ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:২৯:২৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পূর্বাচল ৩০০ ফিটে নেতাকর্মীদের ঢল মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত পোস্টাল ভোটে নিবন্ধনের সময় বাড়লো হাদি হত্যায় মোটরসাইকেল চালকের সহযোগী গ্রেপ্তার ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে নিষিদ্ধ করল সরকার

নুসরাতের ময়নাতদন্তের বর্ণনা দিলেন ঢাবি ছাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:০৪ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০১৯ শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি, বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর রাফির ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস এ কথা জানান।

নুসরাতের ময়নাতদন্তের সময় তার বোন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাতিমা তাসহিন, সহ-সাধারন সম্পাদক, শামসুন নাহার হল সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন সেই মুহুর্তের বর্ননা। ফাতিমা তাসহিন`র সেই স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-

সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ঢাকা মেডিকেলে। সকাল সাড়ে ৮টায় হিমাগার থেকে বডিটা বের করে এমারজেন্সি মর্গে নিয়ে গেছে। মৃত মানুষটা মেয়ে হলে তার ময়নাতদন্ত করার সময় মা অথবা বোনের থাকতে হয়। রাফির মা অসুস্থ আর আপন কোনো বোন না থাকায় আমাকে বোন হিসেবে রেখেছিলো ময়নাতদন্তের সময়।

মেয়েটার পেটে কোনো মাংস নেই, মুখ দিয়ে লালা ঝরছে, যৌনাঙ্গ পুড়ে বীভৎস অবস্থা, পায়ের নখের লাল টুকটুকে মেহেদী রঙটুকু এখনো চোখে পড়ে।

রাফির মা ভীষণ অসুস্থ গতকাল রাত থেকে , মেয়ে মারা যাওয়ার পর শেষবার একটু দেখতেও পারেননি। আঙ্কেল শোকে পাথর হয়ে গেছে আর মা মা বলে চিৎকার। ভাই দুইটা একটু পর পর অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। মর্গের সামনে দুই-তিনশো সাংবাদিক দাঁড়িয়ে আছে, নেই শুধু রাফি।

কান্না থামিয়ে রাখতে পারেননি প্রধানমন্ত্রীর পিএস , মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যানও। অ্যাম্বুলেন্সে করেই এসেছিল ঢাকায়, আবার ফিরেও যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সে।

বোন, পৃথিবীর চেয়ে ভালো জায়গায় থাকবি নিশ্চয়ই। আমরা যেই নরকে আছি সেখানে এখনও তোর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে, তোর পক্ষে কথা না বলার জন্য আদেশ দিচ্ছে, তোর পাশের এলাকায় গতকাল রাতে তোর মত করে আরেকটা ছেলের গায়ে আগুন দিয়েছে।

আহ! কী সুন্দর! তুইই ভালো আছিস নরক থেকে চলে গিয়ে। শেষবার তোকে লাইফ সাপোর্টে দেখে আসলাম , গতকাল ব্ল্যাড ম্যানেজ করে দিলাম নয়ব্যাগ। আর যেতে হবে না তোকে দেখতে, রক্ত দিতে....। ক্ষমা করিস না আমাদেরকে!

উল্লেখ্য, নুসরাত এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলেন তিনি। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার। সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা গত শনিবার পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ করে।


-জেডসি