ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮, এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৪:২৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই দেশ আরও উন্নত হতো টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা নান্দাইলে নারী শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ, বাড়ছে জ্বর-ডায়রিয়া কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দী অবস্থায় সুচি কৃষকরাই অর্থনীতির মূল শক্তি: স্পিকার মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ডা. লুৎফুননেসা, এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সাতকথা

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:১৭ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২১ বৃহস্পতিবার

ডা. লুৎফুননেসা, এক বীর যোদ্ধার সাতকথা

ডা. লুৎফুননেসা, এক বীর যোদ্ধার সাতকথা

একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংস গণহত্যা এবং তাদের বাঙালি দোসরদের নির্মমতা এখনও শিহরিত করে সাহসী নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. লুৎফুন নেসাকে৷

মুক্তিযুদ্ধের করুণ স্মৃতি তুলে ধরেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. লুৎফুন নেসা বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমি মুন্সীগঞ্জে ছিলাম। চারদিকে যুদ্ধের দামামা বাজছে। আমি এলাকায় থেকে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দিতাম৷ এসময় একদিন আমার ফুফাতো ভাইকে পাক সেনারা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিল৷ তার লাশটা পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গেল না৷ স্রোতে ভেসে  গেছে আমার ভাইয়ের লাশ৷

তিনি আরও বলেন, ‘ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে পরে ওই পাকসেনাদের ধরে ধরে হত্যা করেছি। আমি নিজের হাতে কিছু করিনি৷ তবে আমার সামনেই আমার বাবা, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান এবং আরো অনেকে ওদের চরম শাস্তি দিয়েছে৷ ওদেরও সেভাবে পানিতে ফেলে দিয়েছে৷ এসব ঘটনা এখনও আমার চোখের সামনে ভাসে৷'

তার স্মৃতিপটে একইভাবে ভেসে ওঠে ঢাকার কয়েকটি জায়গায় পাক সেনাদের গণহত্যার নৃশংসতা৷

তিনি বলেন, ‘জিনজিরায় যখন আক্রমণ হলো আব্বা তখন সেখানে ছিল৷ তারা চলে যাওয়ার পর আমি জিনজিরা পাড় হওয়ার সময় দেখলাম কীভাবে মানুষ পড়ে রয়েছে চারপাশে। এই লাশের ওপর দিয়ে আমাদের পালিয়ে যেতে হয়েছে৷ লাশগুলো ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে আমরা প্রধান সড়কে গিয়ে উঠেছে৷ সেখানে গিয়ে আমার ভাইবোনদের সাথে মিলিত হয়েছি৷ একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি অনেক মরা মানুষ, জ্যন্ত মানুষ নিয়ে কারবার করেছি৷ কিন্তু এভাবে লাশ মাড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা আমাকে খুব নাড়া দেয়৷’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়িটা ছিল বিডিআর সদর দপ্তরের কাছাকাছি৷ ফলে আমি এসএম হলের সামনেও মানুষদের গুলি করে মারতে দেখেছি৷ ওসব ঘটনা আমার চোখে এখনও ভাসে৷'

মুক্তিযোদ্ধা ডা. লুৎফুন নেসা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় এক পর্যায়ে আমি বাবা, মা, ভাই, বোন সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলাম৷ শেষ পর্যন্ত দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও আমরা একত্রিত হতে পেরেছি৷ কিন্তু যুদ্ধে মারা গেছে এমন অনেক মায়ের ছেলে, অনেক বোনের স্বামী আর তো ফিরে আসেনি৷ তাদের জন্য মনটা খুব কাঁদে৷'

স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য জাতীয় মহিলা সংস্থা, সাংস্কৃতিক সংসদ এবং জগন্নাথ কলেজ থেকে সংবর্ধনা পেয়েছেন মানবসেবায় নিয়োজিত বীর নারী ডা. লুৎফুন নেসা৷ কিন্তু জাতিয় পর্যায়ের কোনো স্বীকৃতি পাননি তিনি।

স্বাধীনতার এত বছর পর বাংলাদেশের অর্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করেছে তখনই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নানাভাবে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এমনকি তারা ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসকেই পাল্টে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে৷ তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাই যে, তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশে তথ্য প্রযুক্তির পরিষেবা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে এবং নারীদের স্বাবলম্বী করার যে প্রচেষ্টা সেটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়৷'