ঢাকা, মঙ্গলবার ০৮, জুলাই ২০২৫ ১৮:০৭:১৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
চীনে স্কুলের খাবার খেয়ে হাসপাতালে ২৩৩ শিশু গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের প্রাণহানী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল দেখবেন যেভাবে দুপুরের মধ্যে ৭ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা

আইরীন নিয়াজী মান্নার একগুচ্ছ ছড়া

আইরীন নিয়াজী মান্না | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৫৬ পিএম, ২০ জুন ২০২৫ শুক্রবার

আইরীন নিয়াজী মান্নার একগুচ্ছ ছড়া

আইরীন নিয়াজী মান্নার একগুচ্ছ ছড়া

শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক ছোটদের প্রিয় পত্রিকা কিশোর লেখা সম্পাদক  আইরীন নিয়াজী মান্নার একগুচ্ছ ছড়া তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।

জন্মদিনে    
এপ্রিল মাসের নয় তারিখে তোর জন্মদিনে,
একলা একা বসে আছি ফুলের ঝাপি কিনে!

জারুল ফুলের রঙে বুবু মুখটি তোর আঁকা,
কৃষ্ণচূড়ার পরাগে সব সুখ লুকানো রাখা।

রাত্রি এলেই স্মৃতিগুলো বড্ড বেশি জ্বালায়,
ঘুমের ঝাপি চুপটি করে কোথায় যেন পালায়।    

আকাশ বাতাস নদী তাঁরা তোর কথাতো কয়,
তোকে ছাড়া পাখ-পাখালী উদাস চেয়ে রয়।

মনের মাঝে শান্তি ছিলো, সুখ ছিলো প্রাণ জুড়ে,
হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গেলি অজানা কোন্ দূরে!


শীতের চাদর
শীতের সকাল কুয়াশার চাদর
লেপের ভেতর উম,
পাখপাখালির কিচিরমিচির
ভাঙলো সুখের ঘুম।

জবার ডালে দোয়েল পাখির
মিষ্টি করুণ শিষে
পূবালী হাওয়ার মধুর আবেশ
আছে যেন মিলেমিশে।

খেঁজুরের রসে চিতুই পিঠা
হেমন্তে ধানের ঘ্রাণ,
কৃষকের মনে সুখের পরশ
জুড়িয়ে যায় প্রাণ।

বাঁশবাগানে রোদ ঝিকিমিকি
ঘাস ফঙিংয়ের খেলা,
কাজল বিলে শাপলার বুকে
চলে ডাহুকের জলখেলা।

মুক্তোর মত শিশিরের ফোঁটা
জড়িয়ে থাকে ঘাসে,
দুবলার চরে সিুঁরে আকাশে
সন্ধ্যা নেমে যে আসে।

 

মিষ্টি সকাল
ওরে সকাল মিষ্টি সকাল
সোনালী রোদের ঝলক,
মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখি
পরছে না তো পলক।

দূরের মাঠে হাওয়ার খেলা
আলোর আঁকিবুকি,
মনের বনে সুখের মাতম
লাগছে ভীষণ সুখি।

সবুজ ঘাসে শিশির দোলা
পিউলী পাখির ডাক,
রাখাল ছেলে যাচ্ছে কোথা
দিচ্ছে কেমন হাক।

মেঠো পথে ছুটছে কৃষাণ
নাঙ্গল নিয়ে কাধে
কৃষাণী বউ ভোর-বিহানে
মাছের ঝোল রাঁধে।

আঙ্গিনাতে ছুটছে শিশু
টাপুর টুপুর খেলে,
হারাণ মাঝি মাঝ পুকুরে
নৌকাতে জাল ফেলে।


দূর্গা-অপু
দূর্গা-অপু যায় ছুটে ওই 
ঘাসের বনে
বসন্তে ওই ফুল ফুটেছে 
কাশের বনে।

ইলশে গুড়ি বৃষ্টি বুড়ি 
দিচ্ছে হানা
হিজলডালে পাখা মেলে 
শালিক ছানা।

কু ঝুকঝুক শান্তাহারের 
রেল ছোটে
হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে 
রোদ ওঠে।

দূর্গা-অপু ছুটতে থাকে 
মাঠের পরে
কু ঝুকঝুক রেলটা মন- 
উদাস করে।

মাঠের পারের ূরের শে 
মন যে টানে
প্রাণপাখিটা উদাস হয় 
হাওয়ার গানে।


হলদে পাখি
হলদে পাখি হলদে পাখি 
হলদে পাখির বৌ
শস্যে ক্ষেতে তুলতে গেছো 
মিষ্টি মধুর মৌ।

শরীর তোমার ঠিক যেনো গো 
হলুদ দিয়ে মাখা 
চোখ দুটো কী কাজল দিয়ে 
তুলির টানে আঁকা?

চঞ্চুটি যে সিঁদুর রঙের 
টুকটুকে ঠিক লাল
হলুদ বর্ণে আঁকা তোমার 
ছোট্ট দুটো গাল।

কানে তোমার দুলছে আহা 
কি বাহারী ফুল
ফুল নয়তো ফুল নয়তো 
ও যে কানের দুল।

লেজটি যেন শাড়ির পাড়
আলতা পড়া পায়
ভোরবিহানে গান গেয়ে যাও
আমার আঙিনায়।


মেঘের মেয়ে
মেঘ পরীদের সঙ্গে নিয়ে 
করছো তুমি খেলা
শূন্য ঘরে আমার মোটে
কাটছে না যে বেলা।

আম কুড়াতে যাই না তো আর
একলা বসি দাওয়ায়
কোনো কাজেই মন বসে না
মন বসে না খাওয়ায়।

অচিনপুরের দেশটি তোমায়
হঠাৎ নিলো কেড়ে
অচিন দেশে কেমনে থাকো
একা আমায় ছেড়ে!

মেঘের কোলে চাঁদ জেগে রয়
একলা আমি থাকি
মনের পাতায় স্মৃতিগুলো
তুলির টানে আঁকি।

মেঘের মেয়ে টুটুল তুমি
ফুল বাগানে থেকো
মেঘ পরীদের বন্ধু হয়ে
আমায় মনে রেখো।

মেঘ পাখিদের ছড়া
চাঁদের আলো লুকিয়ে থাকে 
মেঘের সাদা ভাজে
আলোর নাচন ছড়িয়ে পরে
নতুন কারুকাজে।

টাপুর টুপুর বৃষ্টিগুলো
মাটির বুকে ঝরে
উদাস হয়ে তাকিয়ে থাকি
মন যে কেমন করে।

দিগন্তে ওই গাছের সাড়ি
কুঞ্জফুলের মালা
শেষ বিকেলে টুই পাখির
নীড়ে ফেরার পালা।


ছোট্টবেলার দিনগুলি
সেই যে আমার ছেলেবেলা
ছোট্টবেলার দিনগুলি
হারিয়ে গেছে সবুজ বনের 
মিষ্টি গানের বুলবুলি।

লাটিম লাটাই, পুঁতির মালা
কোনো কিছুই গল্প না
চোখের পাতায় লুকিয়ে ছিলো
হাজার রকম কল্পনা।

সেই যে আমার ছেলেবেলা
ছোট্টবেলার দিনগুলি
স্মৃতির পাতায় ঝাপসা দেখি
যতই আমি চোখ খুলি।

বনভোজন আর ঘুরতে যাওয়া
কোনো কিছুই গল্প না
তুলির টানে মনের কোণে
আঁকছে স্মৃতি আলপনা।

সেই যে আমার ছেলেবেলা
ছোট্টবেলার দিনগুলি
যতই আমি হই না বড়
কেমন করে তাই ভুলি।