ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ১৫:৩৪:৪৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন, ঘুমের মধ্যে মা-ছেলের মৃত্যু এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী আজ থেকে স্কুল কলেজ খোলা সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সিলেট ৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি, মাছ-মাংসে আগুন আরও ২ দিন দাবদাহের পূর্বাভাস

কাদের সিদ্দিকীর ‘কাণ্ডে’ ক্ষুব্ধ মহিলা পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:২৭ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২৩ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

টাঙ্গাইলের সখিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে নারী ইউএনর মাধ্যমে গার্ড অব অনার দেওয়ার সময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বাধা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

রোববার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর সই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সখিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খানের মৃত্যুতে নারী ইউএনওর মাধ্যমে গার্ড অব অনার দিতে গেলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বাধা দেন। সেসময় তিনি একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে গার্ড অব অনার দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেন। মহিলা পরিষদ একজন প্রবীণ রাজনীতিকের এমন অগ্রহণযোগ্য, সংবিধান পরিপন্থি, নারীর মানবাধিকার পরিপন্থি বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানাচ্ছে।’

‘একজন রাজনীতিকের এ ধরনের আচরণ নারীর জন্য যেমন অবমাননাকর ঠিক একইভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও জাতির জন্যও অপমানজনক। কেননা একটি স্বাধীন সার্বভৌম নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।’

‘বাংলাদেশে নারী ইউএনও বলে কোনো পদ নেই। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে নারী-পুরুষ বিভাজন সংবিধান বিরোধী। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পদাধিকার বলে যাদের ওপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ার মহান দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তারা সেই রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করবেন এটাই প্রত্যাশিত।’

‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারীর ক্ষমতায়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এই ধরনের যেকোনো কূটকৌশল ও বিভিন্ন অজুহাতকে প্রতিহত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, সখীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খানের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়ার সময় নারী ইউএনওকে বাধা দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের প্রস্তুতির সময় সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খান শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে সখীপুরের নিজ বাড়িতে মারা যান। এরপর শনিবার দুপুরে আব্দুল হামিদ খানের জানাজার নামাজের আগে গার্ড অব অনার দিতে সেখানে উপস্থিত হন সখীপুরের নারী ইউএনও ফারজানা আলম। এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তাকে বাধা দেন। কাদের সিদ্দিকী একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে দিয়ে গার্ড অব অনার দিতে বলেন। এরপর ইউএনও চলে গেলে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে অবশ্য কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনওর নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার নামাজের আগে এক বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, কোনো মহিলার গার্ড অব অনার দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার মরদেহের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন। যদি এখন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে লাথি মেরে ঢাকায় পাঠাতাম।

এ সময় তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার কারণে এই ইউএনওকে রোববারের মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘আব্দুল হামিদ খান একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দেশ স্বাধীন হলেও দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ হয় নেই, মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পায়নি। আমি খুবই মর্মাহত পুলিশের গার্ড অব অনার নিয়ে। রাত বারোটার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেও আজ বেলা দুইটার মধ্যেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে কেউ আসেননি। মেয়ে যত বড়ই হোক, মেয়েদের জানাজায় শামিল হওয়ার সুযোগ নেই।’