জলবায়ু পরিবর্তন: প্রকৃতিও নারীর বিপক্ষে
আফরোজা নাজনীন | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৭:৩৯ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার
প্রতীকী ছবি
দুর্যোগে নারী ও শিশুর মৃত্যু পুরুষের চেয়ে ১৪ গুণ বেশি। কোনও দুর্যোগে একজন পুরুষ মারা গেলে নারী মারা যায় চারজন। বন্যা, জলোচ্ছাস, ভূমিধ্বস ও ভূমিকম্পর মতো ভিন্ন প্রকৃতির দুর্যোগ বাংলাদেশের মানুষের অতি পরিচিত।
জাতিসংঘের খাদ্য ও জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) জানায়, বাংলাদেশে শতকরা ৮৩ শতাংশ মানুষ সারা বছর দুর্যোগের শিকার। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বছরে ১০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বন্যায় ৪৩ শতাংশ মানুষ ও ঝড়ে ৪১ শতাংশ অধিবাসী ক্ষতিগ্রস্ত। দেশে বছরে বজ্রপাতে গড়ে মৃত্যু ৩০০ জন, যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।
অ্যাকশন এইড ও ইউএনএফপি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ জুলাই পর্যন্ত দেশে বন্যা দুর্গত ৩৩ লাখ মানুষের মধ্যে নারী ছিলেন ১৭ লাখের বেশি। ঘূর্নিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ১৯ জেলায় আক্রান্ত ২৬ লাখের মধ্যে ৮ লাখ ২০ হাজার নারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্যোগ বেশি হলেও বাংলাদেশে যে কোনও দুর্যোগে বাংলাদেশে মাথাপিছু সহায়তার পরমিান সবচেয়ে বেশি। দুর্যেগের সময় নারীরা কি পরিমাণ সহায়তা পান সে হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। নারীরা পান ৪৮ দশমিক ৬ ডলার। জাতিসংঘের খাদ্য ও জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র আরও জানায় ১৯৭০ সাল থেকে বাংলাদেশে দুর্যোগ প্রবণতা ৫ গুণ বেড়েছে।
জাতিসংঘ সূত্র আরো জানায়, দুর্যোগের সময় নারী কতটুকু র্দুভোগ সহনশীল থাকতে পারেন সে হিসেবে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ষষ্ঠস্থানে রয়েছে।
বর্ষাজনিত বন্যার কারণে দেশের ৫টি অঞ্চলের গড়ে ২৭/২৮ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৭/৮ লাখ। এর মধ্যে প্রজনন বয়সীরাও রয়েছে।
দুর্যোগে নারীর প্রাণের ভয় ছাড়াও আরো কয়েকটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তার মধ্যে অন্যতম শৌচাগারের অভাব। নারীরা শৌচাগারের অভাবে বেশি কষ্টে পড়ে।
জানা গেছে, চার পাঁচ’শ মানুষের জন্য একটি শৌচাগার। অনেক সময়ে সে শৌচাগার পানিতে ডুবে যায়। শৌচাগারের অভাবে তারা পাশের জঙ্গলে যায়। এ কারণে তাদের রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এসব সমস্যার কারণে নারী এ সময়ে পানিও কম খায়। ফলে পরবর্ততে তাদের কিডনিজনিত সমস্যায় পড়তে হয়।
২০২০ সালে আম্পানে আক্রান্ত কুয়াকাটার কলাপাড়ার একজন নারী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সেময় শেল্টার সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছিলেন, খাওয়া দাওয়ার সমস্যা কম হতো। কিন্তু টয়লেটের সমস্যায় বেশি ভুগতেন। সেখানে গিয়ে লাইন দিতে হতো। পুরুষও একই টয়লেট ব্যবহার করতো। তখন নানারকম অশ্লীল মন্তব্যও শুনতে হতো।
তিনি বলেন, টয়লেটের ভয়ে খাবারও কম খেতাম। কারণ শুকনো খাবার খেতে হতো। পানিও তাই বেশি খেতে হতো। পানি যাতে খেতে না হয় তাই খাবারও কম খেতাম।
দুর্যোগে নারী গোসলের সমস্যায়ও ভোগে। দেখা গেছে, দিনের পর দিন তারা গোসলও করতে পারে না। দুর্যোগে নারী শুধু দুর্ভোগেই পড়ে না, তাদের দায়িত্ব ও বেড়ে যায়। প্রতিকূল পরিবেশে খাদ্য তৈরি করা, পানি ও জ্বালানী সংগ্রহ করার জন্য বেশি শ্রম দিতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে পানি সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়ে। এলাকার একমাত্র নলকূপ পানিতে ডুবে যাওয়ায় নারীকে পানি আনতে যেতে হয় মাইলের পর মাইল দূরে গিয়ে।
২০০৯ সালের আইলায় আক্রান্ত মোড়েলগঞ্জের এক নারী, খবর সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের জানান, সেল্টার থেকে ফিরে দেখেন তাদের উঠোনের নলকূপের ওপর গাছ পড়ে তা দেবে গেছে। তখন দু মাইল দূরে এক মসজিদের নলকূপ থেকে পানি আনতে হতো। যেহেতু ৫০/৬০টি বাড়ির মানুষ যেতো পানি আনতে তাই লাইন দিতে হতো। সময় লাগতো প্রায় দু’ঘন্টা। এ পানি আনতে গিয়ে ঝগড়াঝাটিও হতো।
নারীর জীবন বিপন্ন হয় বিভিন্ন কারণে। এর মধ্যে অসচেতনতা প্রধান। এ ছাড়া তারা গৃহপালিত পশু আনতে গিয়ে, ঘরের জিনিসপত্র বাঁচাতে গিয়েও তাদের জীবন বিপন্ন করে তোলে। ২০০৭ সালের সিডরে নিঝুম দ্বীপের এক নারীকে একটি গরুর সঙ্গে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সে সময়ে পত্রিকায় এ ছবি ছাপাও হয়।
সরকারী হিসেবে ২০০৭ সালে সিডরে সারাদেশে ৩ হাজার ৪৪৭ জন মারা যায়। নিহতদের ৭০ ভাগ নারী ও শিশু। এদের মধ্যে শতকরা ৪ ভাগ নারী সন্তান সম্ভবা ছিল।
দুর্যোগে প্রসূতি নারীকে আরো কষ্ট পোহাতে হয়। একথাও প্রমাণিত, দুর্যোগে নারীরা খোলা আকাশের নিচে সন্তান প্রসবও করে।
ইউএনএফপি জানায়, দুর্যোগের সময় নারী খোলা আকাশের নিচে, নৌকায়, অপরিচিত বাড়িতে ও আশ্রয় কেন্দ্রে সন্তান প্রসব করেছে। এসময় তারা কোনও সাহায্যকারীও পায় না। দুর্যোগে নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয় বেশি। অনেক আশ্রয় কেন্দ্রেই জায়গার অভাবে পুরুষ ও নারী এক ঘরে থাকতে হয়। কারো কারো ভয়ে নারীকে সারারাত না ঘুমিয়ে কাটাতে হয়। সাধারণত আশ্রয়কেন্দ্রে, প্রাকৃতিক ক্রিয়া কর্মকালে, আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া আসার পথে তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়। খ্যাদাভাব ও নিরাপত্তার ঝুঁকিতে অভিভাবকরা এসময়ে মেয়েদের বিয়ে দিতেও আগ্রহী হয়ে ওঠে। ফলে দুর্যোগে বাল্যবিবাহের ঘটনা বৃদ্ধি পায়।
দুর্যোগের পর বাড়ি ফিরে এলে তার ওপর কাজের চাপ বেশি পড়ে। ঘরকন্নার কাজ তো করতেই হয়। এমনকি বসতবাটি মেরামতের কাজেও হাত লাগাতে হয়।
নারীর দুর্ভোগ সম্পর্কে অ্যাকশন এইড-এর এ দেশীয় পরিচালক ফারাহ কবীর বলেন, দুর্যোগে নারীর শুধু নিজের কথা ভাবলে হয় না। তাকে সন্তান, পরিবারের অন্যসব সদস্য, পোষা পশুপাখি ও জিনিসপত্রের নজরদারিও করতে হয়।
বিভিন্ন কেসস্টাডিতে দেখা যায়, দুর্যোগে নারীরা প্রথমত সন্তান নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এরপরই রয়েছে গৃহপালিত পশু পাখি। নারীদের পোশাক, গাছে উঠতে না পারা, সাঁতার না জানার কারণে তারা মারা যান বেশি।
ফারাহ কবীর আরো বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮৮ সালে বন্যার পর নারীরা টয়লেটের সমস্যায় পানি খেতো না। ২০২০ সালেও নারীরা অভিজ্ঞতায় জানাতে গিয়ে একই কথা বলছে। তবে অগ্রগতিও হয়েছে, এখন দুর্যোগে নারীর ত্রাণ সহায়তায় যুক্ত হয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিন।
- লিভার ভালো রাখতে যে ৩ খাবার খাবেন
- আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল
- খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান
- ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’
- বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে
- বন্যায় সহায়তা
বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী - পুতিনকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানালেন মোদি
- মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু
- নাসরিনের অধিনায়ক সানজিদা, সাবিনা-মাসুরারা অন্য ক্যাম্পে
- বিয়ে নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন রাশমিকা
- হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা
- আজ মধ্যরাতে লন্ডনে নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে
- খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে সম্মতি কাতারের
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা
- খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায়
- পুতিনকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানালেন মোদি
- নাসরিনের অধিনায়ক সানজিদা, সাবিনা-মাসুরারা অন্য ক্যাম্পে
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা
- বিয়ে নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন রাশমিকা
- হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা
- খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায়
- আজ মধ্যরাতে লন্ডনে নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে
- ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’
- আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা
- খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে সম্মতি কাতারের
- তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা
- মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু
- বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে
- খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান
- ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’


