ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:১৫:৫৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

এক সপ্তাহ আগে জিডিতে যে অভিযোগ করেছিলেন বিচারকের স্ত্রী

রাজশাহী প্রতিনিধি | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:২১ এএম, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৬) কুপিয়ে হত্যা করা লিমন মিয়ার (৩৫) বিরুদ্ধে সাতদিন আগেই একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। হামলায় আহত বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসী (৪৪) নিরাপত্তাহীর স্বার্থে সিলেটের জালালাবাদ থানায় জিডিটি করেছিলেন। তবে এ জিডির তদন্ত শুরু হয়নি।

গত ৬ নভেম্বর করা এ জিডিতে তাসমিন নাহার লুসী উল্লেখ করেন, ‘কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সদস্য হওয়ায় লিমনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর সে আমার মোবাইল নম্বর নেয়। তার পরিবার আর্থিকভাবে কিছুটা দুর্বল হওয়ায় প্রায় সময় সে আমার কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিত। একটা পর্যায়ে লিমন প্রতিনিয়ত আমার কাছে সহযোগিতা চাইলে আমি তা করতে অপারগতা প্রকাশ করায় সে ফোন করে নানারকম হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’

জিডিতে বলা হয়, ‘সর্বশেষ গত ৩ নভেম্বর সকালে লিমন আমার মেয়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কল করে আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনদের প্রাণে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। লিমন যে কোন সময় আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করিতে পারে বলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছি। এ অবস্থায় ব্যক্তি নিরাপত্তার স্বার্থে জিডি করা একান্ত প্রয়োজন।’

যোগাযোগ করা হলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মোহাম্মদ মোবাশ্বির বলেন, ‘জিডি হওয়ার পর আদালত থেকে তদন্তের অনুমতি নিতে হয়। আমরা জিডিটি আদালতে পাঠিয়েছি। তবে এখনও তদন্তের অনুমতি পাইনি। তাই জিডির তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।’

ওসি জানান, বিচারক আব্দুর রহমানের মেয়ে বিবাহিত। তবে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাই সিলেটে মেয়ের কাছে ছিলেন তাসমিন নাহার লুসী। সেখানে থাকা অবস্থায় লিমন মিয়ার হুমকি পেয়ে তিনি থানায় জিডি করেছিলেন।

বিচারক আব্দুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার চকপাড়া গ্রামে। আর ঘাতক লিমন মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া ভবানীগঞ্জ গ্রামে। তার সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

পুলিশ বলছে, লিমন এ পরিবারের পূর্বপরিচিত। বিচারকের নিহত ছেলে সুমন রাজশাহী গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকায় স্পার্ক ভিউ নামের একটি দশতলা ভবনের পাঁচতলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ফ্ল্যাটেই লিমনের হাতে খুন হয় বিচারকের নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন। আহত হন তার মা তাসমিন নাহার লুসী। হামলাকারী লিমন মিয়াও আহত হয়ে এখন হাসপাতালে।

স্পার্ক ভিউ ভবনের দারোয়ান মেসের আলী জানান, লিমন মিয়াকে তিনি আগে কখনও দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি তাকে ভেতরে ঢুকতে দেন। তবে তার আগে খাতায় তার নাম ও মোবাইল নম্বর লিখিয়ে নেন। হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাকে এসে জানান যে, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলেকে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তিনজনকেই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, ধারালো অস্ত্রের গুরুতর আঘাতের ফলে সুমনের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে।

ডা. শংকর কে বিশ্বাস আরও জানান, বিচারকের স্ত্রীর ডান হাত ও উরু এবং বাঁ বাহুতে গুরুতর  জখম দেখা গেছে। এছাড়া তার ডান হাতের একটি রগ কেটে গেছে। চিকিৎসকদের একটি সমন্বিত দল অস্ত্রোপচার করেছেন। বর্তমানে তার শারীরীক অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি আরও জানান, লিমন মিয়ার ডান হাতে জখম ছিল। তবে সেটি গুরুতর নয়।

বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, হামলাকারী ব্যক্তির পকেটে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি চালক। তার সঙ্গে পূর্ববিরোধ থাকতে পারে। হাসপাতালে তাকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সার্বিক ঘটনা তদন্ত করছে।