ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০৮:৪৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’

মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলোর জন্মদিন আজ

আঞ্জুমান আরা | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:৫১ পিএম, ৬ জুলাই ২০২৫ রবিবার

ফ্রিদা কাহলো

ফ্রিদা কাহলো

ফ্রিদা কাহলো নিজেই বলেছেন,“আমি স্বপ্ন আঁকি না, আমি আমার নিজের বাস্তবতাকে আঁকি।” ফ্রিদা কাহলো একজন মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ও নারীবাদী। তাকে বলা হয় বিংশ শতাব্দির সবচেয়ে বেদনালীন এক শিল্পী যিনি সৃষ্টি করেছেন তার যাপিতজীবনের বেদনাগাঁথার ধারাবাহিক ক্যানভাস।

আজ ৬ জুলাই ফ্রিদা কাহলো'র ১১৮ তম জন্মবার্ষিকীতে জানাই অসীম শ্রদ্ধাঞ্জলি। 

তার পুরো নাম মাগদালেনা কারমেন ফ্রিদা  কাহলো। তিনি ১৯০৭ সালের ৬ জুলাই মেক্সিকো শহরের একটি গ্রাম কয়োআকানে জন্মগ্রহণ করেন । মাত্র ৬ বছর বয়স, তখন আক্রান্ত হন পোলিওতে যা তার ডান পাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে । আনন্দে খেলে বেড়ানোর সে সময়টিতে তাঁকে পড়ে থাকতে হয় নীল বাড়ীর একলা ঘরে একা একা। তার ডান পা শুকিয়ে চিকন হয়ে যায়। প্রায় নয় মাস বিছানায় থাকার পর যখন ফ্রিদা একটু সুস্থ হয়ে ওঠেন , তৎকালীন মেক্সিকো সমাজের প্রথা ভেঙে বাবা তাকে আরো সারিয়ে তুলতে নিয়ে যান সুইমিংএ এমন কি মেয়েকে নিয়ে যান রেস্লিং করাতেও।

আস্তে আস্তে পোলিও থেকে কিছুটা সেরে উঠলে ফ্রিদাকে ভর্তি করা হয় নাম করা স্কুলে। 
স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবার। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার।
১৯২৫ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৮ বছর বয়সে একটি সাংঘাতিক এক্সিডেন্টে ফ্রিদা ভয়ানকভাবে আহত হন। স্কুল বাস ও ট্রলি কারের সঙ্ঘর্ষে ভয়াবহভাবে ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে যান ফ্রিদা। তাঁর কলারবোন, রিবস, স্পাইনালকর্ড, পেলভিকবোন, সব কিছু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভালো করে সব বোঝার বয়স না হতেই ঘটে যায় ভয়ংকর সব ঘটনা। ফ্রিদার জীবন হয়ে যায় এলোমেলো। 
প্রায় ত্রিশটির মত অপারেশান করিয়ে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাটিয়ে অবশেষে বাড়ী ফেরেন তিনি। শেষ হয়ে যায় তার ডাক্তারী পড়ার স্বপ্ন। ব্যথায় বিপর্যস্ত হয়ে বিছানায় পড়ে থাকা দিনগুলোতে মা তাঁকে বানিয়ে দেন বিছানায় শুয়ে শুয়ে ছবি আঁকার মত বিশেষ ধরনের ইজেল। ছবি আঁকা ছবি তোলার মানুষ ছিলেন তাঁর বাবা, ফলে নানা রকম রঙ তুলি আর অয়েল পেইন্ট এনে বাবা তার আদরের মেয়েটিকে ছবি আঁকায় সাহায্য করেন।

শুরু হয় ফ্রিদার নতুন জীবন। জীবনের ছবি আঁকা আর রঙ তুলির খেলাই তার একমাত্র সাথী হয়ে ওঠে। সমস্ত শরীর জুড়ে এই তীব্র বেদনার খেলা তার অসংখ্য পেইন্টিং এর ভেতরে তুলে এনেছেন একান্ত জীবনবোধ, তার দহনকে। 

ফ্রিদার ১৪৩ টি পেইন্টিং এর মধ্যে ৫৫ টাই তার আত্মপ্রতিকৃতি যার ভেতর দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে নিজের বেদনার অপূরণীয় ক্ষত। বিবাহিত জীবন ছিলনা সুখের।

তিনি ১৯৫৪ সালের ১৩ জুলাই  মৃত্যু বরণ করেন।

১৯৫৮ তে মেক্সিকোর কয়োআকান শহরে তাঁদের নীল বাড়ী ফ্রিদার স্মৃতিময় মিউজিয়াম হিসেবে সাধারণ মানুষের জন্যে খোলা হয়। তাঁর জীবন নিয়ে লেখা হয় অসংখ্য বই । ২০০২ তে তৈরী হয় অসাধারন চলচ্চিত্র ‘ফ্রিদা’। তিনি এখন ফ্যাশন আইকন হিসেবে বিখ্যাত পৃথিবী জুড়ে। 

তথ্যসূত্র- উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক। 
ছবি- অন্তর্জাল।