ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০৪:০৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’

বিপ্লবী লীলা নাগের জন্মদিন আজ

রাতুল মাঝি | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:২৮ এএম, ২১ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিকন্যা বিপ্লবী লীলা নাগের জন্মদিন আজ ২১ অক্টোবর। বিশ শতকের প্রথমার্ধে শুধু ঢাকা শহরেই নয়, পুরো বাংলায় অসামান্য নারী রাজনিতীবিদ, সংগঠক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি। তিনি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন অন্যতম নেত্রী। এ জন্য কয়েকবার তাঁকে কারা বরণ করতে হয়। 
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী, সাংবাদিক এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সহকারী। উপমহাদেশের স্বাধীনতা ও নারী জাগরণের পথিকৃত, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নারী লীলা নাগ। 
তার পৈত্রিক বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামে। 
লীলা নাগ নারী সমাজে মুখপাত্র হিসেবে ‘জয়শ্রী’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে ছিলেন। লীলা রায় ছবি আঁকতেন এবং গান ও সেতার বাজাতে জানতেন। 
১৯০০ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের আসামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা গিরীশচন্দ্র নাগ আসাম সরকারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাধে চাকরি সূত্রে লীলা নাগের পরিবার আসামের বাসিন্দা হয়। তার মা কুঞ্জলতা নাগ ছিলেন সুগৃহিণী। তার পিতৃ-পরিবার ছিল তৎকালীন সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের পাঁচগাঁও-এর অন্যতম সংস্কৃতমনা ও শিক্ষিত একটি পরিবার। 
১৯০৫ সালে আসামের দেওগর বিদ্যালয়ে লীলা নাগের শিক্ষা জীবনের শুরু। সেখানে দুবছর অধ্যয়নের পর ভর্তি হন কলকাতার ব্রাহ্ম গার্লস স্কুলে। ১৯১১ সালে ঢাকার ইডেন হাইস্কুলে ভর্তি হন। ১৯১৭ সালে ওই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। ১৯১৬ সালে লীলা নাগের পিতা গিরীশচন্দ্র নাগ চাকরি হতে অবসর গ্রহণের পর স্থায়ীভাবে সপরিবারে বাংলাদেশে চলে আসেন। তবে ১৯১৭ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর লীলা নাগ উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য কলকাতার বেথুন কলেজে ভর্তি হন।
কলেজে সেরা ছাত্রী ছাড়াও ছবি আঁকা, গান ও বিভিন্ন খেলাধুলায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন তিনি। এ জন্য কলেজের সবার মধ্যমণি ছিলেন লীলা নাগ। কলেজের রি-ইউনিয়নের উদ্যোক্তা হিসেবে সিনিয়র স্টুডেন্ট নির্বাচিত হয়ে সবাইকে চমকে দেন তিনি। কলেজে শিক্ষাকালীন লীলা নাগ ‘লোকমান্য তিলক’র মৃত্যুদিবস উপযাপনকে কেন্দ্র করে কলেজ অধ্যক্ষর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এবং ছাত্র-ধর্মঘটের ডাক দেন। এছাড়া ‘বড়লাট’ কে নতজানু হয়ে অভিবাদন জানানোর প্রথা বাতিলের আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন।
১৯২১ সালে লীলা নাগ মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এ পাস করেন এবং পদ্মাবতী স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। ওই বছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করেন। সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষা অর্থাৎ সহশিক্ষা চালু ছিল না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর ড. রবার্ট হার্টস লীলা নাগের মেধার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হিসেবে ইংরেজি বিষয়ে মাস্টার্স শ্রেণীতে ভর্তির সুযোগ দেন। 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী থাকাবস্থায় লীলা নাগ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র ও ঋষি রামানন্দের সান্নিধ্য লাভ করেন। ১৯২৩ সালে লীলা নাগ ইংরেজি বিষয়ে দ্বিতীয় বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনিই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এমএ ডিগ্রীধারী নারী।