ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১১, ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৫৫:৩০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
গভীর নলকূপে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে জীবিত উদ্ধার আজ সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিইসি পুলিশি নিরাপত্তায় সচিবালয় ছাড়লেন অর্থ উপদেষ্টা ‘নির্বাচনে পুলিশ সদস্যদের শতভাগ নিরপেক্ষ থাকতে হবে’ বেআইনি ও অনুমোদনহীন সমাবেশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ ডিএমপির মা-মেয়েকে হত্যার ‘কারণ জানাল` গৃহকর্মী আয়েশা

ঈদের কেনাকাটায় আত্মপ্রশান্তির ফুটপাত

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০৮:০১ পিএম, ১২ জুন ২০১৮ মঙ্গলবার

ঈদের কেনাকাটায় ঝলমলে মার্কেটগুলো আলো ছড়াচ্ছে রাতভর। এ মার্কেটগুলোর কাছেই রাস্তার আশপাশে বসেছে অনেক অস্থায়ী দোকান। বাংলায় যাকে আমরা ফুটপাত বলি। বললে হয়ত বিশ্বাস হওয়ার কথা নয়,রাজধানীর বিলাসী ঐ দোকানগুলোর চাইতে ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটা অনেক গুণ বেশি।

 


এর কারণও আছে। ঢাকায় বেশিরভাগ লোকই নিন্মবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্তের কাতারে। তারা ঝলমলে আলোকজ্জল দোকান থেকে ভাল মানের একটি সালোয়ার কামিজ কিনতে গেলে কমপক্ষে দাম পড়বে ৪০০০ টাকা। অথচ এই টাকা দিয়ে পুরো পরিবারের বাজারটা সহজেই সেরে নেওয়া যায় ফুটপাত থেকে।



পুরান ঢাকার সদরঘাট, গুলিস্তান, পল্টন, নিউ মার্কেট, গাউসিয়া, ফার্মগেইট, মিরপুরসহ রাজধানীর অধিকাংশ ফুটপাতেই এখন হরেক পসরা। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্রই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।




উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টর। ভর বিকেলে দেখা হয় আকলিমার সাথে। আকলিমা এখানের তিনটা বাসায় কাজ করেন। বলেন,তিনটা বাসায় কাম করি। আজকে দুইটা বাসা থেইক্যা টাকা দিছে। এই টাকা দিয়া মেয়ে আর ছেলের লেইগ্যা জামা কিনতাছি। আমার ছেলে মউধ গ্রামে থাকে। মেয়ে তো লগেই আছে। নিজের জন্য কিছু কিনবেন কিনা জানতে চাইলে বলেন,আমাগোর আবার কেনাকাটা। পোলা মাইয়ারে কিইন্যা দিতাছি এইটাইতো বেশি।

 

আজ রাজধানীর বেশিরভাগ ফুটপাতে নারী, শিশুর সংখ্যাই বেশি। ফার্মগেট ওভারব্রীজের কাছেই জমজমাট ফুটপাত। বীনা আক্তার, পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী, থাকেন পূর্ব রাজাবাজার। বিক্রেতার সাথে দরদাম করছেন একপিস শার্ট আর একপিস প্যাণ্ট নিয়ে। ক্রেতা রুহুলের সাফ কথা, আপা একদাম ২৫০ টাকা, ভাল লাগলে নেন। এতে অবশ্য দমে যাননি বীনা। শেষ পর্যন্ত বীনারই জয় হল। জিজ্ঞেস করতেই বললেন, আমাগোর মত মানুষের কাছে ৫০ টাকা অনেক বেশি। আমার একমাত্র পোলা শান্তর লেইগ্যা কিনলাম।

 

নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতের বিক্রেতা শামীম তাল ধরেছেন, এক দাম ১৫০ টাকা, বাইছ্যা লন, সব কালার, যে কোন কালার, চায়না মাল, বাইছ্যা লন। জহুরা ধানমন্ডির একটি প্রতিষ্ঠানে ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত আছেন। বেছে বেছে মিষ্টি কালারের একটা স্যান্ডেল কিনলেন। খুশি মনেই বললেন, এলিফ্যান্ট রোডে এক স্যান্ডেলই চায় ১২০০ টাকা। তাই এখান থেকে নিলাম। পড়লেই হল। আয় বুঝে ব্যয়।



এরকম অসংখ্য আকলিমা, বীনা, জহুরা এখন কেনাকাটায় ব্যতিব্যস্ত রাস্তার ফুটপাতে। নিজেদের জন্য দায়সারা গোছের জিনিস কিনে পরিবারের পিছনেই সব টাকা বিলিয়ে দিচ্ছেন তারা। তা সত্বেও এদের চোখেমুখে অন্য এক পরিতৃপ্তির ছাপ। জামা কম দামের হোক আর বেশি দামের হোক, ঈদ আনন্দ তো আর টাকায় হয়না, হয় মনের তৃপ্তিতে। আর মনের তৃপ্তি টাকার মানে নয় বরং আত্মপ্রশান্তির বিনিময়েই পাওয়া যায়।