ঢাকা, শুক্রবার ১৯, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৭:০৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেছেন তারেক রহমান আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান ডিএমপি কমিশনারের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আবারো আগুন-ভাঙচুর প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর-আগুন

আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, বিক্রি করি না: প্রধানমন্ত্রী

বাসস | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩৩ পিএম, ২৫ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

সম্প্রতি ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সমঝোতা স্মারক সই করেছেন সেটা নিয়ে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ বিক্রির অভিযোগ তুলেছেন। সেটার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি।  বরং যারা অভিযোগ তুলে তারাই বিক্রি হয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেলপথ ব্যবহারের সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে কেন সমালোচনা হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। ইউরোপে তো এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের কোনো বর্ডার নেই, তারা কি বিক্রি হয়ে গেছে? এতে বরং তাদের যোগাযোগ সুবিধা বেড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বেলা ১১টায় সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি দুই দফা ভারত সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বলে দেশে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, তারা বলুক বিক্রিটা কিসের মাপে হচ্ছে? মাপটা কিসের মাধ্যমে হচ্ছে? বাংলাদেশে স্বাধীন দেশ, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। সারাবিশ্বে একটিমাত্র মিত্র শক্তি ভারত, যারা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে আমাদের স্বাধীন করে দিয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই কোন দেশ যুদ্ধে সহযোগিতা করতে এলে তারা সেখানেই থেকে যায়। বিজয়ী হওয়ার পরও তারা দেশ ছাড়ে না। এরকম অসংখ্য নজির আমরা দেখেছি। অথচ ভারত আমাদের মিত্র হিসেবে যুদ্ধ করেছে এবং জাতির পিতার আহ্বানে আবার তারা ফিরেও গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাহলে বাংলাদেশ কীভাবে বিক্রি হয়? আমি বলবো যারাই বলছে দেশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, তারাই বরং দেশকে বিক্রি করতে চেয়েছে। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রেখেছি। এখন যারা দেশ বিক্রির কথা বলে, তারাই মুক্তিযদ্ধের সময় পাকিস্তানের দালালি করেছে। 
তিনি আরও বলেন, রেলপথ ব্যবহারের ফলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ হচ্ছে। ওইসব এলাকার মানুষের জন্য যোগাযোগ সহজ হচ্ছে। ইউরোপে তো বর্ডারই নেই, তারা কি তাহলে বিক্রি করে দিচ্ছে? প্রত্যেকটা দেশই তো স্বাধীন দেশ, তারা তো বিক্রি হয়নি। তাহলে সাউথ এশিয়ায় কেন এটা বাঁধা হয়ে থাকবে?

এ সময় মুক্তিযুদ্ধের ভারতের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সমালোচনা করে, তাদের জানা উচিত, একটি মাত্র মিত্রশক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে। বিশ্বে যারাই অন্য দেশকে স্বাধীনতায় সহযোগিতা করেছে, তারা কিন্তু ফেরত যায়নি। একমাত্র ভারত ব্যতিক্রম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরপরও যারা কথা বলে, বিক্রিটা হয় কীভাবে। তারা নিজেরাই ভারতের কাছে বিক্রি হয়। জিয়া এরশাদ খালেদা, ভারতবিরোধী কথা বলেছে আর ভারতে গিয়ে পা ধরে বসে ছিল, সেটা আমরা জানি।

সরকার দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বজায় রেখেই বন্ধুত্ব করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা ‍উন্মুক্ত করে দিলে দেশের মানুষই উপকৃত হবে। কারণ নানা কাজে তাদের ভারতে যেতে হয়। 
শেখ হাসিনা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অন্য দেশকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়। এতে দেশ বিক্রি হয়ে যায় না।  
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তার পানি চুক্তির বিষয়ে মমতা ব্যানার্জি চিঠি লিখেছেন তাদের প্রধানমন্ত্রীকে। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমার সাথে ভারতের সব দলের সাথে আমার সম্পর্ক ভালো। দল-মত-নির্বিশেষে সে দেশে সবার সাথে ভালো সম্পর্ক আছে আমার। তবে নদী ড্রেজিং নিয়ে মমতা ব্যানার্জির কথাকে আমি সমর্থন করি।
শেখ হাসিনা বলেছেন, পুরস্কার নিয়ে আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। এর জন্য লবিস্ট নিয়োগ করার টাকাও নেই আমার। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পর অনেক নোবেল জয়ী আমার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। ভেবে দেখেন, আমি আসার আগে কয়জন পার্বত্য চট্টগ্রাম যেতে পেরেছেন?
তিনি বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার ক্ষেত্রে আলাদা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। তাই এটা নিয়ে আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস রাজনৈতিক দল গঠন করতে চেয়েছিল। কিন্তু সে দল গঠন করতে পারে নাই। সে যদি গ্রামের মানুষকে এতো কিছুই দিয়ে থাকে, তাহলে তো সেই মানুষগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। কই, কেউ তো ঝাঁপিয়ে পড়েনি।
তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূসের সাথে হিংসা করার কি আছে। সে পারলে আমার সাথে বিতর্কে আসুক। আমেরিকায় যেভাবে ডিবেট হয়, সেভাবে ডিবেট করুক।

দেশনেত্রী বলেন, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। এই জায়গায় কেউ আসতে পারবে না। কারো সাথে জেলাসি করি না। আমি এর, ওর কাছে ধরনা দিয়ে বেড়াই না। দেশ বেচি না, দেশের স্বার্থও বেচি না।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু মানুষের টাকা পয়সার অনেক লোভ। এতোই লোভ যে, সে টাকা নিয়ে দেশে আর থাকতে পারে না। এতে তাদের লাভ কি হয় তাহলে?
ভারত সফরকে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে পাঁচটি নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত ও বিনিময় হয়। এছাড়া তিনটি নবায়িত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত ও বিনিময় এবং দুটি রূপকল্প ঘোষণা স্বাক্ষরিত ও বিনিময় হয়। ভবিষ্যত কাজের ক্ষেত্র হিসেবে ১৩টি যৌথ কার্যক্রমের ঘোষণা দেওয়া হয়।