ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৮:০৭:৫১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

করোনায় প্রাণ হারাবে ১৪-৩৭ লাখ মানুষ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:১৭ পিএম, ৫ জুলাই ২০২০ রবিবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

বিশ্বে এখনও করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরুই হয়নি, কারণ গোটা বিশ্ব এখনও এর প্রথম ধাক্কাই সামলে নিতে পারেনি। করোনা মহামারীতে বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত এক কোটি ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৭০ লোক সংক্রামিত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯১ জন। তবে করোনার এই তাণ্ডব নাকি আরও চলবে! ২০২১ সালে এর প্রকোপে শামিল হবে ২০ থেকে ৬০ কোটি মানুষ, যার মধ্যে এই পৃথিবী ত্যাগ করবেন ১৪ থেকে ৩৭ লাখ মানুষ। শনিবার (৪ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে দ্য ইকোনোমিস্ট।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়- প্রতিরোধ করার সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও করোনা মহামারীটি যেভাবে দ্রুত গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, তা অবাক করে দেয়। এ নিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি কভার স্টোরি করেছিল ইকোনোমিস্ট, যেখানে বলা হয় যে- এ দিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২১১৫ জনের দেহে করোনা শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আর ২৮ জুন একদিনে সেই সংখ্যা গিয়ে পৌঁছে ১ লাখ ৯০ হাজারে। অর্থাৎ সেদিন প্রতি ৯০ মিনিটে যত জন নতুন শনাক্তের খবর পাওয়া গেছে তা ১ ফেব্রুয়ারির মোট শনাক্তের সমান।

ইকোনোমিস্ট বলছে- বিশ্বে এখনও করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরুই হয়নি, কারণ গোটা বিশ্ব এখনও এর প্রথম ধাক্কাই সামলে নিতে পারেনি। এখন পর্যন্ত এক কোটিরও বেশি লোক এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এটি ছড়িয়ে পড়েছে, যদিও তুর্কমেনিস্তান, উত্তর কোরিয়া, এন্টার্কটিকা এগুলোর বাইরে। এদিকে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের মতো কয়েকটি দেশ দ্রুতই ভাইরাসটিকে থামিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে লাতিন আমেরিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে ভাইরাসটি এখনও তার তাণ্ডব চালাচ্ছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ মহামারীটির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে; আর আফ্রিকার বেশিরভাগ অঞ্চলে এটি রয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে। আর এ দুয়ের মাঝে অবস্থান করছে ইউরোপ।

তবে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থাটি এখনও আসার অপেক্ষায় বলে সতর্ক করেছে দ্য ইকোনোমিস্ট। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির একটি দল ৮৪টি দেশে চালানো তাদের এক গবেষণার ভিত্তিতে বলছে যে- প্রতিটি নতুন শনাক্তের বিপরীতে আক্রান্ত ১২ জনই অশনাক্ত থেকে যাচ্ছে। আর প্রতি দুটি মৃত্যুর বিপরীতে তৃতীয়জনের অন্য কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।

গবেষণা দলটি বলছে, কোনও চিকিৎসা অগ্রগতি বা প্রতিষেধক ব্যতীত ২০২১ সালের মধ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ থেকে ৬০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। আর এই সময়ে ১৪ থেকে ৩৭ লাখ মানুষ প্রাণ হারাবে। তারপরেও তখন বিশ্বের ৯০% এরও বেশি মানুষ সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকবে। যদি না একে দ্রুতই আটকানো সম্ভব হয়।

এই ভাইরাসটি কতটা ছড়াবে তা নির্ভর করে মূলত সামাজিক নিয়ন্ত্রণের ওপর। করোনা নিয়ন্ত্রণ করা যায় মূলত তিনটি ধাপে- টেস্টিং, ট্রেসিং (শনাক্ত) ও আইসোলেশন (পৃথকীকরণ)। এগুলো ব্যর্থ হলে সবশেষ ধাপ হলো- লকডাউন। এছাড়া স্বাস্থ্য সেবার খরচটাও থাকতে হবে জনগণের সাধ্যসীমার মধ্যেই। কারণ, সুচিকিৎসার কারণেই ব্রিটেনে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি রোগীর সংখ্যা মার্চের ১২ শতাংশ মে মাসে নেমে ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, চলমান এ মহামারি পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে অর্থনীতিও। যদিও এখন পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা বেশ নাজুক। এ অবস্থায় চলতি বছরে ৩৯টি দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলেই জানিয়েছে জেপি মর্গান ব্যাংক।

এহেন পরিস্থিতির মধ্যেই বেশকিছু প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছে। চীনে স্টারবাকস ‘সংস্পর্শহীন’ বিক্রয় পদ্ধতি লক্ষ্য করা গেছে, যার ফলে কফি শপগুলোতে ভীড় অনেকটাই কমে গেছে। বিভিন্ন কলকারখানায় কর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে এবং কর্মঘণ্টা পুনর্বণ্টন করে পুরোদমে কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।

আসলে, উপযুক্ত ওষুধ বা প্রতিষেধক ছাড়া এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের প্রায় পুরোটাই নির্ভর করে মানুষের সামাজিক আচরণের ওপর। সংক্রমণ রোধে সাহায্য করলেও ইউরোপ-আমেরিকার অনেকেই মাস্ক পরতে রাজি নয়। হাতধোয়া ভাইরাস নিধন করে, কিন্তু অনেকেই পুরোনো অভ্যাস ছাড়তে পারছে না। মহামারির মধ্যে পার্টি করা বিপজ্জনক, কিন্তু তরুণদের তাতে থোড়াই কেয়ার। তার ওপর, সময় যত যাচ্ছে মানুষের অর্থের সংকটও তত বাড়ছে। ফলে কাজের প্রয়োজনেই বাইরে বের হতে হচ্ছে অনেককেই।

মূল সমস্যাটা হচ্ছে- সামাজিক রীতিনীতি বদলে দেয়াটা সহজ ব্যাপার নয়। এজন্য দরকার জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে অবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা এবং বিশ্বাস স্থাপন। যদিও অনেকেই নিজ দেশের নেতাদের বিশ্বাস করেন না। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রাজিল, ইরানের মতো দেশগুলোর প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীরা করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিকে হেলাফেলা করেছেন, ভুলভাল পরামর্শ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন তারা। অনেকের কাছেই দেশের চেয়ে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষাই বড় বলে মনে হয়েছে।

ইকোনোমিস্টের এই প্রতিবেদনটির সারকথা হলো- মহামারী এই করোনা ভাইরাস শিগগিরই যাচ্ছে না। আরও বহু মানুষ এতে আক্রান্ত হবেন, মারাও যাবেন অনেকে। তবে মনে রাখতে হবে, আপনার হয়তো করোনার নিয়ে আগ্রহ কমে গেছে, কিন্তু আপনার ওপর করোনার আগ্রহ একদমই কমেনি। -দ্য ইকোনোমিস্ট।

-জেডসি