ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:২৫:৩৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পূর্বাচল ৩০০ ফিটে নেতাকর্মীদের ঢল মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত পোস্টাল ভোটে নিবন্ধনের সময় বাড়লো হাদি হত্যায় মোটরসাইকেল চালকের সহযোগী গ্রেপ্তার ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে নিষিদ্ধ করল সরকার

সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও নুসরাতকে বাঁচানো যায়নি : সামান্ত লাল

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৪৪ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ফেনীতে অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেস্টা করা হয়েছে।  এ কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। নুসরাত মারা যাওয়ার পর বুধবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

ডা. সামন্ত লাল বলেন, আগুনে কোনো রোগীর ১৫ শতাংশ পুড়ে গেলে আমরা ক্রিটিক্যাল হিসেবে চিহিৃত করি। সেক্ষেত্রে নুসরাতের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলো। সে কারণে আমাদের করার কিছুই ছিল না। নুসরাতকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়।

তিনি বলেন, নুসরাতের চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করেছেন। মৃত্যুর আগেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। সবশেষ মারা যাওয়ার বিষয়টি আমরা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে নুসরাতের মরদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ডা. সামন্ত লাল।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান ফেনীতে অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।

গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় মাদ্রারাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই ভবনের চার তলায় যান। এসময় বোরকা পড়া চার জন মামলা তুলে নিতে বলে। তাতে রাজি না হওয়ায় ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

আগুনে হত্যাচেষ্টার পর নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আগুনে তার শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠণ করা হয়। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আগুনে ঝলসে যাওয়ার পর জবানবন্দিতে নুসরাত বলেছিলেন, বোরকায় মুখ ঢাকা থাকায় ওই চারজনের কাউকে তিনি চিনতে পারেননি। তবে এক পর্যায়ে তাদের একজন আরেকজনকে শম্পা নামে ডেকেছে, সেটা তার মনে আছে।

আগুনে নুসরাতের শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার শেষে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জানান, সফল অপারেশন হয়েছে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছে।

নুসরাতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শ্লীলতাহানির অভিযোগে ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ-দৌলা বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে নুসরাতকে ডেকে নেন। এরপর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ।

পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ। সেই মামলা তুলে না নেয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন দিয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এদিকে মঙ্গলবার রাতে সিরাজ-উদ-দৌলার ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন, তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। বাকি সাতজন হলেন- পৌর কাউন্সিলর মাকসুল আলম, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, সাবেক ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নূর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের। এছাড়া ঘটনার সময় ‘হাতমোজা, চশমা ও বোরকা’ পরিহিত আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।

-জেডসি