ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ১২:০৬:৩২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাক-সবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি শিশু হাসপাতালের আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে

নদীর বুকে শতবর্ষী ভাসমান হাট

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:২৩ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

কুয়াশা মাখা ভোরে নদীর বুকে বসে ভাসমান হাট। কৃষকের ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় চলে শাকসবজির কেনাবেচা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে কেনাবেচা। তবে সকাল ১০টা পর্যন্ত জমজমাট থাকে এ হাট। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা বাজার সংলগ্ন বেলুয়া নদীতে সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার বসে এই ভাসমান হাট।

পিরোজপুর জেলা সদর থেকে ৪৪ কিলেমিটার দূরে বেলুয়া নদী। বৈঠাকাটা বাজার ও বেলুয়া মুগারঝোর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এই নদী। শত বছর ধরে বেলুয়া নদীর আশপাশের ২০ থেকে ২৫ গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শাকসবজিসহ ধান ও চাল কেনাবেচা করছেন এ হাটে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে সাত সকালে নদীর বুকে সারি সারি কৃষিপণ্য বোঝাই ডিঙি নৌকা এসে ভিড় করছে। নদীতে নোঙর করা আছে বড় বড় ট্রলার। ডিঙি নৌকা থেকে দরদাম করে হরেক রকম শাকসবজি কিনে ট্রলারে তুলছেন ফড়িয়ারা। ছোট ছোট ঢেউয়ের তালে চলছে হাটের কেনাবেচা। হাটে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, টমেটো, বেগুন, কাঁচামরিচ, আলু, মিষ্টিকুমড়া, শিম, লাউ, করলা, কচু ও নানা জাতের শাকসবজি নিয়ে কৃষকরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দর হাঁকছেন। সবজির পাশাপাশি হাটে বিক্রি হয় বিভিন্ন সবজি ও ফুলের চারা। এছাড়া হাটের অন্য এক পাশে রয়েছে ধান, চাল, মুড়ি ও নারিকেল বিক্রির স্থান।

স্থানীয়রা জানান, খাল-বিল বেষ্টিত নাজিরপুর উপজেলার অধিকাংশ গ্রামে এক সময়ে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। তখন নৌপথে চলাচল ও পণ্য পরিবহন করা হতো। শত বছর আগে স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য নৌকায় করে বেলুয়া নদীতে নিয়ে আসতেন। আবার ক্রেতারা নৌকা থেকে পণ্য কিনে নৌকায় করে চলে যেতেন। নৌকায় বসে এভাবে চলত কৃষিপণ্যের কেনাবেচা।

এরপর মুগারঝোর গ্রামের সেকান্দার আলী সরদার, প্রয়াত কেরামত আলী, দলিল উদ্দিন সরদার ও আবুল কাশেম তালুকদার এ বৈঠাকাটা বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। ধীরে ধীরে হাটের ব্যাপ্তি বেড়েছে। কয়েক দশক ধরে এ হাটে দূর-দূরন্ত থেকে ট্রলার নিয়ে আসছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তারা এখান থেকে কৃষিপণ্য ও শাক-সবজির চারা কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন। সবজির মৌসুমে এ হাটে কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। এখান থেকে সবজি দেশের বিভিন্ন শহরে যায়।

উপজেলার মুগারঝোর গ্রামের কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, নিজের ক্ষেতের চাষ করা সবজি নৌকায় করে হাটে নিয়ে এসেছি। আমাদের গ্রামের প্রত্যেক কৃষকই নিজে ক্ষেতে শীতকালীন সবজি চাষ করেন। এরপর তার চাষ করা সবজি বেলুয়া নদীর ভাসমান হাটে বিক্রি করেন। আশপাশের গ্রামের কৃষকরাও এখানে পণ্য বিক্রি করতে আসেন। এখান থেকে কৃষিপণ্য কিনে পাইকাররা রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলা, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন।


বৈঠকাটা বাজার কমিটির সভাপতি মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, ভাসমান হাটটি একশো বছরের পুরোনো। এ অঞ্চলের শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ কৃষক। তাদের উৎপাদিত পণ্য এই ভাসমান হাটে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করেন। এ হাটের কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়। সারাবছর ধরে হাটে কেনাবেচা হলেও শীত মৌসুমে হাটটি জমজমাট বেশি থাকে।