জীবন বাজি রেখে সম্মুখযুদ্ধ করেন মুক্তিযোদ্ধা সালেহা
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১০:৪৩ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০২১ বুধবার

জীবন বাজি রেখে সম্মুখযুদ্ধ করেন মুক্তিযোদ্ধা সালেহা বেগম
অস্ত্র লুট, বোমা বানানো, বোমা পরীক্ষা থেকে শুরু করে সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধ করেছেন যশোরের বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সালেহা বেগম৷ মাতৃভূমির মুক্তির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সালেহা নিজেকে তৈরি করেন একজন সৈনিক হিসেবে৷
সালেহা বেগমের বাবা মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার৷ মা মমতাজ আরা বেগম৷ জন্ম ১৯৫৩ সালের ৪ মার্চ ৷ মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় যশোর মহিলা কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী সালেহা ছিলেন৷
ছাত্র জীবন থেকেই বাম ধারার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন সালেহা। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই ১৯৬৯ সালে নিউক্লিয়াস নামে একটি সংগঠন হয়। এই সংগঠনের সদস্য ছিলেন সালেহা৷ নিউক্লিয়াসের উদ্দেশ্য ছিল দেশ স্বাধীন করা৷ সমাজতান্ত্রিক শোষণমুক্ত সাম্রাজ্যবাদমুক্ত একটা দেশ গড়া৷ আর এই মনোভাব নিয়েই সালেহাসহ এ সংগঠনের সদস্যরা সংগঠিত হতে থাকেন৷ গড়ে তোলেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র৷
১৯৭০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়৷ সেখানে প্রায় ২০০ ছেলে এবং পাঁচজন মেয়েকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ এই প্রশিক্ষণের মধ্যে ছিল অস্ত্র চালনা, বোমা তৈরি, বোমা নিষ্ক্রিয় করা প্রভৃতি৷
এরপর ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালরাতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র-নিরীহ বাঙালির ওপর পাকসেনারা অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঠিক এসময় দেশকে বাঁচাতে নিজের জীবন বাজি রেখে সরাসরি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন সালেহা এবং তার দল৷
যশোরের বিভিন্ন জায়গায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন সালেহা৷ কিছু দিন পর ওয়ারলেস এবং গেরিলা হামলার মতো আরো উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে চলে যান৷ ভারতের দত্তফুলিয়া এবং এপারে মহেশপুর অঞ্চলে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন তিনি৷
এক একান্ত সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধের কিছু ঘটনার কথা জানান সালেহা বেগম৷
তিনি বলেন, ‘আমি একদিন যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি৷ এটা ছিল যশোরের বাহাদুরপুর অঞ্চল৷ প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ৷ বাহিনীর অন্যান্য সবাই বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে একত্রিত হয়৷ এসময় আমার কাছে ছোট্ট একটা চিরকুট আসে৷ এতে লেখা, ‘আমরা না বলা পর্যন্ত আপনি বেরুবেন না’৷ এটা থানা কমান্ড থেকে আমার কাছে নির্দেশ হিসেবে পাঠানো হয়৷ ফলে আমি ভাবলাম, এটা আমার মেনে চলা উচিত৷ হয়তো মারাত্মক কোন ঘটনা ঘটেছে৷ আমি আর সেখানে গেলাম না৷’
তিনি আরও বলেন, পরে জানতে পারি, সেখানে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা ছেলেরা পাকসেনারা চারপাশ দিয়ে ঘেরাও করে ফেলেছিলো৷ প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়৷ আমাদের মাত্র ৫/৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিল৷ অথচ তারা কেউ পিছু হটেনি৷ তাদের কি অদম্য দেশপ্রেম! নিজেদের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তারা পাকসেনাদের সাথে যুদ্ধ করে শহীদ হয়ে যান৷ আমি সেখানে গেলে আমিও সেদিন মারা যেতাম৷ সেজন্যই আমাকে চিরকুট পাঠানো হয়েছিল৷’
নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর সদস্য হিসেবে অনেকগুলো সম্মুখযুদ্ধে যোগ দিয়েছেন সালেহা বেগম৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পাকসেনাদের গুলি করে মেরেছেন৷ খুব কাছে থেকে পাকসেনাদের উপর হামলা চালিয়েছেন৷ তবে পাকসেনাদের ধরে আনার ঘটনা ঘটেছে মাত্র একবারই৷ অন্যান্য সময় পাকসেনারা নিহত হলেও তারা নিহত সেনাদের লাশ নিয়ে পালিয়ে যেতো৷ ফলে পাকসেনাদের লাশ পাওয়া যেতো না, বলে জানান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা৷
গুপ্ত হামলা, গোয়েন্দাগিরি কিংবা অস্ত্র সরবরাহের কাজও করেছেন এই বীর নারী।
আরেকদিনের এক ভয়ংকর ঘটনার কথা জানিয়ে সালেহা বেগম বলেন, ‘প্রথমদিকের ঘটনা এটি৷ আমরা প্রশিক্ষণ নিলেও সবাইতো আর এক রকমভাবে প্রশিক্ষিত কিংবা যুদ্ধে অভিজ্ঞ ছিলাম না৷ এ অবস্থায় একদিন বারান্দিপাড়ায় আমরা যুদ্ধের জন্য অবস্থান নিয়েছি৷ নিজেদের অবস্থানের জন্য প্রয়োজন মতো মাটি খুঁড়ে ট্রেঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল৷ সেসব ট্রেঞ্চে শুয়ে সেখান থেকে গুলি করতে হবে৷ তবে সবাই ট্রেঞ্চে অবস্থান নিতে না পারায়, অনেকে যে যেখানে জায়গা পেয়েছে শুয়ে অবস্থান নিয়েছে৷ গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে৷ সামনে পাকসেনাদের লক্ষ্য করে আমরা গুলি ছুঁড়ছি৷ কিন্তু হঠাৎ করে দেখা গেল পেছন থেকে কয়েকটি গুলি আসল৷ আমাদের একেবারে কানের পাশ দিয়ে চলে গেল৷ তবে ভাগ্যিস হেলমেট পরা ছিলাম৷ ফলে আমরা কেউ আহত হইনি৷ কিন্তু আমরা তো সবাই হতবাক৷ পাকসেনারা তো সামনে আছে৷ পেছনে তো পাকসেনা নেই৷ তাহলে গুলি আসল কোথা থেকে? পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পেছন থেকে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদেরই কেউ গুলি ছুঁড়েছে৷ বিষয়টা বোঝার সাথে সাথে তাদের থামানো হলো৷ অবশ্য পরে আর এমন ঘটনা ঘটেনি৷'
- ফোর্বসের তালিকায় ৯ বাংলাদেশি তরুণ
- মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে কবরীর ছেলে
- করোনা মুক্ত হয়েই প্লাজমা ডোনেশনে ভূমি
- যশোরে ধান কাটা শুরু: ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষাণীরা
- লকডাউনের সময় বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
- করোনা টিকা উৎপাদনে সহায়তার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- ৭ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তির আবেদন শুরু ২ মে
- করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলেন ১৫ লাখ মানুষ
- করোনার সংক্রমণ: ভারতকে লাল তালিকাভুক্ত করল ব্রিটেন
- কয়েক মাসেই নিয়ন্ত্রণে আসবে করোনা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
- করোনামুক্ত হয়ে যেসব ব্যায়াম জরুরি
- ভারতে করোনায় আরও ১,৭৫৭ মৃত্যু, আক্রান্ত আড়াই লাখ
- ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ভূমিকম্প
- খালেদা জিয়ার জ্বর নেই, শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক
- শুটিংয়ে প্রথম স্বর্ণপদক বিজয়ী আমিরা হামিদ
- মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলার চেষ্টা, নিহত ২
- করোনা বাড়লেও লকডাউনের কথা ভাবছে না ভারত
- করুণা বেগম: এক স্বীকৃতিবিহীন অদম্য মুক্তিযোদ্ধার গল্প
- লকডাউনেও চলবে করোনা টিকাদান কার্যক্রম: সেব্রিনা ফ্লোরা
- এবারো পাহাড়ে হচ্ছে না ‘বৈসাবি’ উৎসব
- মুক্তিযুদ্ধে মুন্সিগঞ্জের শহীদ ৩ বোনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
- একাত্তরে শহীদ ভাগীরথীকে ভুলে গেছে জাতি
- এক কেজি সবজির দাম লাখ টাকা!
- ‘জলবায়ুর ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কার্বন বাজার উন্মুক্ত করুন’
- রক্ত দিয়ে কেনা ভাষা
- বৃদ্ধা ভিক্ষুকের টাকা ছিনতাই!
- নারী দিবসে সমতাই কাম্য
- বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলেনা: এক সাহসী যোদ্ধার গল্প
- ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ: আইসিসির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র