ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:০২:৪৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

চাকসু নির্বাচন : ভিপি পদে লড়বেন না কোনো নারী

চবি প্রতিনিধি | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৩০ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে অংশ নিচ্ছেন না কোনো নারী শিক্ষার্থী। তবে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১ জন এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে লড়বেন ২ জন। এছাড়া চাকসু নির্বাচনে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণও কম। ঘোষিত ১০ প্যানেলের শীর্ষ তিন পদে নির্বাচন করা ৩০ প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৪ জন বিজ্ঞানের বিভাগগুলোতে পড়ুয়া। শতাংশের হিসাবে এটি মাত্র ১৩।

তারা হলেন-ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ‘চাকসু ফর র‌্যাপিড চেঞ্জ’র ভিপি প্রার্থী ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তামজিদ উদ্দিন। বিভিন্ন কো-কারিকুলাম সংগঠনে যুক্ত নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত অরাজনৈতিক প্যানেল ‘সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য’র জিএস প্রার্থী কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন এবং এজিএস প্রার্থী উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাঈদ মুহাম্মদ মুশফিক হাসান। স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি ও ছাত্র ফেডারেশনের স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট থেকে জিএস পদে লড়ছেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের চৌধুরী তাসনিম জাহান শ্রাবণ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট বেশির ভাগ বিভাগগুলোতে পরীক্ষা চলছে। ক্লাস, পরীক্ষা, গবেষণায় তাদের অনেক সময় ব্যয় হয়। এছাড়া রাজনীতিতেও তাদের অংশগ্রহণ কম। আর নারী শিক্ষার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কিছুটা কম আগ্রহ দেখা গেছে।

অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল : ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার দুপুরে বুদ্ধিজীবী চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়। প্যানেলে ভিপি পদে লড়বেন মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম, জিএস পদে মুহাম্মদ ইয়াছিন উদ্দীন সাকিব এবং এজিএস পদে শহীদুল ইসলাম শাহেদ।

অন্য সম্পাদকীয় পদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক খায়রুল আমীন হৃদয়, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক মুহাম্মদ ফয়সাল হোসেন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ এহছানুল হক, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ ইমরান হোসেন, দপ্তর সম্পাদক এসএম আলী হোসাইন জিসান, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ ইব্রাহীম রুবেল, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা, গবেষণা ও উদ্ভাবনবিষয়ক সম্পাদক মুরিদুল হাসান মুরাদ, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা সুরাইয়া হোসাইন।

ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে জান্নাতুন নাঈম খুকি, সহ-ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মিফতাহুল জান্নাত, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ তারেক হাসান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ জহির উদ্দীন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক জুলহাসনাঈন সায়েম, যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক ইসমাইল ফাহিম, সহ-যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ আল-মামুন, আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ ইমাম হোসাইন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে মোহাইমিনুল কবির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাহী সদস্য পদে দৌলতুল ইসলাম সাকলাইন, তাউছিফুর রহমান, হানিফ ইসলাম, মুহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এবং মুহাম্মদ সাব্বির রহমান নির্বাচনে অংশ নেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম। তিনি চবির নানামুখী সমস্যা তুলে ধরেন। সন্ত্রাস-দখলদারত্ব-লেজুড়বৃত্তিক সহিংস ছাত্র রাজনীতির পরিবর্তে অহিংস ছাত্র রাজনীতি চর্চা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৩১টি দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে-ক্যাম্পাসে সুরক্ষা নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, প্রতিটি পয়েন্টে নিজস্ব সিকিউরিটি বুথ বসানো, নারী শিক্ষার্থী, প্রান্তিক অঞ্চল ও ভিন্নধর্মী শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, মেয়েদের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শাটল বাস বা পরিবহণ সেবার পরিমাণ বৃদ্ধি ইত্যাদি।

এ সময় অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্যের মুহাম্মদ ইয়াছিন উদ্দীন সাকিব বলেন, বিগত দিনগুলোতে অনেক শিক্ষার্থীকে শুধু রাজনৈতিক মতভিন্নতার কারণে ব্যাপক লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আমরা সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসে একটি সহাবস্থানের রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই।

‘ভয়েস অব সিইউ’ নামে স্বতন্ত্র প্যানেল : ভিপি-জিএস-এজিএস পদ ছাড়াই ‘ভয়েস অব সিইউ’ নামে স্বতন্ত্র সম্পাদকীয় প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। বিকাল ৪টায় চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ‘কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটিতে বিশ্বাসী’ স্লোগানে এ প্যানেল ঘোষণা করা হয়। এ সময় বলা হয়, রাজনৈতিক পরিচয় নেই এমন, সংশ্লিষ্ট পদে দক্ষ ও সৎ-এমন শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এ প্যানেলে।

প্যানেলে দপ্তর সম্পাদক পদে লড়াই করবেন মুসলিমা খানম আঁখি, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে ইংরেজি বিভাগের সানজিদা আলম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পদে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জসিম উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের রবিউল হাসান শাফি, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শাহরিয়ান আহমেদ অনিম। সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ সাদেক, যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক, সহ-যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু নাসিম, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে ইসলামিক স্টাডিজ শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন এবং নির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করবেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতেখার হোসাইন।

প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় : চাকসু, হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিসহ সামগ্রিকবিষয় নিয়ে প্রার্থী ও আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আজ মতবিনিময় করবে প্রশাসন। দুপুর ২টায় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনার ও সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, আমরা চাই সবাইকে নিয়ে সুস্থ নির্বাচন করতে। যথাসময়ে উপস্থিত থেকে সবাই মতামত দেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

এক দশক পর অনার বোর্ডে মান্নার নাম : চাকসু অনার বোর্ডে সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম দীর্ঘ এক দশক পর আবারও দৃশ্যমান হলো। ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার নাম কালো কালি দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নামটি পুনর্লিখন করে অনার বোর্ডে প্রকাশ করেছে।

তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৩০-৪০ নেতাকর্মী চাকসু ভবনের তৃতীয় তলায় থাকা অনার বোর্ডে মান্নার নাম মুছে দেন। একই দিনে চাকসুর সংগ্রহশালায় ঝুলানো তার ছবিও খুলে ফেলা হয় এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিলেও মান্নার নাম তখনো ঢাকা ছিল। এমনকি এ বছরের ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার সময়ও অনার বোর্ডে তার নাম দেখা যায়নি। চাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি ঘিরে বিষয়টি ফের আলোচনায় আসে। চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. জাহিদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বিষয়টি আমরা অবগত হওয়ার পরপরই নামটি পুনরায় লিখে দিয়েছি।

নিজের নাম ফের অনার বোর্ডে লেখা প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গণমাধ্যম এবং অন্যান্য যারা এটা তুলে ধরতে সংগ্রাম করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিগত প্রশাসনের পরোক্ষ মদদে আমার নামটি মুছে ফেলা হয়েছিল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বিষয়কে তারা মুছে ফেলতে চেয়েছিল। আজকে সত্যটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।