ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ৩:৫৩:৩৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

আপেল কুল চাষে লাখ টাকা আয়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৫৩ এএম, ২০ মার্চ ২০২৩ সোমবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় ‘আপেল কুল (বরই)’ চাষে কৃষক আব্দুস সালাম আর্থিকভাবে সফলতা অর্জন করেছে। যে জমিতে তিনি প্রচলিত ফসল ধান, গম ভূট্টা চাষ করে হাজার টাকা আয় করতেন, সেই জমিতেই আপেল কুল বাগান করে লাখ-লাখ টাকা আয় করেছেন। তার বাগান পরিচর্যা আর আয়ের কলাকৌশল দেখে আশপাশের কৃষকরাও কুল বাগানে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
দিনাজপুর বিরল উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মাহবুবার রহমান জানান, বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউপির দ্বীপনগর গ্রামের আলহাজ আব্দুল বাছেরের পুত্র আব্দুস সালাম গত ৭ বছর পূর্বে উপজেলার দক্ষিণ মেড়াগাঁও গ্রামে প্রায় ৬ একর জমিতে ৬০০ আপেল কুলের চারাগাছ রোপণে বাগান গড়ে তোলেন। তিনি অন্যান্য জাতের মধ্যে ভারতীয়, কাশ্মীরি, নারিকেল, বাউ ও থাই কুল থাকলেও আপেল কুলকে প্রাধান্য দিয়ে এ বাগান গড়ে তোলেন। সুস্বাদু ফল বরই। টক, মিষ্টি, দেশি, বিদেশি নানান জাতের কুল এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আগে থেকেই কেউবা বসতবাড়ি ও তার আশপাশে রোপণ করে পরিবারের স্বাদ জুগিয়েছেন। তার পরও দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকদেরকে বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষে লাভবান হতে শুনে তিনি নিজেই বাগান সৃষ্টির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেন।
কুল বাগানের মালিক আব্দুস সালামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার কুল বাগানে দু’জন শ্রমিক নিয়োগ করে বাগান পরিচর্যা কাজে সার্বক্ষণিক রেখেছেন। এ ছাড়াও সেচ, পরিচর্যা, নিড়ানী, ও অন্যান্য কাজের জন্য বাড়তি শ্রমিক নিতে হয়। প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় হয় সেচ ও পরিচর্যায়। প্রথম বছরেই প্রায় ৩ লাখ টাকার বরই বিক্রি হয়। পরের বছর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ওই বছর কুলগাছে ফুল আসার পর প্রায় ৬ লাখ টাকায় বাগান চুক্তিতে বিক্রি করেছেন। বাগানের চতুর্দিকে লম্বু জাতের কাঠের গাছ রোপণ করায় ৫ বছর পরে সেই গাছ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় করেন। নিরাপত্তা ও বেড়ার বদলে বাগানের চতুর্দিকে লেবু চারা রোপণ করেছেন। সেখান থেকেও বাড়তি আয় হয় তার।
কুল পাকা শুরু হলে পাইকারি দরে প্রতিমণ কুল ব্যাপারীরা ক্রয় করে নিয়ে যায় বাগান থেকে। যা দিনাজপুর জেলাসহ আশপাশের জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা শহরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তার এ বাগান দেখে এ অঞ্চলে প্রায় জায়গায় বাগান গড়ে তুলছে কৃষকরা।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে ফল নিয়ে গবেষণা নিয়োজিত কৃষিবিদ সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ফলের আবাদ দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলাতে বিভিন্ন উন্নতজাতের কুলের চাষ বেরেছে। এখন এই জেলার কৃষকের বাগানের কুল জেলা চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধাণী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। বাড়ির আশপাশ পতিত জমি, পুকুর পাড় ও নদীর পধারে উচু জায়গায় কুলের বাগান সৃজনে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে। চলতি বছর জেলার ১৩টি উপজেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। যা বিগত দিনে কখনো হয়নি। এবারে আবহাওয়া ভালো থাকায় কুলের ভালো ফলন হয়েছে।
জেলার বিরল উপজেলায় সফল চাষি আব্দুস সালামের ৬ একর জমিতে কুলের সফল বাগান অর্জিত হয়েছে। তার বাগান সৃজনের পর থেকে কৃষি বিভাগ তাকে ভালো ফল পাওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছেন। তার বাগানের সফলতা দেখে ওই উপজেলার আরো ২১ একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বাগান হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন ফলের বাগানে কৃষক এবং বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং মানসম্পন্ন উন্নত জাতের চারা সরবরাহ করে বাগান সৃজনের সহযোগীতার কাজ চলমান রয়েছে।
প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে আপেল কুল চাষ হচ্ছে। অন্যান্য কুলের থেকে আপেল কুল এর চাহিদা বেশি। বাজারে প্রতি কেজি প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কৃষক ভাইদের জন্য কুল চাষ লাভবান, কুলগাছ খরা সহিষ্ণু।