মনের জোরে বাঁচি: তসলিমা নাসরিন
তসলিমা নাসরিন | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৬:০৮ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০২৩ রবিবার

লেখক তসলিমা নাসরিন
মনের জোরে তিরিশ বছরের নির্বাসন সামলাচ্ছি। একা সম্পূর্ণ একা। এক দেশ থেকে আরেক দেশ। একা। লেখাই এখন পর্যন্ত একমাত্র উপার্জন। পত্র পত্রিকায় লেখা বন্ধ করে দেওয়া হয়, উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। বই ছাপানো বন্ধ করে দেওয়া হয়, উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। স্ট্রাগল করি একা। মনের জোরে বাঁচি। নারীবিদ্বেষী নিন্দুকেরা গত চার দশক ধরে কুৎসা আর অপপ্রচার চালিয়েই যাচ্ছে। এসবের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি একা। মনের জোরে। সন্ত্রাসীরা তিন দশকের বেশি হলো ওত পেতে আছে আমার মুণ্ডু কেটে নেবে বলে। পদে পদে হুমকি। যে কোনও মুহূর্তে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে জঙ্গি আততায়ী। আর কিছু নয়, আমাকে বাঁচিয়ে রাখছে মনোবল।
মন তো সবল ছিলই। শরীরও ছিল সবল, ছিল ফিট এবং পারফেক্ট। ছিল সুস্বাস্থ্য। আমার শরীরের সেই কাঠামোকে টাকার লোভে ভেঙ্গে দিল অ্যাপোলো ইন্দ্রপ্রস্থের এক ক্রিমিনাল। যে কোনও সময় কোনও এক দুর্ঘটনা ঘটে যাবে, এবং আমি আর হাঁটতে পারবো না। মাঝে মাঝে ভাবি, আমার যদি এমন কোনও অসুখ হয়, যে অসুখ আমাকে শয্যাশায়ী করে ফেলবে, তাহলে কে আমার পাশে থাকবে? কেউ নয়। যে শহরে আমি বাস করি, সে শহরে আমার কোনও আত্মীয় নেই, স্বজন নেই । কিছু চেনা মানুষ আছে কেবল। তারা হয়তো আমাকে একদিন বা দুদিন দেখতে আসবে। ব্যাস। আমার আত্মীয়দের কেউ কি আমার পাশে থাকবে আমার সেবা করার জন্য বা প্রাণে আমার আরাম দেবার জন্য? না, কেউই থাকবে না। জীবন ভর একা ছিলাম, যতদিন বাঁচি, যে দেশেই বাস করি, আমাকে একাই থাকতে হবে। সে আমি খুব ভালই জানি।
আমি আত্মহত্যা করার লোক নই। আমি প্রচণ্ড রকম জীবন ভালবাসি। কিন্তু তারপরও বলবো, যদি মস্তিস্ক সুস্থ না থাকে, তাহলে সে জীবন জীবন নয়, সেই জীবন যাপন করার কোনও অর্থ হয় না, আমি বরং মুচলেকা দিয়ে যাবো, ইউদেনেসিয়া, বা স্বেচ্ছা মৃত্যুতে সায় দিয়ে। আর যে-ই বাঁচতে চাক, ভেজেটেবল হয়ে বাঁচার কোনও ইচ্ছে আমার নেই। যদি মস্তিস্ক সুস্থ থাকে, যদি ভাবতে পারি, লিখতে পড়তে পারি, তাহলে নিশ্চয়ই বেঁচে থাকতে চাই, সে শরীরের জোরে না হোক, মনের জোরে। এই মনটাকে তাই আমি ভালবাসি। এটি আছে বলেই আমি আছি। এর যদি জোর না থাকতো, কবে কোনকালে আমার মৃত্যু হয়ে যেত।
এই মনে কেবল যে জোর আছে তা নয়, এই মনের মতো নরম আমি খুব কম মনই দেখেছি। এত নরম যে, যে কারও দুঃখে কাঁদে, যে কাউকে বিশ্বাস করে ঠকে, ঠকেও আবার বিশ্বাস করে, যে কারও অভাব দেখলে সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়। নরম মনেও বল থাকে। নরম মনে কি বল বা জোর আসলেই থাকে? নাকি আমি বেঁচে ছিলাম, যেহেতু বেঁচে থাকা ছাড়া আমার আর কোনও উপায় ছিল না? আসলে একটা ব্যাপার বরাবরই ছিল আমার, আমি জানতাম আমি আপাদমস্তক সৎ, আমি জীবনে কোনও অসততা করিনি, কোনও মিথ্যে বলিনি, বারবার প্রতারিত হয়েছি কিন্তু কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি। নিজেকে আমি জানি বলে নিজেকে শ্রদ্ধা করেছি, সম্মান করেছি। চরম দুঃসময়েও এই সম্মান এতটুকু টলে যায়নি। নিজের ওপর বিশ্বাস এতটুকু ম্লান হয়নি। সম্ভবত শিরদাঁড়া সোজা করে বেঁচে থাকার জন্য, এই সম্মানটি খুবই জরুরি। এই সম্মান আছে বলেই সমাজ আমাকে যতই বঞ্চিত করুক, লাঞ্ছিত করুক, আমার কিছুই যায় আসে না; আঘাতের পর আঘাত আসে, আমাকে ধরাশায়ী করতে পারে না। আমি আমার মতো বেঁচে ছিলাম, আমি আমার মতো বেঁচে থাকি। একা।
লেখাটি ফেসবুক থেকে নেওয়া।
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে তিন গাড়ির সংঘর্ষ, আহত ১২
- নার্সারিতে বাহারি ফুলের চাষ করে সফল দুলাল
- সবজিতে স্বস্তি, আগের দামে ফিরল গরু ও মুরগির মাংস
- কুম্ভমেলায় যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ১০
- দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বাড়তে পারে
- ছুটির দিনেও ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বায়ু
- বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জন্মদিন আজ
- ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তির লড়াইয়ে দেড় লাখ শিক্ষার্থী
- মেট্রোরেলে একদিনে যাত্রী পরিবহনে রেকর্ড
- সাভারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, শিশুসহ দগ্ধ ১১
- ফাল্গুনে ভালোবাসায় ঘোরাঘুরি
- যাদের আত্মত্যাগে এলো ভালোবাসা দিবস
- ভালোবাসা দিবসে শতাধিক নাটক
- খুলনায় একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দিলেন নারী
- সংকট কাটেনি ভোজ্যতেলের, বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম
- জুরিবোর্ডে ইলিয়াস কাঞ্চন ও বাঁধন
- ফেসবুকে কত ভিউ হলে কত টাকা আয় হয়?
- নারী ক্রিকেটে জ্যোতির ইতিহাস
- ভয়ংকর মাদকে আসক্ত তিশা-টয়া-সাফা!
- বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়া কাপ নিয়ে গেল ভারত
- রাজধানীতে বুধবার যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ
- ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টাইগারদের সিরিজ জয়
- প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে স্মৃতি মান্ধানার কীর্তি
- দেশীয় ওটিটিতে জয়া আহসান
- অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপে সুপার ফোরে বাংলাদেশ
- নগরীর অভিজাত তারকা হোটেলে ক্রিসমাস
- নারীদের জন্য কঠোর পোশাকবিধি আইন স্থগিত করল ইরান
- সংসার পাততে সপরিবারে ভারত ছাড়ছেন কোহলি
- চলে গেলেন ভাষা সৈনিক মরিয়ম বেগম
- নারী এশিয়া কাপে ভারতের কাছে ৮ উইকেটের হার বাংলাদেশের