ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৪৮:০৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

টাকা নেই, আড়াই ফুট গর্তেই চলছে গোপালের চিকিৎসা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২৯ পিএম, ২০ জুন ২০২৫ শুক্রবার

গোপাল ও তার মা

গোপাল ও তার মা

গোপাল; সাড়ে তিন বছরের সাঁওতাল শিশু। গোপাল জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। ওর শরীর সোজা হয় না। বসালে ভাঁজ হয়ে পড়ে। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সীমান্তবর্তী মুড়াইছড়া চা-বাগানের গোপালের জীবনে প্রতিদিনই এক নতুন লড়াই।

ওর বাবা অনিল সাঁওতাল চা-বাগানে দৈনিক ১৭৮ টাকা মজুরিতে কাজ করেন। পরিবারে আর কেউ নেই—ছোট্ট গোপালই তাদের একমাত্র সন্তান, একমাত্র স্বপ্ন। 
 
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছেন, গোপালের নিয়মিত ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন। কিন্তু শহরে নেওয়ার মতো গাড়িভাড়া, থেরাপির খরচ—সবই অনিলের সামর্থ্যের বাইরে। তাই ঘরের এক কোনে আড়াই ফুট গর্ত করে, সেই গর্তেই সনাতন পদ্ধতিতে তেল মালিশ আর লোকজ থেরাপি দিচ্ছেন বাবা-মা। এটাই গোপালের ‘চিকিৎসা কেন্দ্র’।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের স্থানীয় এক নেতা জানালেন, “শুধু গোপাল নয়, চা-বাগান এলাকায় এ রকম শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু বহু। প্রতি ১০০ শিশুর মধ্যে প্রায় ১০-১৫ জন জন্ম নেয় কোনো না কোনো প্রতিবন্ধতা নিয়ে। চিকিৎসা তো দূরের কথা, অভিভাবকদের অনেক সময় এটিই জানা থাকে না যে, এই সমস্যার চিকিৎসাও আছে।”

আশার কথা, কুলাউড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস জানিয়েছে—গোপালকে দ্রুত সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হবে। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, শুধু ভাতা নয়, প্রয়োজন গোপালের পেছনে চিকিৎসা সহায়তা, নিয়মিত থেরাপি, ভালো খাবার এবং ভালোবাসার যত্ন।

গোপাল হাসছে—এই হাঁসি দেখে যেকোনো মানুষের মন গলে যাবে। কিন্তু সে হাসছে তার ভবিষ্যতের ভয় না বুঝে, তার শরীরের প্রতিবন্ধকতাকে জানার আগেই। সে জানে না, সমাজ তার মতো শিশুদের কীভাবে অবহেলার গর্তে ফেলে রাখে।

গোপালের মতো শিশুরা যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা পায়, তাহলে তাদের হাসি শুধু একটা ফুল নয়—একটা সম্ভাবনার বাগান হয়ে উঠতে পারে। আর তার জন্য দরকার সরকারি ও বেসরকারি সম্মিলিত সহায়তা, দায়িত্বশীলতা ও ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।