ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ১৭:২৮:১৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

ড্যান্সিং প্লেগ, নাচতে নাচতেই মারা গেলেন অগণিত মানুষ

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:১৭ এএম, ১৫ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বিশ্ব গত দুই বছর ধরে করোনার দাপট দেখছে। বিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে একটি ভাইরাস যে মানুষের জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত করে দিতে পারে তা ছিল কল্পনাতীত।
১৫১৮ সালে এমনই এক বিচিত্র ‘সংক্রামক’ রোগের মুখোমুখি হয় মানুষ। অদ্ভুত সেই রোগের নাম ‘ডান্সিং প্লেগ’। মূলত নারীদের মধ্যেই এই রোগ দেখা গিয়েছিল। রোম সাম্রাজ্যের আলসেসের (বর্তমানে ফ্রান্স) স্ট্রাসবুর্গ শহরে ছড়িয়ে পড়েছিল এই অসুখ।

এই রোগের লক্ষণ হলো, এক বার কেউ নাচ শুরু করলে দিনভর নাচতে থাকে। তার পর অন্যদের মধ্যে সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ে এই নাচের ইচ্ছে। শহরে প্রায় ৫০ থেকে ৪০০ নারী রাস্তায় দিনভর নাচতে থাকেন। নাচতে নাচতে একাধিক নারী মারা গিয়েছেন, এমন দাবিও করেন কিছু ইতিহাসবিদ। তবে এই বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে।

তবে এমন রোগ যে স্ট্রাসবুর্গ শহরে ছড়িয়ে পড়েছিল তার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। সেই সময়ের চিকিৎসকদের নথি, স্থানীয় সংবাদপত্র ও শহর প্রশাসনের নথি থেকে এর স্বপক্ষে প্রমাণ মেলে। সেই সব তথ্য থেকে জানা যায় ১৫১৮ সালে মূলত নারীদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। ঐতিহাসিক নথি থেকে জানা যায়,  ১৫১৮ সালের জুলাই মাসে এক নারী হঠাৎ নাচতে শুরু করেন। তার পর একে একে অন্য নারীরা তার সঙ্গে যোগ দিয়ে নাচতে থাকেন।

যিনি প্রথম নাচতে শুরু করেন তার নাম ফ্রাউ ট্রফিয়া। তবে এই নাম নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। তার সঙ্গে যারা নাচতে শুরু করেন তাদের সংখ্যা নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। তবে এমনটা নতুন নয়। ১১ শতকের মধ্যযুগে এমন রোগ নজরে আসে কোলবিগ স্যাক্সনিতে। তবে তখন তাকে ‘শয়তানের’ প্রভাব বা ‘ঈশ্বরের শাস্তি’ বলে মনে করা হয়েছিল।


১৫ শতকে এক নারীকে ট্যারান্টুলা কামড়ে দেয়। তার বিষে খিঁচুনি দেখা দেয় নারীর মধ্যে। যা কিছুটা নাচের মতোই ছিল। প্রতিকার হিসেবে এক ধরনের মৃদু সঙ্গীত বাজানো হয়েছিল বলে ঐতিহাসিক নথি থেকে জানা যায়। এই গণনাচের কারণ হিসেবে দু’টি ব্যাখ্যা ওঠে আসে। প্রথমটি হলো, ছত্রাকের বিষক্রিয়া। এই ছাত্রকের গুঁড়া পাউরুটির মধ্যে সে সময় ব্যবহার করা হত।

মেডিক্যাল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এ লেখক জন ওয়ালার যুক্তি, এই তত্ত্বটি ঠিক নয়। কারণ কোনো ছত্রাকের বিষক্রিয়ার প্রভাবে একসঙ্গে এত মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে নাচতে পারেন না। অন্য ব্যাখ্যা হলো, এটি হলো গণ হিস্টিরিয়া। এ ক্ষেত্রে এক জনের উদ্ভট আচরণ দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ মানসিক চাপের কারণে এমনটা হতে পারে বলে মত চিকিৎসকদের একাংশের। মনে করা হয় আলসেসের বাসিন্দারা সেই সময় দীর্ঘ মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন।

এই গণ হিস্টিরিয়ার নজির রয়েছে গণেশের দুধ খাওয়ানোর ঘটনাতেও। সেই সময় ভারতের মানুষ বাটি বাটি দুধ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মন্দিরে। যুক্তি, পাল্টা যুক্তি... ডান্সিং প্লেগ নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। বিতর্ক রয়েছে রোগের কারণ নিয়েও। ৭০০ বছর পরেও অদ্ভুত এই রোগ নিয়ে, এবং এই রোগের নিরাময় নিয়ে রয়ে গিয়েছে নানা প্রশ্ন।

সূত্র: আনন্দবাজার