ঢাকা, সোমবার ০৬, মে ২০২৪ ১:২৬:৫৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন, ঘুমের মধ্যে মা-ছেলের মৃত্যু এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী আজ থেকে স্কুল কলেজ খোলা সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সিলেট ৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি, মাছ-মাংসে আগুন আরও ২ দিন দাবদাহের পূর্বাভাস

নারীদের অধিকারের প্রতি সচেতন হবে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৩৩ পিএম, ৯ মার্চ ২০২৩ বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন উপলক্ষ্যে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ৩টায় ‘ডিজিটাল বিশ্ব হোক সবার: নারীর অধিকার সুরক্ষায় ও সহিংসতা মোকাবেলায় চাই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন বৈষম্যহীন সৃজনশীল প্রযুক্তি’ প্রতিপাদ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানমালা হয়।

অনুষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য প্রদান করেন রঞ্জন কর্মকার, নির্বাহী পরিচালক, স্টেপস্ টুওয়ার্ডস্ ডেভেলপমেন্ট; শাহিন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন; বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, সানজিদা সুলতানা, অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক, কর্মজীবী নারী; অ্যাড. সেলিনা আক্তার, সিনিয়র আইনজীবী আইন ও সালিশ কেন্দ্র; ব্র্যাকের জেন্ডার জাষ্টিস এন্ড ডাইভারসিটি বিভাগের পরিচালক নবনীতা চৌধুরী; নিলুফার বেগম, ডেপুটি ডিরেক্টর, শক্তি ফাউন্ডেশন এবং ফাল্গুনী ত্রিপুরা,সমন্বয়ক, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।


বক্তারা বলেন, ‘নারীর নারীরা ন্যূনতম নিরাপত্তা যেখানে পায় না সেখানে প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার নয়। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে গৃহ থেকে নারীদেরকে সম্মান করার শিক্ষা ছেলে মেয়ে উভয়কে দিতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহারে নারী পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ নারীদের মোবাইল ফোন, ইন্টারনেস ব্যবহারের একসেস এখনও কম। ৬১% নারীর মোবাইল ব্যবহারের একসেস আছে, যেখানে পুরুষের হার ৮৬%। প্রযুক্তির একসেস বৃদ্ধি করতে নারীদের অধিকারের প্রতি সচেতন হবে, সাইবার ক্রাইমের প্রতি সচেতন থেকে প্রযুক্তির উদ্ভাবন,অভিগম্যতা ও প্রবেশাধিকারে নারীর একসেস বৃদ্ধি করতে হবে তাদের দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। সাংবিধানিকভাবে আদিবাসী নারীদের সকল অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। ব্র্যাকের প্রতিবেদন অনুসারে ৬০% আদিবাসী শিশুরা শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়েছে ডিজিটাল সুযোগের অভাবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পলিসি অনুসারে নারী ও তরুণীদের ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে; সামাজিক সন্তানের অভিভাবকত্ব ও জিম্মাদারির প্রশ্নে থাকা আইনী বিধান সংশোধন করতে হবে, বৈষম্য দূর করে বাবা মাকে সমান সুযোগ দিতে হবে। শ্রমজীবী নারীরা ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারে এখনও পিছিয়ে আছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাসহ নানা দক্ষতার অভাবে। গার্মেন্টেসে নারী শ্রমিকের সংখ্যা কমছে অটোমেশনের কারণে। আধুনিক প্রযুক্তিগুলো নারী বান্ধব করতে হবে, তাদের ব্যবহারের সুযোগ ও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, প্রযুক্তির ব্যবহারে নারীর প্রতি থাকা স্টিগমা গুলো দূর করতে হবে-। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো ও গুজব বন্ধে বিদ্বেষকারীদের দমনে ডিজিটাল আইন প্রয়োগে সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। মানবিক ও মর্যাদাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে সমতা এনে নারী আন্দোলনের থাকা অসমাপ্ত কাজগুলো এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের কাজগুলো চালিয়ে যেতে হবে। ২৫ বছরে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নারীদের অনেক অর্জন আছে। এর পেছনে নারী আন্দোলন ও মানবাধিকার আন্দোলনের অবদান আছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগগুলোও গুরুত্বে সঙ্গে তুলে ধরতে হবে।’ বক্তারা এসময় নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে সংসদে নারীদের জন্য ১০০ আসন সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিতের দাবি জানান।

সমাবেশে ঘোষণা পাঠ করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহ্নাজ সুমি। ঘোষণায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অভিগম্যতা বৃদ্ধি করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীবান্ধব প্রযুক্তির বিকাশকে উৎসাহিত করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচারণার উদ্যোগ; গুজব, ভুলতথ্য ও মিথ্যা এবং নারী ও সংবিধানবিরোধী সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণা বন্ধে সেন্সরশিপ প্রক্রিয়া চালু করা এবং এসব কাজে যুক্তদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা; সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে উদ্যোগ গ্রহণ করা; অনলাইনে হয়রানির শিকারদের অনলাইনে সহজে অভিযোগ দায়ের করতে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট চালু করা; পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন ২০১২-এর বাস্তবায়ন করা; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় নারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা অজ্ঞতাবশত নারীকে অবমাননা করে যে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জাতিসংঘের সিডও সনদের অনুচ্ছেদ-২ ও ১৬(১)(গ) এর উপর হতে সংরক্ষণ প্রত্যাহার করে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা; বৈষম্যমূলক পারিবারিক আইন পরিবর্তন করে সকল নাগরিকের সমঅধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অভিন্ন পারিবারিক আইন চালু করতে হবে। (বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ, ভরণপোষণ, অভিভাবকত্ব, দত্তক, সম্পত্তির উত্তরাধিকার বিষয়সমূহ।) সকল ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকারকে আইনগত স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে ও আইন কার্যকর করতে হবে।নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়, প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করা এবং সুশাসন নিশ্চিত করা সহ মোট ১৩ টি দাবি জানানো হয়।


সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত করা জরুরি। এই নতুন পরিবর্তনের ফলে নারী পুরুষের সমতা পথে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় প্রযুক্তির ব্যবহারে সমাজ ও মানুষকে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। নারী পুরুষের সমতা নিশ্চিতে নারী সমাজকে তৈরি করতে পরিবর্তিত অবস্থার সাথে নারী আন্দোলনকে নতুন করে ভাবতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন লিঠু মন্ডল; সমবেত সঙ্গীত পূরবী বিশ্বাস, নাজমুন নাহার নিপা, শারমিন ইভা ও হৃদিতা নূর সিদ্দিকী। দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করেন স্পন্দন এর শিল্পী, প্রমা ও লাবণ্য এবং একক নৃত্য পরিবেশন করেন স্পন্দন এর শিল্পী, শেঠীল।

সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যালিতে স্টেপস টুওয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট, ব্রাক, এডাব, আইন ও শালিস কেন্দ্রের প্রতিনিধিসহ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমন্ডলী, সংগঠনের কর্মকর্তা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক সহ শতাধিক জনের অধিক উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এডাবের সমাপিকা হালদার।