ঢাকা, বুধবার ২৪, এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৫৬:৫০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খালেদার গ্যাটকো মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পেছাল কুড়িগ্রামে তাপদাহ: বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ‘পদ্মশ্রী’ গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা কাতার-বাংলাদেশ ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই

আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের নারী ক্রীড়াবিদদের যত অর্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৪০ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

আধুনিক বিশ্বে একটি দেশের সার্বিক উন্নতির মাপকাঠির মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ক্রীড়া। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রীড়া বিরাট এক ভূমিকা পালন করে। মূলতঃ এ কারনেই উন্নয়নের পথে ক্রীড়া হয়ে উঠেছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ক্রীড়ার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার, যা শুধুমাত্র দেশেই নয় বিদেশেই সুনাম কুড়িয়েছে। লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরনেও রয়েছে ক্রীড়ার ভূমিকা। ক্রীড়া নারীদের শারিরীক এবং মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
খেলাধূলায় নারীদের অংশগ্রহণে বৃদ্ধি পায় তাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা। এর ফলে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে নেতৃত্বের মনোভাব এবং এভাবেই নারীরা নিজেদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী করে।  
ক্রীড়ার উন্নয়নে বাংলাদেশ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ও কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে যাতে শারিরীকভাবে উপযুক্ত সমাজের সকল নারী-পুরুষ যেন এর সাথে যুক্ত হয়। মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ক্রীড়ায় নারীদের অংশগ্রহণ এবং তাদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ক্রীড়ার সাথে তাদের যুক্ত করেছে। 
এরই ফল হিসেবে বিগত তিন বছরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদরা দেশের লাল-সবুজ পতাকাকে করে দিয়েছে এক অনন্য স্থান।
২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত এএফসি অনুর্ধ-১৪ মহিলা ফুটবলার চুড়ান্ত প্রতিযোগীতায় বাংলাদেশ স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে অর্জন করে নিয়েছে আঞ্চলিক  চ্যাম্পিয়শীপের শিরোপা। এটি ছিল বাংলাদেশের অনুর্ধ্ব-১৪ মহিলা কোন টিমের সবচেয়ে বড় অর্জন। এ বছর  গত মাসে আবারো শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের  কিশোরীরা।
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে জিতেছে এশিয়া কাপের  শিরোপা। প্রথমবারের মত ৫০ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। 
সম্প্রতি দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশীপে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে  দিয়া সিদ্দিকি। টুর্নামেন্টের নাম এশিয়া কাপ হলেও বিশ্বকাপের পরই মান এ টুর্নামেন্টের। কেননা  জাপান অলিম্পিকে স্বর্ন পদক জয়ী কোরিয়ার আরচাররাও অংশ নিয়েছে এ টুর্নামেন্টে। দিয়ার  এ পদক জয় আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের অনেক বড় অর্জন।
অন্যদিকে ভার উত্তোলনকারী মাবিয়া আখতার সীমান্ত বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে এক অনন্য সন্মাননা। ২০১৯ এসএ  গেমসে  দেশকে এনে দিয়েছেন স্বর্ন পদক। ২০১৬ সালে ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান গেমস্‘এ ৬৩-কেজি শ্রেণীতে মাবিয়া বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন স্বর্ণপদক। এর আগে তিনি ২০১৫ সালে ভারতের পুনেতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন প্রতিযোগীতায় ৬৩-কেজি ওজন শ্রেণীতে সিনিয়র এবং জুনিয়র ক্যাটাগরীতে একটি স্বর্ণ পদক এবং দুটি রৌপ্য পদক অর্জন করেন। 
মাদারীপুরে জন্ম নেয়া মাবিয়া মূলতঃ ২০১০ সালে এখানে আসেন তার মামার হাত ধরে। আর ২০১২ সালেই সাউথ এশিয়ান ভারোত্তলোন প্রতিযোগীতায় ব্রোঞ্জ পদক এবং ২০১৩ সালে মালেশিয়ায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ প্রতিযোগিতায় রৌপ্য পদক অর্জন করেন তিনি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া অঙ্গণে বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদদের রয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা। কিন্তু প্রত্যেক ক্রীড়াবিদের জন্য তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। 
সাউথ এশিয়ান গেমসে এই ক্যাটাগরীতে প্রথম স্বর্ণ পদক অর্জনকারী মাবিয়া বলেন বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে অনেক মেধাবী মেয়েরা রয়েছে। তাদের অনেকেই বাংলাদেশের জন্য আনতে পারে বিরাট সম্মান।
মেধাবী এই ক্রীড়াবিদ বর্তমানে আনসারে কর্মরত রয়েছেন।
এদিকে বাংলাদেশের  সাঁতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষারে লেখা থাকবে একটি নাম- মাহফুজা খাতুন শিলা। ২০১৬ সালে ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত ১২তম এসএ গেমসে ১০০-মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে তিনি সাঁতারে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদক অর্জন করেন।
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার পঞ্চকবর গ্রামে দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া শিলার পিতার নাম আলী আহমদ গাজী এবং মাতার নাম করিমন নেসা। তারা চার ভাই-বোন।
১৯৯৯ সালে শিশু একাডেমীর সাঁতার প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে  ক্যারিয়ার শুরু হয় শিলার । মাত্র তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে তিনি অর্জন করে তার জীবনের প্রথম পুরষ্কার। ১০০-মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে প্রথম স্বর্ণপদক অর্জন করে ২০০২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বয়স ভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগীতায়।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ হতে সম্মান এবং ২০১৬ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। ২০১০ সালের শুরুতে শিলা আনসার-ভিডিপি সার্ভিস টিমের সাথে যুক্ত হলেও পরে ২০১৩ সালে যুক্ত হন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সাথে।
এসএ গেমসে শিলা প্রথম পদক অর্জন করেন ২০০৬ সালে কলম্বোতে ১০০-মিটার  ব্রেস্টস্ট্রোকে। এসময় তিনি দুটি ব্রোঞ্জ পদকও অর্জন করেন। এরপর ২০১০ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে তিনি অর্জন করেন ২টি রৌপ্য পদক। সর্বশেষ ২০১৬ সালে এসএ গেমসে শিলা অর্জন করেন স্বর্ণ পদক।
৫০-মিটারের সাঁতার প্রতিযোগীতায় তিনি ভেঙ্গে ফেলেন এস এ গেমসের আগের সব রেকর্ড। পুরো সাাঁতার শেষ করতে তিনি সময় নেন মাত্র ৩৪ দশমিক ৮৮ সেকেন্ড। এছাড়াও শিলা আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিযোগীতায় সাঁতারে অংশগ্রহণ করেছেন।