ঢাকা, সোমবার ০৮, ডিসেম্বর ২০২৫ ৬:৪৬:৩৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিমান ভ্রমণে সক্ষম না হওয়ায় খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রায় দেরি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটকে ‘ভিভিআইপি মুভমেন্ট’ ঘোষণা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সব ধরনের সহযোগিতা করছে সরকার : প্রেস সচিব ভারতের পর্যটনরাজ্য গোয়ার নাইটক্লাবে বড় অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২৩ ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৯০০

ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ, পদ্মায় ঝাঁপ দিয়ে তরুণীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৪০ এএম, ১ মে ২০২৪ বুধবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বারবার ভর্তি পরীক্ষায় চান্স না পেয়ে পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে পিউ কর্মকার (২০) নামে এক তরুণী। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের গোদারবাজার পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই তরুণী।

জানা গেছে, পিউ কর্মকার রাজবাড়ী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এ বছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও গুচ্ছ কলেজগুলোর ভর্তি পরীক্ষা অংশ নিয়েছিল। প্রথমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এরপর গুচ্ছ কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় চান্স না পেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে জানান তিনি।

পদ্মায় আত্মহুতি দেয়ার পর, তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তরুণী পিউ কর্মকার রাজবাড়ী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বিনোদপুর গ্রামের কৃষ্ণপদ কর্মকারের মেয়ে।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোহাম্মদ সাইফুল বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

আত্মহত্যার আগে এক ফেসবুক পোস্টে ওই তরুণী লিখেছেন, ‘গুচ্ছ আমার শেষ ভরসা ছিল। জানি না কবে রেজাল্ট দিবে। পরীক্ষাও মোটামুটি হয়েছিল একটা আশা ছিল কিন্তু আমার ভাগ্য সেই আশাটাও পূরণ করতে দিল না। ৫টা অপশন থাকে তার মধ্যে আমি বায়োলজি আর ইংরেজি এর বৃত্ত ভরাট করে ফেলেছিলাম ভুল করে আজকে সেটা দেখলাম। কিন্তু আমি উত্তর করেছিলাম বাংলার। আমার সব স্বপ্ন শেষ। একে একে ঢাবি, রাবি, জাবি থেকে একটু একটুর জন্য ধাক্কা খাই। জানি এটাও আমার ভাগ্যের জন্য চেষ্টা আমার কম ছিল না। সারাদিন রাত এক করে পড়তাম। বাবা মার অনেক স্বপ্ন ছিল আমাকে নিয়ে কিন্তু আমি কিচ্ছু দিতে পারি নাই। দাদার ইচ্ছা ছিল আমাকে ডাক্তার বানাবে। আমারও স্বপ্ন ছিল ছোট থেকেই যে ডাক্তার হবো। আমার ভাগ্য এতটাই খারাপ ছিল মেডিকেল অ্যাডমিশন এর প্রিপারেশন নেওয়াও শুরু করি কিন্তু মেডিকেলেও বসতে পারি না। এটা থেকেও বিশাল একটা ধাক্কা খাই। অনেক ভেঙে পড়েছিলাম তাও হাল ছাড়ি নাই। এই অ্যাডমিশন পিরিয়ডটা যে কতটা কষ্ট দিয়েছে আমাকে। ’

তিনি আরও লিখেন, ‘এই সব আর আমি নিতে পারতেছি না। আমি শুধু একটা আশ্রয় খুঁজছিলাম শেষ আশ্রয় এটাও শেষ হইল। অনেক মানুষ অনেক আত্মীয় এর অনেক কথা শোনা লাগছে। বাবার একটু ফিন্যান্সিয়াল সমস্যা থাকায়, ঢাকা গিয়ে পড়তে হবে কেন সেই প্রশ্নও আমাকে শুনতে হয়। কিন্তু আমি ধৈর্য্য ধরে ছিলাম যে পারব। কিন্তু আমি আর পারলাম না। সারাটা দিন ঘরের মধ্যে একা একা বসে থাকি। মানুষের কত ফ্রেন্ড কত কিছু কিন্তু আমি আমার পাশে কাউকে পাই নাই। সব থেকে প্রয়োজন ছিল যাকে, যাকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতাম তাকেও আমি আমার পাশে পাই নাই। হয়ত আমাকে সাপোর্ট করার মতো কেউ থাকলে আজকে এই মৃত্যুটা আমার হইতো না। সেকেন্ড টাইমের প্রিপারেশন নেওয়ারও আমার কোনো মানসিক বা শারীরিক শক্তি নাই। আমার জীবনটা এখানেই থেমে গেল। ’

সুইসাইড নোটে লিখেছেন, ‘মায়ের কাছে গিয়ে মাঝে মধ্যে কাঁদতাম মাও বুঝে নাই আমাকে। আমি একটা বোঝা সবার কাছে। আমার মৃত্যুর জন্য আমার এই বড় বড় স্বপ্নগুলোই দায়ী। আমি আমার বাবা, মার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি নাই। আমাকে শেষ বারের মতো দেখতে চাইলে নদীর জলেই খুঁজো। আমার মৃত্যুটা এভাবেও চাই নাই ভালো থাইকো সবাই। আমি আমার এই জীবনটা আর নিতে পারছি না। আমারে মাফ করে দিও সবাই। এভাবে দম বন্ধ করে বাঁচতে পারতেছি না আর। ’

পিউ কর্মকারের কয়েকজন সহপাঠী বলেন, ‘পিউ এইচএসসি পরীক্ষার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় সে একটি বিশ্ববিদ্যালয়েও সুযোগ পাইনি। এছাড়া গুচ্ছ কলেজে ভর্তি পরীক্ষাতেও সে কোনো কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি। যে কারণে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু সে বিষয়টি এই পর্যায়ে নিয়ে যাবে আমরা ভাবিনি।