ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:০৮:০৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, চাপে লেবার পার্টি

উইমেননিউজ ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:৫৫ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রভাবশালী এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব থাকার বিষয়টি নিয়ে যৌথ অনুসন্ধান করেছে বাংলাদেশের একটি দৈনিক ও ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস। এই যৌথ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে আরেক ব্রিটিশ দৈনিক এক্সপ্রেস।

গাইলস শেলড্রিক লিখিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘স্টারমারের জন্য নতুন দুঃস্বপ্ন: টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে মিথ্যা বলার অভিযোগ’। তবে এক্সপ্রেস মূলত প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিবেদনটি লিখেছে।

এদিকে দ্য টাইমস বাংলাদেশের একটি দৈনিকের সঙ্গে যৌথভাবে প্রতিবেদনটি তাদের ছাপা ও অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করেছে। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সময়ে এই প্রতিবেদনে ২৪৫টি মন্তব্য প্রকাশ করেছে দ্য টাইমস।

এক্সপ্রেসে প্রকাশিত প্রতিবেদন এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো:

লেবার পার্টি আবারও নতুন এক সংকটে পড়েছে। কারণ, নতুন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যা টিউলিপ সিদ্দিকের বক্তব্যের সঙ্গে মেলে না। তিনি বলেছিলেন, তাঁকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি। কিন্তু ঢাকার কর্মকর্তারা যে নথি পেয়েছেন, তা ভিন্ন চিত্র দেখাচ্ছে।

ঢাকার কর্মকর্তারা খুঁজে পেয়েছেন, লন্ডনে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টিউলিপ সিদ্দিকের নামে একটি পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিল, তখন তাঁর বয়স ছিল ১৯ বছর। এ ছাড়া ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তাঁর নামে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়েছিল।

এই নথিগুলোর কপি দ্য টাইমস ও বাংলাদেশের খ্যাতনামা সংবাদপত্র প্রথম আলো হাতে পেয়েছে। ৪৩ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক এ বছরের জানুয়ারিতে লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি বলেন, তিনি বাধা হয়ে দাঁড়াতে চান না।

তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে ঢাকায় তাঁর খালা শেখ হাসিনা-যিনি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী-অবৈধভাবে তাঁকে জমি দিয়েছেন। দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন একে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ বলেছে।

পাসপোর্ট বিভাগের ডেটাবেজে দেখা গেছে, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের ডেটাবেজেও তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নম্বর পাওয়া গেছে এবং তাঁর ভোটার নম্বরও সেখানে আছে।

উভয় ক্ষেত্রেই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ঢাকার সেই বাড়ির, যা তাঁর খালা শেখ হাসিনার নামে ছিল। গত বছর আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের কারণে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন।

টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীরা বলছেন, পুরো বিষয়টাই ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তৈরি মানহানিকর প্রচারণা। নতুন পাওয়া নথি ও ডেটাবেজের তথ্যগুলো আগে দেওয়া টিউলিপ সিদ্দিকের বক্তব্যের সঙ্গে মেলে না। গত মাসে তিনি প্রসিকিউটরদের দেওয়া অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। প্রসিকিউটররা বলেছিলেন, তাঁকে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে।

ল ফার্ম স্টিফেনসন হ্যারউডের একজন মুখপাত্র ১২ আগস্ট ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছিলেন: ‘টিউলিপের কোনো বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি নেই। শিশু অবস্থার পর থেকে তিনি কখনো পাসপোর্টও রাখেননি।’

যখন তাঁকে নথির কপি দেখানো হলো, সিদ্দিকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে এগুলো ‘জাল’ এবং বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের করা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মানহানিকর প্রচারণা’।

তিনি আরও বলেন, এটি ইচ্ছাকৃত ও মরিয়া চেষ্টা, যার মাধ্যমে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র কেবল বাংলাদেশি নাগরিকদের দেওয়া হয়। যারা দেশে জন্মেছে অথবা যাদের বাবা-মা বাংলাদেশি-তাদের নাগরিকত্বের অধিকার থাকে।

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যে জন্মালেও তাঁর বাবা-মা দুজনই বাংলাদেশি। তাই তিনি দ্বৈত নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য।

তবে তিনি আগে একাধিকবার বাংলাদেশি পরিচয় অস্বীকার করেছেন। ২০১৭ সালে একবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল-একজন ব্রিটিশ আইনজীবীকে যিনি বাংলাদেশে বন্দী, তাঁর বিষয়ে তিনি কোনো হস্তক্ষেপ করবেন কি না। তখন তিনি বলেন, ‘আপনি কি আমাকে বাংলাদেশি বলছেন? আমি ব্রিটিশ। খুব সাবধানে কথা বলুন, কারণ আমি ব্রিটিশ এমপি। আমি বাংলাদেশি নই।’

বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের আদালতে অনুপস্থিত অবস্থায় বিচারাধীন। অভিযোগ আছে, তিনি তাঁর খালাকে প্রভাবিত করে তাঁর মা, ভাই ও বোনের জন্য জমি বরাদ্দ করিয়েছেন। তিনি এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে বলছেন, ‘এটি নিপীড়ন ও এক প্রহসন।’