ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৪:৫৬:৩১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

উত্তরা গণভবনের ‘নাগলিঙ্গম’ নজর কাড়ছে সকলের

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৬ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ রবিবার

উত্তরা গণভবনের ‘নাগলিঙ্গম’ নজর কাড়ছে সকলের

উত্তরা গণভবনের ‘নাগলিঙ্গম’ নজর কাড়ছে সকলের

নাটোরের উত্তরা গণভবনের দুর্লভ ফুল নাগলিঙ্গম ফুটেছে। দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে বাহারি রঙের ফুল। গাছের কাণ্ডে রাশি রাশি সুশোভিত সুরভিত নাগলিঙ্গম ফুল আকৃষ্ট করছে সকলকে। ফুলটির পরাগচক্র দেখতে অনেকটা সাপের ফণার মতো। আর এ কারণেই হয়তো এর নাম নাগলিঙ্গম।

জনশ্রুতি রয়েছে, এই গাছের ফুল ও ফল একান্তই নাগ-নাগিনীর সম্পদ। নাগলিঙ্গমের ফল হাতির প্রিয় খাবার। এজন্য কোথাও কোথাও এটি ‘হাতিফল’ নামেও পরিচিত। ভারতে এই ফুলের নাম ‘শিবলিঙ্গম’ ফুল নামে পরিচিত। এই ফুল সুগন্ধ ছড়ায়। যে কোনো সময় এই গাছের পাশ দিয়ে গেলেই এর তীব্র ঘ্রাণের মাদকতা মানুষকে মোহিত করে। 

বিরল প্রজাতির এই ফুলের সৌরভে রয়েছে গোলাপ আর পদ্মের সংমিশ্রণ। নয়নকাড়া ফুল আর বিচিত্র গোলাকার ফলের জন্য নাগলিঙ্গম সবার কাছে বাড়তি আকর্ষণের। এই ফুলের মনকাড়া সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হচ্ছেন অনেকেই। উত্তরা গণভবনের রাজপ্রাসাদের দক্ষিণে কয়েক গজ এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে নাগলিঙ্গমের।

নাটোর উত্তরা গণভবনের হিসাব সহায়ক নূর মোহম্মদ বলেন, দিঘাপতিয়া রাজার এই রাজপ্রাসাদের মূল ভবনের এক পাশে এই নাগলিঙ্গমের দুটি গাছ ছিল। এর একটি অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখনও একটি গাছ জীবিত। জেলা প্রশাসন উত্তরা গণভবন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পাওয়ার পর ধ্বংসপ্রায় অনেক কিছুই সংস্কার বা মৃতপ্রায় গাছ বাঁচিয়ে তোলার সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। 

নূর মোহম্মদ আরও জানান, দিঘাপতিয়া রাজা দয়ারাম রায়ের চতুর্থ বংশধর রাজা প্রমোদ নাথ রায় খুব সৈখিন প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তার সময়ে বিদেশ থেকে কিছু বিরল প্রজাতির ফুল ও ফলসহ ঔষধি গুণাগুণসম্পন্ন গাছ এনে রোপণ করা হয়। ধারণা করা হয়, তার সময়েই এই নাগলিঙ্গম রোপণ করা হয়েছিল। 

রাজার প্রিয় ফুলের তালিকায় ছিল বসন্ত আর গ্রীষ্মের এ ফুল। জনশ্রুতি রয়েছে, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান জঙ্গল থেকে দুটি নাগলিঙ্গম গাছ এনে এখানে রোপণ করা হয়। এর একটি এখনও জীবিত রয়েছে। প্রায় পঞ্চাশ ফুট উচ্চতার গাছটি যেন আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টায় আছে। কাণ্ড ফুঁড়ে ছড়ার মত বের হওয়া মঞ্জুরিতে রাশি রাশি ফুল ফুটে থাকে। 

এই গাছের গোড়া থেকে ও কাণ্ড জুড়ে ফুলের শাখা-প্রশাখাগুলো ছাতিমের মত বড় সবুজ গুচ্ছ পাতায় আচ্ছাদিত। সাপের ফনার মত ফুলের ৬টি পাঁপড়ি মাঝখানে শিবলিঙ্গ আকৃতির একটি গর্ভকে ঘিরে রাখে। অজানা এক মাদকতায় নাগলিঙ্গমের সৌরভ বহুদূর থেকে টানে।

ছয়টা পাঁপড়ি আচ্ছাদনে নজরকাড়া ফুলগুলো খুব সহজেই নজর কাড়ে। ফুলের রঙ কমলাও নয় বাদামীও নয়, বরং এ দু’য়ের মিশ্রণের পাপড়িগুলোতে আবার বেগুনী রঙের বর্ণচ্ছটা। আর পরাগচক্রে সাদা বেগুনী হলুদের সমাহার। সাপ বা নাগিনীর মত ফণা তোলা পরাগচক্রের কারণেই হয়তো ফুলের নামকরণ ‘নাগলিঙ্গম’। 

নাগিনীর আমন্ত্রণে অভিসার পিয়াসী নাগ যেমন করে ছুটে আসে, তেমনি যে কোন দর্শনার্থীকে কাছে টানে নাগলিঙ্গম ফুল। গাছে ফুল ধরার পর বেলের মতো গোল গোল ফল ধরে। এগুলো হাতির খুবই প্রিয় খাবার। এজন্য এর অন্য নাম হাতির জোলাপ গাছ। 

লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন দর্শনার্থীদের প্রবেশাধীকার ছিলনা। দীর্ঘদিন মানুষের পদচারণা না থাকায় গণভবনের বিভিন্ন গাছ ফুল ও ফলে ভরে উঠেছে। সম্প্রতি দর্শনার্থীদের জন্য গণভবন উন্মুক্ত করে দিলে আবারও মানুষের পদচারণা ও কোলাহল বেড়ে গেছে। বর্ষার ফুল নাগলিঙ্গম ফুটে থাকায় সহজেই নজর কাড়ছে অনেকের। তাই তারা ছুটে যাচ্ছেন এই গাছের কাছে। মনকাড়া সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হচ্ছেন তারা।