ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ৭:৩৯:৫১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাক-সবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি শিশু হাসপাতালের আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে

মেয়েকে বিষের ট্যাবলেট দিয়ে হত্যা করলো মা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৪৪ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বুধবার

মেয়েকে বিষের ট্যাবলেট দিয়ে হত্যা করলো মা

মেয়েকে বিষের ট্যাবলেট দিয়ে হত্যা করলো মা

মেয়েকে বিষের ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা করলো এক মা। আগেও একাধিকবার একমাত্র মেয়ে শিউলী আক্তার মায়াকে (১০) বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন আছমা আক্তার (৩৩)। কিন্তু আত্মীয়স্বজনের কারণে ব্যর্থ হয়েছেন।

এরপর আবারও মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা আঁটেন। সে অনুযায়ী দোকান থেকে ৫০ টাকা দিয়ে ১০টি ইঁদুর মারার বিষের ট্যাবলেট কেনেন। পরদিন সকালে স্কুল থেকে মায়াকে ডেকে আনেন। বাড়ির উঠানে মেয়ের হাতে ট্যাবলেট দিয়ে বলেন- ‘নে খেয়ে ফেল’। ট্যাবলেট খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

এভাবেই তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া একমাত্র মেয়ে হত্যার নৃশংস বর্ণনা দেন আছমা আক্তার। সোমবার বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা আক্তারের খাসকামরায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে আছমা আক্তারকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অজিত কুমার সরকার এসব তথ্য জানান। কিন্তু কেন মা হয়েও নিজ হাতে মেয়েকে হত্যা করলেন তিনি? আদালতকে সেই প্রেক্ষাপটেরও বর্ণনা দিয়েছেন আছমা আক্তার।

আছমা আক্তারের জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসআই অজিত কুমার জানান, তিনি (আছমা) কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ চরপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার মেয়ে। প্রায় ১২ বছর আগে নাটোর জেলার বাসিন্দা আশরাফ উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের দুই বছরের মধ্যেই মায়া আসে সংসারে। মায়ার জন্মের বছর তিনেক পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় আশরাফ মারা যান। এরপর আবদুল কাদের নামে একজনের সঙ্গে বিয়ে হলেও পরবর্তীতে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ফলে বাবার সংসারেই একমাত্র মেয়ে মায়াকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।

আছমারা সাত বোন ও এক ভাই। একমাত্র ভাই নয়ন মিয়ার সঙ্গে নানা বিষয়ে আছমার বিরোধ চলে আসছিল। এ ছাড়া বাবা-মায়ের কাছে প্রায়ই টাকা-পয়সা চেয়ে না পেলে ঝগড়া-বিবাদ লাগত আছমার। ব্যক্তিগত জীবনে অনিশ্চয়তা ও পারিবারিক কলহের কারণেই আছমা আক্তার মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

সে অনুযায়ী আছমা গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ শহরের কাচারিবাজার এলাকার একটি দোকান থেকে ১০টি ইঁদুরের বিষের ট্যাবলেট কিনেন। পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির উঠানে মায়ার হাতে একটি ট্যাবলেট দিয়ে খেয়ে নিতে বলেন। মায়া ট্যাবলেটটি খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিষয়টি স্বজনদের নজরে আসে। তারা তাকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা পৌনে ১২টার দিকে মায়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এ ঘটনায় নিহত মায়ার নানা সুরুজ মিয়া তার মেয়ে আছমা আক্তারকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুবকর সিদ্দিক জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে এমন অমানবিক ও নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। আছমা আক্তার গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়েছেন। পরে আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।