বন্দে আলী মিয়াঃ বাংলাসাহিত্যের কিংবদন্তী কবি
অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:১২ পিএম, ২৭ জুন ২০২৪ বৃহস্পতিবার

কবি কবি বন্দে আলী মিয়া।
আমাদের ছোট গায়ে/ছোট ছোট ঘর/থাকি সেথা সবে মিলে/নাহি কেহ পর।/পাড়ার সকল ছেলে/মোরা ভাই ভাই/একসাথে খেলি/ আর পাঠশালে যাই...
উপরের এই কালজয়ী কবিতাটির রচয়িতা কবি কবি বন্দে আলী মিয়া। প্রতিভাবন একজন মানুষ। আজ ২৭ জুন কবি বন্দে আলী মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী। যদিও বর্তমান প্রজন্ম তাঁকে আজ প্রায় ভুলতে বসেছে। বন্দে আলী মিয়ার যে সম্মান প্রাপ্য ছিল তাও আমরা বেচে থাকাকালীন সময়ে তাঁকে আমরা তা দিতে পারিনি।
অথচ কবি বন্দে আলী মিয়ার লেখা কবিতা ও গল্প আমাদের গ্রামের সাথে প্রতিবেশী-পরিজনদের সাথে আপন করে গভীর ভাবে পরিচিত করে দেয়। তিনি তাঁর কবিতায় পল্লী প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনায় নৈপুণ্যের পরিচয় প্রদান করেছেন। প্রকৃতির রূপ বর্ণনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাঁর রচিত শিশুতোষ গ্রন্থ আজও অমর হয়ে আছে।
আমাদের চেনা জগতের সাথে তার লিখনি সহজেই নিবিড়ভাবে আমাদের পরিচিত করে দেয়। এদেশের শিশুসাহিত্যে বন্দে আলী মিয়ার নাম থেকে যাবে সারাজীবন।
বন্দে আলী মিয়া পাবনার কৃতি সন্তান। তিনি পাবনা জেলার রাধানগরে এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মুন্সী উমেদ আলী ছিলেন পাবনা জজকোর্টের একজন নিম্ন পদের কর্মচারি। কবি জন্মেছিলেন ১৯০৬ সালের ১৭ জানুয়ারি। সেখানেই তিনি শৈশব কৈশোর কাল থেকে বেড়ে উঠেন। প্রাথমিক পর্যায়ের পড়াশোনা রাধানগরে।
১৯২৩ সালে কবি বন্দে আলী মিয়া রাধানগর মজুমদার একাডমী থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীন হন। ১৯২৭ সালে তিনি কলকাতার আর্ট একাডেমি থেকে প্রথম শ্রেণীে পেয়ে পাশ করেন। তিনি ছিলেন কলকাতার আর্ট একাডেমির প্রথম মুসলিম ছাত্র।
এরপর কবি চাকরির সন্ধানে ঘুরতে থাকেন। অবশেষে কলকাতা কর্পোরেশন স্কুলে ১৯৩০ সালে সহকারি শিক্ষকের চাকরি পান। দীঘ ২০ বছর তিনি শিক্ষকতা করেন। এরপর অবসর নেন ১৯৫০ সালে।
কবি বন্দে আলী মিয়ার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ময়নামতির চর। বইটি বের হয় ১৯৩২ সালে। তখন তিনি শিক্ষকতা করছেন কলকাতায়। শিক্ষকতার পাশাপাশি সাহিত্য সৃষ্টি করে গেছেন নিবিড় ভাবে।
ময়নামতির চর কাব্যগ্রন্থটি পাঠ করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছিলেন। এজন্য বন্দে আলী মিয়াকে সাধুবাদ জানিয়ে ছিলেন অবলীলায়।
লিখেছিলেন "তোমার ময়নামতির চর কাব্যখানিতে পদ্মাচরের দৃশ্য এবং তার জীবন যাত্রার প্রত্যক্ষ ছবি দেখা গেল। পড়ে বিশেষ আনন্দ পেয়েছি। তোমার রচনা সহজ এবং স্পষ্ট, কোথাও ফাঁকি নেই। তুমি এগিয়ে যাও আরো বহুদুর"।
কবি বন্দে আলী মিয়া ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাবান একজন মানুষ। তবে তাঁকে শুধু কবি বললে ভুল হয়। একাধারে তিনি ছিলেন গীতিকার গল্পকার, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী ও শিশু সাহিত্যিক। বন্দে আলী মিয়ার মোট গ্রন্থের সংখ্যা ১৩৬টি। সংখ্যাটি কিন্তু মোটেও সহজ নয়।
এর মধ্যে শিশুতোষ গ্রন্থের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এতে শিশুতোষ গ্রন্থ ছিল মোট ১০৫ টি। শিশুদের তিনি খুবই ভালোবাসতেন। সুযোগ পেলেই শিশুদের সাথে তিনি হাসিঠাট্টায় মেতে উঠতেন।
সুখ ও দুঃখ পাশাপাশি আসে, কবির জীবন ছিল এর প্রকৃষ্ট উদ্হারণ। সুখ যেমন তিনি পেয়েছেন। আবার পেয়েছেন অপরিসীম দুঃখ। সাদা মনের মানুষ হওয়াতে ঠকেছেন অনেকবার। টাকার দায়ে জমি বিক্রী করেছেন অতি অল্প টাকায়।
শোনা যায় টাকার অভাবে মাত্র ৫০ টাকায় প্রকাশকের কাছে নিজের লিখা বইয়ের স্বত্ব বিক্রী করে দিয়েছিলেন। বন্দে আলী মিয়ার আত্মসম্মানবোধ ছিল প্রখর। কারো কাছে কোনদিন হাত পাতেননি।
জীবনকালে বহু সমস্যা ও জটিলতার সম্মুখীন হয়েছেন। ভেঙ্গে পড়েননি তিনি। লিখে গেছেন দেশের কথা আর মানুষের কথা। এসব ভাবলে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে।
কবির কর্মস্থল ছির কলকতা, ঢাকা এবং রাজশাহী। তাঁর ‘কাসক’ নাটক থেকে তিনি বেশ বড় রকমের রয়ালটি পেয়েছিলেন। এ টাকা দিয়েই তিনি রাজশাহী বেতারের নিকটে বাড়ি কিনেছিলেন।
কবির বেশকিছু অপ্রকাশিত গ্রন্থও আছে। সেগুলো খুঁজে বের করা দরকার। বাংলা একাডেমী থেকে কবির লেখার সংকলন বেরিয়েছে। সেসব বই গুলো যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন নামকরা প্রতিভাবান শিক্ষক তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন। বেশ কিছু বই বের হয়েছে কবি বন্দে আলী মিয়ার উপরে।
কবি বন্দে আলী মিয়াকে নিয়ে যেভাবে চর্চা হওয়ার কথা সেভাবে হয়নি। এটি খুবই দুঃখজনক। তাঁর থেকে অনেক স্বল্প প্রতিভা নিয়ে অনেকে অনেক দূর গেছেন। কিন্তু তিনি থেকে গেছেন অবহেলিত।
আত্মসম্মান বোধ ছিল বলেই তিনি নিজেকে বিক্রী করেননি। সৎ ছিলেন চিন্তায়। তবে এদেশকে তিনি ভালবাসতেন। ভালবাসতেন মাটি ও মানুষ্ তাঁকে নিয়ে অনেক চর্চা হওয়া দরকার। পাঠ্যবইতে কবির লেখা অবশ্যই থাকা উচিত।
শিশুসাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার, ১৯৭৮ সালে রাজশাহীর উত্তরা সাহিত্য মজলিস পদক লাভ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রাইড অফ পারফরম্যান্স পুরস্কার লাভ করেন সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদান এর জন্য।
অনেক অভিমান নিয়ে কষ্ট নিয়ে কবি বন্দে আলী মিয়া চিরতরে চলে গেছেন ১৯৭৯ সালের ২৭ জুন। কিন্তু তিনি থেকে গেছেন অনেকের মনে। থেকে যাবেন সারাজীবন। শ্রদ্ধা ও ভালবাসা কবির প্রতি।
আজ কবি বন্দে আলী মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী। আজকের দিনে এই গুণীজনকে গভীর শ্রদ্ধা ও অফুরান ভালোবাসা।
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে তিন গাড়ির সংঘর্ষ, আহত ১২
- নার্সারিতে বাহারি ফুলের চাষ করে সফল দুলাল
- সবজিতে স্বস্তি, আগের দামে ফিরল গরু ও মুরগির মাংস
- কুম্ভমেলায় যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ১০
- দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বাড়তে পারে
- ছুটির দিনেও ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বায়ু
- বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জন্মদিন আজ
- ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তির লড়াইয়ে দেড় লাখ শিক্ষার্থী
- মেট্রোরেলে একদিনে যাত্রী পরিবহনে রেকর্ড
- সাভারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, শিশুসহ দগ্ধ ১১
- ফাল্গুনে ভালোবাসায় ঘোরাঘুরি
- যাদের আত্মত্যাগে এলো ভালোবাসা দিবস
- ভালোবাসা দিবসে শতাধিক নাটক
- খুলনায় একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দিলেন নারী
- সংকট কাটেনি ভোজ্যতেলের, বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম
- জুরিবোর্ডে ইলিয়াস কাঞ্চন ও বাঁধন
- ফেসবুকে কত ভিউ হলে কত টাকা আয় হয়?
- নারী ক্রিকেটে জ্যোতির ইতিহাস
- ভয়ংকর মাদকে আসক্ত তিশা-টয়া-সাফা!
- বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়া কাপ নিয়ে গেল ভারত
- রাজধানীতে বুধবার যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ
- ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টাইগারদের সিরিজ জয়
- প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে স্মৃতি মান্ধানার কীর্তি
- দেশীয় ওটিটিতে জয়া আহসান
- অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপে সুপার ফোরে বাংলাদেশ
- নগরীর অভিজাত তারকা হোটেলে ক্রিসমাস
- নারীদের জন্য কঠোর পোশাকবিধি আইন স্থগিত করল ইরান
- সংসার পাততে সপরিবারে ভারত ছাড়ছেন কোহলি
- চলে গেলেন ভাষা সৈনিক মরিয়ম বেগম
- নারী এশিয়া কাপে ভারতের কাছে ৮ উইকেটের হার বাংলাদেশের