ঢাকা, সোমবার ০৬, মে ২০২৪ ২:২৭:২৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন, ঘুমের মধ্যে মা-ছেলের মৃত্যু এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী আজ থেকে স্কুল কলেজ খোলা সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সিলেট ৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি, মাছ-মাংসে আগুন আরও ২ দিন দাবদাহের পূর্বাভাস

সাবিহার হস্তশিল্পের পণ্য দেশ পেরিয়ে বিদেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫২ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মায়ের কাছ থেকে হাতেখড়ি হস্তশিল্পের কাজ নিজে শুধু স্বাবলম্বী নয় সফল উদ্যোক্তা সাবিহার তৈরি হস্তশিল্প পণ্য দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন যাচ্ছে ৭ দেশে। ওই এলাকার অন্যান্য নারীরাও এখন আয় বর্ধণমূলক এ কাজ করে সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতা।   
জানা যায়, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট গোবিন্দপুর গ্রামে বসবাস করেন সাবিহা খাতুন। বাবা হাবিবুর রহমান মা আনোয়ারা বিবির ছোট মেয়ে সাবিহা খাতুন এবার জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। গ্রামের অন্যান্য নারীদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে নিজে কিছু করার মানসিকতা থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা করেন। বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গড়ে তোলেন অনলাইন প্লাটফর্ম ”সোহা হস্তশিল্প”। প্রথমে ৪/৫ জনকে নিয়ে উলের নানা ধরনের হস্তশিল্পের পণ্য তৈরি শুরু করেন। এখন ওই এলাকার  শত-শত নারী নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি এ কাজ করে সংসারে ফিরিয়ে এনেছেন স্বচ্ছলতা। উপমা ও মাল্টিন্যাশনাল নামে দুটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে সাবিহার হস্তশিল্পের পণ্য দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন যাচ্ছে ৭ টি দেশে। এ গুলো হচ্ছে- কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, মালয়েশিয়া, জার্মানি, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। গোবিন্দপুর গ্রামের বিভিন্ন বয়সী নারীরা উলেন সুতা আর ক্রুস কাটা দিয়ে তৈরি করছেন শীতের চাদর, মেয়েদের বেনী, কান টুপি, পঞ্চ, ছেলেদের টুপি, মেয়েদের ফুলটুপি, পাপোশ, টেবিল ম্যাট, টেবিল রানার, বোতল কভার, বেবি নেট, টিস্যু বক্স কভার, কুশন কভার, মশারী কভার, শিশুদের বিভিন্ন ডিজাইনের জামা, শিশুদের কটি, লেডিস ব্যাগ, মোবাইল ব্যাগসহ অন্যান্য হস্তশিল্প। এ ছাড়া পাটের ম্যাক্রমের সুতা দিয়ে তৈরি করছেন ঝুলন। নারীরা সংসারের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি যে কোন সময় বসে হস্তশিল্পের এ কাজ গুলো করে সংসারে বাড়তি আয় করছেন। স্কুল কলেজ পড়ুয়া মেয়েরাও লেখা পড়ার পাশাপাশি এ কাজের আয় দিয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছেন। 
কালাই সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুফিয়া খাতুন ও মিম আক্তার জানান, কলেজ ছুটির দিনে অবসর সময়ে কাজ করে মাসে ২/৩ হাজার টাকা আয় করতে পারি। প্রতিবেশী রহিমা, রত্না, ইসমত আরা জানান, স্বামীর কৃষি কাজের আয় দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হতো। এখন সাবিহার গড়ে তোলা সোহা হস্তশিল্পে কাজ করে মাসে ৫/৬ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। বাড়ির ঘর গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি এ কাজ করে বাড়তি আয়ে নিজের ইচ্ছামত প্রয়োজনীয় খরচ করতে পারেন। এতে করে তাদের প্রতি সংসারে শ্বশুর-শাশুড়ি বা স্বামীর দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হয়েছে বলেও জানান তারা। 
সাবিহার মা আনোয়ারা বিবি হস্তশিল্পের কাজে বেশ পারদর্শী ছিলেন। মায়ের কাছ থেকে উল বোনা, ক্রুজের কাজ হাতেখড়ি সাবিহার। এ কাজে দক্ষতা অর্জনসহ ব্যবসায়ীক সফলতার জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জয়পুরহাট জেলা কার্যালয়ে থেকে ২০১৯ সালে ” শিল্প উদ্যোক্তা’  বিষয়ক পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বাড়ি ফিরে ৪/৫ জনকে নিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে ওই এলাকার অনেক নারী তার এ কাজে যোগ দিয়েছেন। সেই ক্রুজের সুঁচ সুতার মধ্যে নিজের স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন সাবিহা। এখন এলাকায় একজন সফল উদ্যোক্তার খেতাব অর্জন করেছেন।  
সাবিহা জানান, এখন শতাধিক নারী এ কাজ করে সংসারে বাড়তি আয় করছেন। এ কাজে সহযোগিতা করা নারীদের জন্য গড়ে তুলেছেন ”সোহা নারী কল্যাণ সংস্থা”। গোবিন্দপুর গ্রামের অসহায় নারীদের ভাগ্য উন্নয়নে এখন বিশেষ ভূমিকা পালন করছে এই সোহা নারী কল্যাণ সংস্থা। 
কালাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন বলেন, সাবিহা খাতুন একজন সফল নারী। তার অদম্য ইচ্ছা শক্তিতেই প্রতিষ্ঠিত ’সোহা হস্তশিল্পে’ শতাধিক নারী খুঁজে পেয়েছেন স্বাবলম্বী হওয়ার পথ। 
বিসিক জয়পুরহাটের উপ-ব্যবস্থাপক লিটন কুমার ঘোষ বলেন, সাবিহা খাতুন আন্তর্জাতিক মানের উলেন ও ম্যাক্রোসের পণ্য তৈরি করছেন। ক্ষুদ্র্ঋণ ও অধিকতর প্রশিক্ষনের জন্য বিসিক তাকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে বলেও জানান তিনি।