ঢাকা, শনিবার ২৭, এপ্রিল ২০২৪ ৬:৪৩:১১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

কুমিল্লার দক্ষিণগ্রাম বিলে ফুটেছে বিরল ‘হলুদ পদ্ম’

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:১৩ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার

এই হলুদ পদ্মের দেখা মিলেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রাম বিলে। গবেষকরা মনে করছেন বিশ্বের মধ্যেই এটা পদ্মের নতুন এক জাত।

এই হলুদ পদ্মের দেখা মিলেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রাম বিলে। গবেষকরা মনে করছেন বিশ্বের মধ্যেই এটা পদ্মের নতুন এক জাত।

বিরল প্রজাতি হলুদ পদ্মের দেখা মিলেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রাম বিলে। গবেষকরা মনে করছেন বিশ্বের মধ্যেই এই হলুদ ফুলটি পদ্ম ফুলের নতুন এক জাত। গবেষণাগারের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে উদ্ভিদবিজ্ঞানে হলুদ পদ্ম হবে অনন্য সংযোজন। এই পদ্মের নামকরণও হবে বাংলাদেশের দেয়া নামে।

এই হলুদ পদ্ম দেখে বিমোহিত সবাই। পদ্ম ফুলের সেই ভালোলাগা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে হলুদ পদ্ম। প্রথমবারের মতো বাংলাদশে ফুটেছে এই পদ্ম।

ঠিক হলুদ নয় তবে অনেকটাই হলুদাভ। অফহোয়াইটও বলা যেতে পারে। যেন অসংখ্য পাঁপড়ির একটি তোড়া সবুজ পাতা ভেদ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ণ ফোটা হলুদ পদ্মের পাশে ফুটেছে একটি গোলাপি পদ্মও। যদিও পাঁপড়ির দৈর্ঘ্য গোলাপি পদ্মেরই মত।

বিশ্বে মূলত দুই ধরনের পদ্ম ফুল দেখা যায়। এশিয়ান বা আমেরিকান পদ্মে একটি ফুলে পাপড়ি থাকে ১২ থেকে ১৮টি। সেখানে বুড়িচংয়ের এ হলুদ পদ্মে পাপড়ি সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। ভেতরের পাপড়ি পুংকেশরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এ ফুলে পুংকেশরের সংখ্যাও প্রায় তিনশ’।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাখহরি সরকার জানান, গত বছর সেপ্টেম্বরে তারা এ হলুদ পদ্মের কথা জানতে পারেন। খবরটা পেয়েই বেঙ্গল প্লান্ট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক, পদ্ম গবেষক শিকদার এ কে শামসুদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেন। সিদ্ধান্ত নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ও বেঙ্গল প্লান্ট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে হলুদ পদ্মের অনুসন্ধানে নামবে। সেই থেকে কাজ শুরু।

গত বছরই ছবিসহ কিছু তথ্য-উপাত্ত যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির নামকরণ বিভাগ এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় হারবেরিয়াম জাদুঘর ইংল্যান্ডের কিউ গার্ডেনে পাঠিয়েছেন। তারাও বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী। তাই এ বছর হলুদ পদ্মের হারবেরিয়াম শিট করাসহ গবেষণার প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রাম বিলে সম্প্রতি ঘুরে এসেছেন।

তিনি জানান, সত্যিই অপূর্ব সুন্দর হলুদ পদ্মফুলটি। যেন অসংখ্য পাপড়ির একটি তোড়া সবুজ পাতা ভেদ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। যা পদ্মের নতুন এক জাত।

গবেষকদের মতে, উদ্ভিদ বিজ্ঞানে হলুদ পদ্ম হবে অনন্য সংযোজন। পদ্মফুল পৃথিবীজুড়েই কমবেশি জন্মে। বৈশিষ্ট্য অনুসারে পদ্মকে দুটি প্রজাতিতে ভাগ করা হয়ে থাকে, যেমন- এশিয়ান বা ইন্ডিয়ান পদ্ম। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nelumbo nucifera| অন্যটি আমেরিকান বা ইয়োলো লোটাস। ইয়োলো লোটাসের বৈজ্ঞানিক নাম Nelumbo Lutea. এশিয়ান পদ্ম আবার দুই রঙে দেখা যায়- মসৃণ সাদা ও হালকা গোলাপি। বাংলাদেশের ঝিল-বিল ও জলাশয়ে যেসব পদ্মফুল দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো এশিয়ান বা ইন্ডিয়ান লোটাস। শুধু বাংলাদেশ নয়, কাস্পিয়ান সাগর থেকে উত্তর অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত চীন, জাপান, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে এ প্রজাতির পদ্ম জন্মে। বহুবর্ষজীবী এ জলজ উদ্ভিদের গাছের কান্ড লতানো। গোলাকার পাতা গড়ে প্রায় ৪৫ সেন্টিমিটার চওড়া। সরু কাঁটাযুক্ত লম্বা ডাঁটায় ফুল ফোটে। ফুলে রয়েছে মিষ্টি গন্ধ। পানির ওপরে পাতা ও ফুল ভেসে থাকে। চার-পাঁচ ফুট পানি পদ্মের জন্য আদর্শ। পানির নিচে কাদায় বিস্তৃত হয় এর শিকড়।

রাখহরি সরকার বললেন, আমাদের বিলে-ঝিলে ফুটে থাকা এশিয়ান পদ্ম থেকে নতুন এ পদ্ম আলাদা। তাহলে কি আমেরিকান লোটাস কোনোভাবে দক্ষিণ গ্রামের এ বিলে এসে বংশবিস্তার করেছে? তার ভাষ্য- সেটিও না।

আমেরিকান লোটাসের রঙ ও বৈশিষ্ট্য থেকে দক্ষিণ গ্রাম বিলের পদ্মের বৈশিষ্ট্য আলাদা। এর বর্ণ হালকা আবার পাপড়ির সংখ্যাও অনেক বেশি। সে যাই হোক, গেলেই তো বোঝা যাবে মোহনীয় পদ্ম দক্ষিণ গ্রাম বিলে এসে কতটা ঈর্ষণীয় হয়ে ফুটছে, কতটাই-বা আলাদা জাতভাইদের চেয়ে।

নতুন এ জাতের পদ্মের ছবিসহ কিছু তথ্য-উপাত্ত যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির নামকরণ বিভাগ এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় হারবেরিয়ান জাদুঘর ইংল্যান্ডের কিউ গার্ডেনে পাঠিয়েছেন গবেষকরা।

আন্তর্জাতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে উদ্ভিদবিজ্ঞানে হলুদ পদ্ম হবে অনন্য সংযোজন। এমনকি হবে আলাদা নামকরণও।
সূত্র : বাসস