ঢাকা, মঙ্গলবার ০৭, মে ২০২৪ ১৪:৪৩:৪৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ জিম্মি মুক্তিতে হামাসের সম্মতির পরও গাজায় যুদ্ধবিরতি অনিশ্চিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক রুটিনে ক্লাস শুরু আজ হজের ফ্লাইট শুরু ৯ মে পুলিৎজার পেল রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট ও নিউইয়র্ক টাইমস

গুলাব কৌর! এক বীর নারী যোদ্ধার গল্প

আইরীন নিয়াজী মান্না | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:২১ এএম, ২১ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার

গুলাব কৌর

গুলাব কৌর

গুলাব কৌর! গোলাপের নামে তার নাম। তিনি এক বীর নারী যোদ্ধা। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অপরিচিত এক মুখ গুলাব কৌর। ইতিহাসের পাতা খুঁজলে হয়তো তার অবদানের কথা সে ভাবে পাওয়াও যাবে না। এই অগ্নিকন্যা ছিলেন ভারতীয় এক শিখ নারী। তার বুকে ছিলো দেশের জন্য অগাদ ভালোবাসা। বৃটিশদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে তিনি নেমেছিলেন আন্দোলনে। রেখেছেন বিশেষ অবদান। কিন্তু ইতিহাস তাকে ভুলে গেছে! 

১৮৯০ সালে পাঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলার বকশিওয়ালা গ্রামে জন্ম তার। চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী খুব অল্প বয়সেই মান সিং নামে এক পাঞ্জাবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আর পাঁচটা দম্পতির মত তারাও তাদের সুন্দর একটা ভবিষ্যতের আশায় দেশ ছেড়ে সুদূর ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলাতে পাড়ি দিয়েছিলেন। সেই ম্যানিলার মাটিতে দাঁড়িয়েই গুলাব কৌর নামলেন তার দেশের মাটি রক্ষার লড়াইতে।

ম্যানিলাতে প্রথম তিনি সমসাময়িক গদর পার্টির কথা জানতে পেরেছিলেন। শিখ ও পাঞ্জাবীদের নিয়ে সংগঠিত এই দলটির এক এবং একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচার থেকে ভারতকে মুক্ত করা। সেই উদ্দেশ্য পূরণে সামিল হতে গুলাব কৌর সাংবাদিকের ছদ্মবেশে দলের সদস্যের অস্ত্র বিতরণের মত গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুধু তাই নয়, তিনি ম্যানিলাতে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের স্বাধীন ভারত গড়ার মন্ত্রে দীক্ষিতও করতেন। মজার বিষয় হল, দলের যে সদস্যরা সংগ্রাম থেকে পিছিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি নাটকীয়ভাবে তার বাঁ হাত থেকে চুড়ি খুলে বলতেন, ‘যদি কেউ মাতৃভূমির জন্য লড়াই করার এই বিরল সুযোগ থেকে পিছু হটে তবে তাদের এই চুড়ি পরে একপাশে বসা উচিত। আমরা নারীরা তাদের জায়গায় লড়াই কররো।’ 

পরবর্তীতে ভারতে ফিরেও তিনি তার শেষ নিঃশ্বাস অবধি দেশের জন্য লড়ে গেছিলেন।

ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার অপরাধে তাকে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের লাহোরে দুবছরের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়। বিপ্লবীদের বিষয়ে তথ্য জানানোর জন্য তার উপর প্রচন্ড নির্যাতনও করা হয়েছিল। তবুও অগ্নিযুগের অগ্নিকন্যা দাঁতে দাঁত চিপে সব অত্যাচার হজম করেছিলেন। ১৯৪১ সালে তার মৃত্যু হয়। 

দুঃখের বিষয়, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অংশগ্রহণের লড়াইয়ে তিনি পাশে পাননি তার স্বামীকে। ম্যানিলা থেকে স্বামীকে ছাড়াই তাকে ফিরে আসতে হয়েছিল দেশের মাটিতে। 

বলা বাহুল্য অগ্নিকন্যা গুলাব কৌরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়েছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক জ্বলন্ত অধ্যায়। এমনই কতশত বিপ্লবী যে আমাদের চোখের আড়ালে তাদের আত্মত্যাগ আর অদম্য সাহসিকতার পরিচয় রেখে গেছেন, তার আর হিসেব কোথায়, কে রাখে তাদের খবর!