দেশে করোনাকালে বেড়ে গেছে শিশুশ্রম
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৩:৫৯ পিএম, ১২ জুন ২০২১ শনিবার
ফাইল ছবি।
দেশে করোনাকালে অভাবের বাড়নায় বেড়ে গেছে শিশুশ্রম। করোনাভাইরাস মহামারি ও লকডাউনের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট গত এক বছরে শিশুদের ঠেলে দিয়েছে শ্রমবাজারের দিকে। সংসার বাঁচাতে শিশুরা বাধ্য হচ্ছে কাজ করতে।
পরিবহন সেক্টরে শিশু শ্রম: গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশে লেগুনার অভাব নেই। এখান থেকেই লেগুনাগুলো ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় যায়। গাবতলী থেকে মহাখালী যাওয়ার অসংখ্য লেগুনা এখানে ভিড় করে। লাগে ২০ টাকা। দেখা যায়, প্রত্যেক লেগুনাতেই হেল্পারগুলোর বয়স ১২ বছরের কম। এমনকি লেগুনার অনেক ড্রাইভারের বয়সও ১৮ বছরের কম। এরকমই একজনের নাম তৌফিক। বয়স ১১ থেকে ১২ বছর। লেগুনার সামনে দাড়িয়ে অবিরাম বলেই চলছে, মহাখালী, শ্যামরী, আগারগাঁও। সব যাত্রী উঠার পর মহাখালী গিয়ে কথা হল তৌফিকের সাথে। মাত্র ৯ বছর বয়সে ঢাকায় এসেছে তৌফিক। ছোটবেলায় বাবা মাকে হারিয়ে চাচার বাসায় বড়হয় সে। পরে তার চাচা তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। সে সময় থেকেই ডাকসাইটে হেল্পার সে। প্রতিদিন ভোর ৫.৩০ থেকে শুরু করে রাত ৯ টা পর্যন্ত তৌফিকের অবিরত চলতে থাকা। এতটুকু বয়সের শিশুর কি অবিরত পরিশ্রম। অনেক সময় দেখা যায়,সন্ধ্যার পর ক্লান্তিতে তাদের চোখে ঘুম ভিড় করে। লেগুনার এক সাইডে হ্যান্ডেল ধরে দাড়িয়ে থাকে পলাশেরা। যতই ক্লান্তি আসুক, ঘুমালেই মহাবিপদ। আবার অনেক সময় লেগুনার পাদানীতে তিন চারজন ঝুলতে ঝুলতে যায়, তখন তৌফিককে আরও সতর্ক থাকতে হয়। এভাবেই তৌফিকের মত শিশুরা সবসময় ঝুকিতে থাকে।
গার্মেন্টস সেক্টরে শিশু শ্রম: বাংলাদেশের আয়ের একটা বড় খাত গার্মেন্টস সেক্টর। এ সেক্টরে আগে অনেক শিশু শ্রমিক দেখা গেলেও কঠোর শ্রম আইন আর বায়ারের কোড অফ কন্ডাক্ট এর ফলে শিশু শ্রম অনেকটাই কমে এসেছে। তবে বড় বড় কারখানায় এর প্রবণতা কমলেও এখনও অনেক ফ্যাক্টরী আছে যেখানে শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। যদিও শ্রম আইনে স্পষ্ট ভাবে লেখা আছে ১৮ বছরের নিচে কোন শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। বিদেশি বায়াররা তাদের কোড অফ কন্ডাক্টেও শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করেছেন। বিএসসিআই অডিটের সময়ও বিষয়টি খেয়াল রাখা হয়। তবে বাংলাদেশে এখনও এরকম অনেক ফ্যাক্টরী আছে, যেগুলোতে বিএসসিআই অডিট করা হয়নি। সেসব ফ্যাক্টরীতে নিয়ম না মেনে শিশু শ্রমিক নেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকরা কাজের দরখাস্ত দেওয়ার সময় বয়স বাড়িয়ে জন্মনিবন্ধন করে। ফলে এক্ষেত্রেও ফ্যাক্টরীর কিছু করার থাকেনা। আশুলিয়া, গাজীপুরের দিকে অনেক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী আছে। সাভারের ইপিজেডের ভিতরে যে সব ফ্যাক্টরী আছে সেগুলো কম্পায়েন্স নিয়ম অনুসারে চললেও এর আশেপাশে অনেক ফ্যাক্টরীই কোন নিয়মের ধার ধারেনা। ইউনিকের একটি ক্যাপ ফ্যাক্টরীতে সুইং সেকশনে কাজ করা শিশু শ্রমিক আফজাল জানায় সে ১২ বছর থেকেই সুইং বিভাগের হেল্পার। অন্যান্য শ্রমিকের তুলনায় তাকে মাত্র দেওয়া হচ্ছে ৪৮০০ টাকা। এরকম অনেক ফ্যাক্টরীতেও একই অবস্থা। এ বিষয়ে শ্রম অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আহসান জামিল বলেন, আমরা সব ফ্যাক্টরীতে একটি নীতির ও নিয়মের মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। এখন বেশিরভাগ ফ্যাক্টরীতেই শিশু শ্রমিক নেওয়া হয়না। তারপরেও এরকম থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যান্য ক্ষেত্রে শিশু শ্রম: বাংলাদেশের বিভিন্ন দোকানে অনেক শিশুকে দেখা যায়। শুধুমাত্র মাসিক নামমাত্র বেতনে এসব শিশুরা কাজ করে। আশুলিয়ার লেপতোষকের একটি দোকানে কাজ করে সোহাগ। বাড়ি জামালপুর। বয়স সর্বোচ্চ নয়। সকাল ৬টায় নিজে দোকান খুলে রাত ১০ টায় বন্ধ করে। থাকে দোকানের মালিক আব্দুর রহমানের কাছে। দোকানের পিছনেই একটা ছোট রুম। সেখানেই থাকেন দুজন। সোহাগকে গ্রামের ভাগ্নে হিসেবে পরিচয় দিলেন। সোহাগ মাসে পায় ২০০০ টাকা। থাকা খাওয়া ফ্রি। সারাদিন কাজ করতে করতে সোহাগের দিন চলে যায়। দোকান গুছিয়ে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাতে বেজে যায় রাত ১১ টা। এরকম অনেক শিশু বিভন্ন দোকানে পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
এভাবে দেশের সর্বত্রই শ্রমের শিকার হচ্ছে শিশুরা। যেখানে জীবনেরই নিরাপত্তা নেই, সেখানে এ প্রজন্মের জন্য নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য কিভাবে নিশ্চিত হতে পারে। শিশুশ্রম বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এছাড়াও সর্বত্র জনসচেতনতা সৃষ্টির উপরও জোর দেওয়া জরুরী বলে মনে করেন তারা।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিকশিত বাংলাদেশের পরিচালক পারভীন খান উইমেননিউজ২৪.কম-কে বলেন, শিশুশ্রম বন্ধে আইন প্রয়োগ করা জরুরী। শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইন ও নীতিমালা গৃহীত হয়েছে। তবে জাতীয় আইন ও নীতিমালার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সঙ্গে অসংগতিতে কিছু ফাঁক রয়ে গেছে। এই ফাঁকটি ঠিক করতে হবে।
তিনি বলেন, যে আইন আছে তাতে শিশুদের নিয়োগের জন্য শাস্তির কোনো বিধান নেই। নিয়োগকারীরা এই সুবিধাটি নিয়ে থাকে। এছাড়াও শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইন ও নীতিমালা কার্যকর করার ক্ষেত্রে রয়েছে বিশাল ব্যবধান। এগুলোর দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।
- হঠাৎ নো মেকআপ লুকে জয়া আহসান!
- হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
- কেরানীগঞ্জে ভবনে আগুন
- ব্যাচেলর পয়েন্টে যে চরিত্রে দেখা দিলেন স্পর্শিয়া
- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে প্রকাশ্য হুমকি
- লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি শুরু ১৭ ডিসেম্বর
- এমিনেমের অশালীন প্রস্তাব ফাঁস করলেন টাইটানিকের নায়িকা
- ‘ডাক্তার ও নার্সদের রুমকে ‘পার্টি অফিস’ বানাবেন না’
- পাকিস্তানের কাছে শেষ ম্যাচ হেরে সিরিজও হারল বাংলাদেশ
- ফের নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদীকে গ্রেফতার করল ইরান
- হাসপাতালে ভিড় না করার আহ্বান তাসনিম জারার
- মেট্রোরেল চলাচল শুরু
- রাউটার যেখানে লাগালে ওয়াই-ফাইয়ের সেরা স্পিড পাবেন
- শীতে পিরিয়ডের সময় যে ফলগুলো খাবেন না
- নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা
- ত্বকে বয়সের ছাপ? দূর করবে এই ৪ পানীয়
- মেট্রোরেলের ভ্যাট প্রত্যাহার
- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট ১২ ফেব্রুয়ারি
- আপেল নিয়ে কী ইঙ্গিত দিলেন জয়া আহসান
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি: মেডিকেল বোর্ড
- পার্লামেন্ট ভেঙে দিল থাইল্যান্ড
- ছবি নামিয়ে ফেলায় অপমানিত বোধ করেছি: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
- তফসিল ঘোষণা: নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
- ওপেনএআই`র অ্যাপ সাজেশন নিয়ে বিতর্ক
- ৯ দিনের ব্যবধানে বাড়ল সোনার দাম
- গর্ত থেকে উদ্ধার হওয়া শিশু সাজিদ মারা গেছে
- রাউটার যেখানে লাগালে ওয়াই-ফাইয়ের সেরা স্পিড পাবেন
- নারী সাংবাদিককে চোখ মেরে বিতর্কে পাক আইএসপিআর প্রধান
- সচিবালয় থেকে ৪ জনকে নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে
- নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা

