ঢাকা, শনিবার ২০, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৪:১০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
নির্বাচনের বাকি ৫৩ দিন, সামনের প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ! ‘সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি’ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক আজ ট্রাভেল পাস হাতে পেয়েছেন তারেক রহমান উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অফিসে আগুন

রাজধানীতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৫৭ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২২ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সানজানা মুসাদ্দিকাকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে তার বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুরে মহাখালীর ওয়্যারলেস গেট এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে এমন দাবি করেন তারা। সানজানা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।

মানববন্ধনে যোগ দেয়া সানজানার বন্ধু অর্ণব দেব সাংবাদিকদের বলেন, এটা পুরাপুরি একটা হত্যা ছিল। আমি সানজানাকে চিনি ইউনিভার্সিটির শুরুর থেকে। শুরু থেকেই আমরা বন্ধু। ওর বাবা কখনও ওকে মেয়ে হিসেবে ট্রিট করেনি। ওকে সব সময় মারধরের ওপর রেখেছিলো। আমি এটাও শুনেছি সানজানাকে এক মাসের মতো বাসায় বেঁধে রাখা হয়েছিল, যেটা ওর খালা আমায় জানিয়েছেন। ওর খালা আমায় এও বলেছেন, সানজানার হৃদয় নামের এক কাজিন আছে। সেও সানজানার গায়ে হাত তুলতো। সানজানার বাবার পরিবার সানজানার বিরুদ্ধে কথা বলত সব সময়।

তিনি আরও বলেন, শনিবার সানজানা মারা যাওয়ার পরে তার এক আত্মীয় এসে বলেন, সানজানার নামে যে ৫২ লাখ টাকার একটা প্লট আছে, এই প্লটটা কোথায় যাবে। তার মধ্যে অনুশোচনা বলতে কিছু নেই যে, একটা মেয়ে মারা গেছে। তার প্রথম কথাই প্লট কী হবে। অর্ণব বলেন, সানজানার বাবা দুইটা বিয়ে করেছেন। সানজানার মায়ের সঙ্গে নিয়মিত ঝামেলা হতো তার বাবার।

সানজানার আরেক বন্ধু ধ্রুব বলেন, সানজানার শরীরে মারের দাগ ছিল। ঘটনার পর তার থেকে বাবা পলাতক। দ্রুত তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক। সানজানা তার চিরকুটে তার বাবার নাম লিখে গেছে।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর দক্ষিণখানের মোল্লারটেক এলাকার ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে সানজানার মৃত্যু হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মারা যাওয়ার আগে তিনি একটি চিরকুট লিখে যান। সেখানে তিনি তার বাবাকে ‘পশু ও রেপিস্ট’ বলে উল্লেখ করেছেন।

দক্ষিণখান থানার ওসি মামুনুর রশীদ বলেন, শনিবার দুপুরে কাপড় শুকানোর জন্য বাসার সিকিউরিটি কাছ থেকে ছাদের চাবি নিয়ে ছাদে গিয়ে ওই ছাত্রী তাদের ১০তলা ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন।

তিনি বলেন, মৃত শিক্ষার্থীর বাবা শাহীন আলম পাঁচ বছর আগে তাদের না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কয়েকদিন আগে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানাননি হলে দুই পরিবারের মধ্যে টানাটানি চলে। এরপর সানজানার মা দুই মাস আগে তার বাবাকে ডিভোর্স দেন। এজন্য তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফিসহ আনুসঙ্গিক খরচাদি দিতেন না বলে জানা গেছে।

সানজানার মানসিক সমস্যা ছিলো উল্লেখ করে ওসি বলেন, তার কিছু প্রেসক্রিপশন পেয়েছি। মার্চেও মানসিক রোগের জন্য তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তাতে তার আত্মহত্যার প্রবণতা আছে বলে দেখা গেছে।

আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লিখে গেছেন ওই ছাত্রী। চিরকুটটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সঙ্গে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সঙ্গে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।’

পুলিশ জানায়, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৃত ছাত্রীর মা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে শাহীন আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। শাহীন আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।