ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮, ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:১৬:২১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘ভারতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে টানাপড়েন আছে’ বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে তলব করে যা জানিয়েছে ভারত মা-মেয়ে হত্যা : সেই গৃহকর্মীর দোষ স্বীকার যুগ্ম সচিবকে জিম্মি করে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি চালকের অমর একুশে বইমেলা শুরু ২০ ফেব্রুয়ারি

গরুর মাংসের ক্রেতা কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৫৯ এএম, ২১ মে ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দাম বেশি হওয়ায় মাংসের বাজারে আগের মতো ক্রেতা নেই। গরুর মাংস কিছুটা বিক্রি হলেও, খাসির মাংসের ক্রেতা খুবই কম। একটি খাসি কাটলে বিক্রি হতে দিন পেরিয়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দাম দিয়ে দোকানে খাসি তুলি না...

কথাগুলো বলছিলেন মিরপুর পশ্চিম শেওড়াপাড়া এলাকার বিসমিল্লাহ্‌ মাংস বিতানের মালিক ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আগে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে দুই-একটা গরুর মাংস এক বেলাতেই বিক্রি হয়ে যেত। এখন সারাদিনে ছোট গরুর অর্ধেকই বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
দাম বেশি হওয়ার কারণে খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ এখন গরুর বা খাসির মাংস কেনে না। অতিরিক্ত দামের কারণে খাসির মাংস বিক্রি বলতে গেলে বন্ধই করে দিয়েছি।

শুক্রবার (২০ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি খাসির মাংস  বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায়।

অন্যদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি। সোনালি, পাকিস্তানি ৩১০ এবং লেয়ার কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকা কেজি। পাশাপাশি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ডিম।

রাজধানীর মহাখালী এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে গরু-খাসির মাংস বিক্রি করেন দুলাল মিয়া। বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের চেয়ে আমাদের বিক্রি অনেক কমে গেছে। এত টাকা দিয়ে মানুষ মাংস কিনে খেতে চায় না। মাংসের দাম বাড়তি থাকলে আমাদের লোকসান হয়। কারণ ক্রেতা কমে যায়। বর্তমানে ৬৮০ টাকা কেজিতে মাংস কিনে খাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক কম।

তিনি আরও বলেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, দোকানের বাজার, গরু কেনাসহ নানা খরচ দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে গেছে। খাসির মাংস ৯০০/ ৯৫০ টাকা বিক্রি করতে হয়। ফলে ক্রেতা পাই না বললেই চলে। তাই খাসির মাংস বিক্রি ছেড়েই দিয়েছি।

বাজারে মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বছর আগেও খাসির মাংস বিক্রি হতো ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। বর্তমানে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বলতে গেলে, এক বছরে খাসির মাংসের দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে।

রাজধানী মালিবাগ এলাকার মাংস বিক্রেতা ইয়াছিন আলী বলেন, গরু কিনে দোকান পর্যন্ত আনতে অনেক ধরনের চাঁদা বা বাজার খরচ দিতে হয়। কিন্তু মাংসের দাম বেশি হওয়ার কারণে বর্তমানে বিক্রি অনেক কমে গেছে। এখন ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দাম বাঁড়ায় আমাদের কোনো লাভ নেই, বরং ক্ষতি। দাম বাড়তি থাকলে মানুষ মাংস খুব কম কেনে। ব্যবসায়ীরা তাদের মাল বিক্রি করতে পারেন না। এতে করে আমাদের লোকসান হয়। কারণ, আমরা ক্রেতা তেমন পাচ্ছি না। বিক্রিও অনেক কম। এসব কারণে রাজধানীর অনেক ছোট ছোট মাংসের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।

মালিবাগ এলাকার কাঁচাবাজারে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত হাবিবুর রহমান। মাংসের দোকানে সামনে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, উৎসব বা আত্মীয় স্বজন আসা ছাড়া সাধারণত গরুর মাংস কেনা আমাদের মতো মানুষের পক্ষে এখন সম্ভব না। দুই-এক মাসে একবার শখ করে গরুর মাংস কেনা হয়। আর খাসির মাংস বাজার থেকে কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ্য আমাদের নেই। বলতে গেলে ঈদ ছাড়া খাসির মাংস কেনাই হয় না।

মহাখালী কাঁচাবাজারে এসেছেন গার্মেন্টস কর্মী সুলতান আহমেদ। মাংস কেনা হয় কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত কয়েক মাসের মধ্যে শুধুমাত্র ঈদের সময় গরুর মাংস কিনেছিলাম ৭৫০ টাকা কেজিতে। এরপর আর কেনা হয়নি। আর খাসির মাংস কিনে খাওয়ার কথা তো চিন্তাও করতে পারি না।

তিনি বলেন, আজ ব্রয়লার মুরগি কিনেছি। তাও প্রতি কেজির দাম পড়েছে ১৬০ টাকা। বাজারে সব জিনিসের দামই বাড়তি। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের কিনে খাওয়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।