতালে চিকিৎসাপত্র ও ওষুধ নিয়ে রোগীর সেবা করাই তার কাজ। পাশাপাশি এমিলি রায় ইশা হাতে তুলে নিয়েছেন তরবারি। শুধু তাই নয়, গত শনিবার শেষ হওয়া জুলাই রেভ্যুলেশন ফেন্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে পদক মঞ্চেও উঠেছেন মিরপুরের এই তরুণী। মিরপুর ফেন্সিং ক্লাবের হয়ে আগে খেললেও এবার আনসারের জার্সিতে মেয়েদের ফয়েল এককে জিতেছেন ব্রোঞ্জ।

পেশায় নার্স ইশা। ২০২১ সালে পড়তেন মিরপুর বাঙলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে। সেবার ফেন্সিং ফেডারেশন থেকে দুজন কোচ জুনিয়র ফেন্সার খুঁজতে গিয়েছিলেন বাঙলা কলেজে। তরবারি দিয়ে মারামারির খেলার প্রদর্শনী দেখে খেলাটিকে ভালোবেসে ফেলেন ইশা। এরপর ২০২২ সালে প্রথমবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েই জুনিয়র বিভাগে জেতেন সোনা। 

আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মিরপুর ক্রীড়াপল্লিতে চলছে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের ক্যাম্প। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে জাতীয় দলের ক্যাম্পে একমাত্র জুনিয়র হিসাব ডাক পেয়েছেন তিনি।

এবারের জুলাই রেভ্যুলেশন চ্যাম্পিয়নশিপে সিনিয়র ও অভিজ্ঞদের জয়জয়কার। তারপরও তিনি সোনা জিততে চেয়েছিলেন। ব্রোঞ্জ জিতে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ ইশার।
 
তিনি বলেন,  ‘আমি নিজের খেলায় সন্তুষ্ট নই। যেভাবে অনুশীলনে খেলি সেভাবে খেলতে পারিনি। আরও ভালো করতে পারতাম। কিন্তু নার্ভাস হয়ে পড়ি। সিনিয়রদের হারাতে পারব কি না এই ভয় পেয়ে বসেছিল।’

ইশার বাবা রিচার্ড রায় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। শুরুতে মেয়েকে ফেন্সিংয়ে আসতে দিতে চাইতেন না। তবে যতই দিন গড়িয়েছে মেয়েকে সমর্থন দিয়ে গেছেন। 

ইশার কথা, ‘প্রথম দিকে বাবা সমর্থন দিতেন না। কারণ এটা ব্যয়বহুল খেলা। যে ব্লেড দিয়ে খেলি এটা প্রায়ই ভেঙে যায়। ইকুইপমেন্ট কিনে দিতেন না বাবা। বলতেন, এটা খেলে কী হবে? এখনো তত জনপ্রিয় না খেলাটা। যখন দেখলেন যে আমি নিয়মিত ভালো করছি তখন সাহস জোগাতেন। উৎসাহ দিতেন। আমি খারাপ খেললে কষ্ট পান বাবা।’

মারামারির খেলা হলেও কখনো ইনজুরিতে পড়েননি ইশা, ‘খেলার সময় সেভাবে ইনজুরিতে পড়িনি। এই খেলায় বড় আঘাত কখনো লাগে না। অনেক নিরাপদ খেলা। সেফটি মেইনটেইন করে খেলি। ছোটখাটো আঘাত লাগলেও পরে ঠিক হয়ে যায়।’

২০২২ সালে প্রথমবার জুনিয়রে সোনা জেতার ঘটনাটা এখনো মনে পড়ে ইশার, ‘ওই দিন স্বর্ণ জয়ের পর বাবা আনন্দে কান্না করেছিলেন। আত্মীয়স্বজনদের ফোন দিয়ে বলেছিলেন, আমার মেয়ে ন্যাশনালে সোনা জিতেছে।’

মিরপুরের সাইক নার্সিং কলেজের ছাত্রীর কথা, ‘এখানে প্রচুর কষ্ট করতে হয়। কলেজে ৮০ ভাগ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হয়। যদিও পড়াশোনায় আমি ভালো। সিজিপিও ভালো। খেলা ও পড়া দুটোই সমানভাবে চালিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া আমার ক্লাসমেটরাও অনেক আন্তরিক। তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’ 

এসএ গেমসের ক্যাম্পে ডাক পাওয়ায় কলেজ থেকে ছুটি নিয়েছেন ইশা, ‘স্যারদের কাছে আবেদন করি। বলেছি, আমি ক্যাম্প করতে চাই, পড়তেও চাই। প্রিন্সিপাল স্যার বলেছেন তুমি ছুটিতে থাক। মিডটার্ম পরীক্ষা দিয়েছি ২৬ আগস্ট। আমি নার্সিং ও খেলা দুটোই উপভোগ করছি।’ 

তিনি বলেন, ‘ফেন্সিং আমার ভালোবাসা। তবে শুধু বাবা-মায়ের জন্য পড়াশোনা করছি।’ ইশার কথা, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নার্সিংকেই বেছে নিতে হবে। এখানে ফেন্সিংয়ে ভালো কিছু করলেও কতটাই বা সুযোগ পাব?’ 

তারপরও ইশা স্বপ্ন দেখেন এসএ গেমসে তার গলায় উঠবে সোনার পদক। পেছনে বাজবে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।