ঢাকা, বুধবার ১৭, ডিসেম্বর ২০২৫ ৩:২৮:৩৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ মহান বিজয় দিবস দেশজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে : রাষ্ট্রপতি সাংবাদিকদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে সরকার ‘হয়তো জানতেও পারবো না, মা কবে মারা গেছেন’

পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা বন্দর আরও সচল হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৩ পিএম, ১৫ জুন ২০২২ বুধবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

খুলনার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সুন্দরবন একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা বন্দর আরও সচল হবে। তিনি বলেন, এর ফলে ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে। মোংলা, পায়রা, বেনাপোল, ভোমরা বন্দর থেকে আমদানি-রপ্তানি বাড়বে। 
তিনি আরও বলেন, পদ্মাসেতু এ অঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। সেই সাথে অর্থনৈতিকভাবেও খুলনাঞ্চল সমৃদ্ধ হবে। এখন এ অঞ্চলের যেসব সড়ক রয়েছে সেগুলোকে পরিকল্পিতভাবে সম্প্রসারণ করা দরকার। এজন্য তিনি সড়ক বিভাগকে নতুন নতুন প্রস্তাবনা সরকারের কাছে তুলে ধরার আহবান জানিয়ে বলেন, হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ অঞ্চলের কোন প্রস্তাবনা গেলে তিনি সেটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবেন। মাওয়ায় পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং বেনাপোল ও ভোমরা স্থল বন্দর প্রাণ ফিরে পাবে। আরও কার্যকরী হবে এসব সমুদ্র ও স্থল বন্দরগুলো। 
খুলনা মহানগরীর সদর থানার ময়লাপোতা এলাকার সন্ধ্যা বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী মানিক শেখ বলেন, দেশের শ্রেষ্ট অর্জনের নাম পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে ঋণী করেছেন।
তিনি বলেন, খুলনাঞ্চলের যেসব সংকীর্ণ সড়ক আছে সেগুলো সম্প্রসারণ করে পরিকল্পিত উন্নয়ন গড়ে তোলার ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক্ষেপ নেবেন বলেও তিনি আশা করেন। শেখ হাসিনার প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের আস্থা আছে, এমনকি শেখ হাসিনারও এ অঞ্চলের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক বলে তিনি মন্তব্য করেন। 
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারু ও কারুকলা বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া আফরিন বলেন, শেখ হাসিনার এ ঋণ যুগ-যুগ ধরেও শোধ করা যাবে না। পদ্মা সেতু চালু হলেও খুলনায় বিমান বন্দরের চাহিদা শেষ হয়ে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আরও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে রামপালের ফয়লার নির্মাণাধীন বিমান বন্দরের কাজকে এগিয়ে নেয়া উচিত।  তিনি বলেন- শেখ হাসিনা যত জায়গায় হাত দিয়েছে সব জায়গার উন্নয়ন হয়েছে। 
নগরীর ভ্রাম্যমাণ সত্তরোর্ধ সবজী বিক্রেতা মোতালেব মিয়া বাসসকে এ অঞ্চলের মানুষের অতীত দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে বলেন, এক সময় খুলনা থেকে গাজী রকেটে বা লঞ্চে করে ঢাকায় যেতে হতো। সড়ক পথে যেতে পার হতে হতো ছয়টি ফেরি। এখন রয়েছে একটি ফেরি। সেখানেও তিন, চার অথবা পাঁচ ঘন্টা বা তারও বেশি সময় বসে থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক কষ্ট করে এবং দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে পদ্মা সেতু করতে হয়েছে। 
তিনি বলেন, অওয়ামী লীগ বুঝি না, বিএনপি বুঝি না। তবে শেখ সাহেবের বেটি শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে দেশের অনেক উন্নতি করেছেন। 
খুলনা মহানগর বিএনপি’র একজন কর্মী ও খুলনা শপিং কমপ্লেক্স এর মোবাইল ও এ্যাসোসোরিজ বিক্রেতা খায়রুজ্জামান সজীব বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে এখনও বিএনপিকে দোষারোপ করে যেসব রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া হচ্ছে সেগুলো পরিহার করে তিনি এর কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহবান জানান।
পদ্মা সেতুকে ঘিরে এ অঞ্চলে শিল্প বিপ্লব ঘটবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে খুলনার টেক্সটাইল, দাদা ম্যাচ, নিউজপ্রিন্ট, হার্ডবোর্ড মিলসহ যেসব পাটকল বন্ধ রয়েছে সেগুলো সচল করার জন্যও সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্প কল কারখানাগুলো যদি লাভজনক হতে পারে তাহলে সরকারি মিলগুলো কেন লাভজনক করা যাবে না এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।
নারী উদ্যোক্তা সুলতানা শিলু প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, পদ্মা ফেরিতে দুর্ভোগ আর হয়রানির শেষ ছিল না। একবার আমি ডাকাতের কবলে পড়ে যাই। পদ্মা সেতুর কারণে আমি আমার দেশে উন্নয়নের ছোঁয়া দেখতে পাই। পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে নারীরা এ ধরনের জটিলতা ও হয়রানির  শিকার হবে না। ঢাকায় কোন সভা বা মিটিং থাকলে দিনের ভেতরেই তা সম্পন্ন করে চলে আসতে পারবে। থাকা ও খাওয়া নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হবে না। তাই প্রধানমন্ত্রী ও পদ্মা সেতুর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের পক্ষ থেকে আবারো ধন্যবাদ জানাই। 
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগে সেতুবন্ধন সৃষ্টি হবে। এ ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য যে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে সেটি পুন:বিবেচনা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এবং খুলনা জেলা সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম মধু।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু চালু হলে এ অঞ্চলের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন সহজে করা যাবে দেশের অন্যসব অঞ্চলে। বাড়বে ট্রানজিট সুবিধাও। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগমন ঘটবে।  মোংলা ইপিজেডে বিনিয়োগের জন্য যেমন বিদেশীরা আসবে তেমনি সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের জন্যও বিমান বন্দর জরুরি। 
সূত্র: বাসস