ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৪৬:৫৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

আলোর পথ দেখাচ্ছে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪১ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২০ শনিবার

আলোর পথ দেখাচ্ছে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার

আলোর পথ দেখাচ্ছে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার

‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’ স্লোগান বাস্তবায়নে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের হস্তশিল্পসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলছেন। কারাগার মানেই বন্দিদের কারা প্রকোষ্ঠে আটকে রাখা এ ধারণা পাল্টে দিয়েছে এ কারাগার কর্তৃপক্ষ।

এখানে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও মানসিক বিকাশে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে বন্দিদের জীবনমান বদলে দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়ে নিপুণ কারিগর হয়ে উঠছেন বন্দিরা। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বন্দিদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে দেশের অন্যতম প্রাচীন সেবা সংস্থা ঢাকা আহসানিয়া মিশন কর্তৃপক্ষ। এ কারাগারে লেখাপড়া না জানা বন্দিদের ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি গণশিক্ষা কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে।

প্রশিক্ষিত এসব বন্দিরা মুক্তি লাভের পর হস্তশিল্প স্থাপনের মাধ্যমে নতুনভাবে কর্মজীবন শুরুর পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার সক্ষমতা অর্জন করছেন। এছাড়াও অনেক চিহ্নিত অপরাধী ও মাদকাসক্ত এ কারাগারে যাওয়ার পর তাদের মানসিক বিকাশে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়। এতে এসব বন্দিরা অন্ধকার মাড়িয়ে কারাগার থেকে সুস্থ জীবনে ফিরে এসে আলোর পথে পা বাড়িয়েছেন।

কারাগারের প্রায় ৩শ’ বন্দি তাঁত, বাঁশ-বেত, নকশি কাঁথাসহ বিভিন্ন ধরনের গৃহস্থালি ও হস্তশিল্পের কাজে ব্যস্ত থাকেন। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কারাজীবনেও দক্ষ ও স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন কয়েদিরা। কারাজীবন শেষে তারা যেন আবার অপরাধে না জড়িয়ে পড়েন সেজন্য তাদের শেখানো হচ্ছে নানা রকমের হস্তশিল্পের কাজ। এতে একদিকে যেমন কয়েদিদের মানসিক উন্নয়ন ঘটছে, তেমনি উৎপাদিত পণ্য বিক্রির মুনাফাও পাচ্ছেন তারা।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৬২ সালে কুমিল্লা জেলা কারাগারটিকে কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তরিত করা হয় । এর ধারণ ক্ষমতা ১ হাজার ৭শ ৪২ জন হলেও প্রতিনিয়ত গড়ে এখানে তিন হাজার কয়েদি অবস্থান করেন। কারাগারে ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ বন্দি থাকলেও সবই চলছে নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যেই। বন্দিদের মধ্যে অদক্ষ নারী-পরুষদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

বন্দিদের তৈরি আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন কুটিরশিল্প এখন শোভা পাচ্ছে দেশের বিভিন্ন সুরুচি সম্পন্ন মানুষের ড্রইং রুমে ও সৌখিন মানুষের সংরক্ষণে। কারাগারের প্রধান ফটকের সামনেই কারা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচালিত কারাপ্রদর্শনী বিক্রয় কেন্দ্রে খুচরা ও পাইকারিভাবে বিক্রিও হচ্ছে এসব পণ্য। বন্দীরা কারাগারের ভেতর বিভিন্ন খাদ্য ও পণ্য সামগ্রীও তৈরি করছেন যা বন্দি ও কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বল্পমূল্যে খেতে পারেন। এছাড়া বন্দিদের তৈরি মুড়ি, খইসহ সুস্বাধু খাদ্যপণ্য কারা কেন্টিন থেকে কারাগারের বন্দিদের স্বজন ও বাইরের লোকজনের নিকট বিক্রি করা হয়ে থাকে।

কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত একাধিক বন্দির সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সেখানে মাদকাসক্ত বন্দিদের সংশোধন ও মানসিক বিকাশে উদ্বুদ্ধকরণসহ খাদ্য উপকরণের মান, রান্না করা খাবারের মান, রন্ধন প্রণালী এবং পরিবেশনের দিকে কারা কর্তৃপক্ষের নজরদারি রয়েছে।

কুমিল্লা কারাগারের ডেপুটি জেলার ও ইনচার্জ শাহনাজ বেগম এ প্রসঙ্গে বলেন, কুমিল্লার কারাগারে বন্দীদের তৈরি নানা পণ্য সুলভ মূল্যে সারা বছর বিক্রি হয়। কারাগারের নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্রে এসব পণ্য বিক্রি করা হয়ে থাকে। এছাড়াও ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলাসহ বিভিন্ন মেলায় এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ফোরকান ওয়াহিদ জানান, কারাগারে বিক্রিত পণ্যের লভ্যাংশ দেয়া হচ্ছে বন্দিদের। এতে কারা জীবনেও তারা যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি সাজা ভোগের পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়ে তারা দ্রুত কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে।

সূত্র : বাসস