ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৯:২৫:৪৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর: নারীর অবদান উপেক্ষিত আজও

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:২২ এএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

আজ থেকে ৭০ বছর আগের কথা! শাষকচক্রের রক্তচোখ উপেক্ষা করে বাংলার মেয়েরাও বেড়িয়ে এসেছিল বাইরে। মায়ের মুখের ভাষা রক্ষা করতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরও রেখেছিল অসামান্য অবদান। মিছিল, মিটিং, পোস্টারিং থেকে শুরু করে পুলিশী নির্যাতন এবং গ্রেফতারও হতে হয়েছে নারীকে রাষ্ট্রভাষা রক্ষার জন্য। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্যি সে কথা আজ আর তেমনভাবে বলা হয় না। অথচ ভাষা আন্দোলনে নারীর অবদান রয়েছে সীমাহীন। 

১৯৪৭-১৯৫১ মাত্র চার বছরের ব্যবধানে ভাষা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সংখ্যা ৮০-৮৫ জন। এই ছাত্রীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ভাষা আন্দোলনে গৌরবময় ভূমিকা রেখে গেছেন। 

১৯৫০-১৯৫১ সালে ড. সাফিয়া খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ওমেন হল ইউনিয়নের জি.এস ছিলেন। তিনি ৫১-৫২ মেয়াদে ছিলেন ভিপি। তাকে দিয়ে ভাষা আন্দোলনে নারীর ভূমিকা প্রথম পর্ব শুরু হয়। বলা যায়, তিনি ছিলেন তখনকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পুরোধা।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি দিন। এ দিনে পুলিশের গুলিতে ছাত্র হত্যা ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদের সদস্য আনোয়ারা খাতুন তীব্র প্রতিবাদ করেন। 

২১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিধান পরিষদে তিনি বলেন, ‘মিঃ স্পীকার, ঘটনা দেখে মনে হয় আমরা পূর্ণ স্বাধীনতা পাইনি। তার প্রমাণ এ পুলিশী জুলুম। এ অত্যাচার থেকে মেয়েরা পর্যন্ত রেহাই পায় নাই। ...যে জাতি মাতৃজাতির সম্মান দিতে জানে না সে জাতির ধ্বংস অনিবার্য। এ অত্যাচারের বর্ণনা দেওয়া সম্ভব নয়... মিলিটারীরা মেয়েদের গাড়ি করে নিয়ে কুর্মিটোলায় ছেড়ে দিয়েছে...আমি তাদের দুজনার নাম দিচ্ছি, যারা আহত হয়েছে-একজন হলো ঢাকা হাইকোর্টের জাস্টিস ইব্রাহিম সাহেবের মেয়ে মিস সুফিয়া ইব্রাহিম। আর একজন মিস রওশন আরা...’।

এসময় তিনি কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে ১. ভাষা আন্দোলন সূত্রে বন্দি ব্যক্তিদের শর্তহীন মুক্তি ২. হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ৩. হত্যা নির্যাতন ও অপকর্মের জন্য দায়ী অফিসারদের প্রকাশ্য বিচার ৪. সরকারের কোন শাস্তি গ্রহণ না করা।

ভাষা আন্দোলনে দেশের নারীদের অবদানের কথা বলতে হলে আর একটু পেছনে যাওয়া যাক। ১৯৪৭ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার অনুরোধ সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সেই স্মারকলিপিতে বরেণ্য ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষর করেছিলেন ‘জয়শ্রী’ পত্রিকার সম্পাদিকা লীলা রায় এবং মিসেস আনোয়ারা চৌধুরী।

সিলেট জেলার নারীদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয় তৎকালীন মন্ত্রী আবদুর রব নিশতারের কাছে। সিলেট রাজকীয় বালিকা বিদ্যালয়ে ১৯৪৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

এতে স্বাক্ষর করেছিলেন মহিলা মুসলিম লীগের জেলা কমিটির সভানেত্রী জোবেদা খানম, সহকারী সভানেত্রী সৈয়দা শাহের বানু চৌধুরী, সম্পাদিকা লুৎফুন্নেসা খাতুন, রাবেয়া খাতুন, জাহানারা মতিন, রোকেয়া বেগম, সামসি কাইসার রশীদ, নুরজাহান বেগম, সুফিয়া খাতুন, মাহমুদা খাতুন প্রমুখ।

ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীর নারীদের ভূমিকা অপরিসীম। রাজশাহীতে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, ড.জাহানারা বেগম রেনু, মনোয়ারা বেগম বনু, ডা.মহসিনা বেগম, ফিরোজা বেগম ফুনু, হাফিজা বেগম টুকু, হাসিনা বেগম ডলি, রওশন আরা, খুরশীদা বানু খুকু, আখতার বানু প্রমুখ। বগুড়ার কবি আতাউর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় বাংলাভাষা সংগ্রাম কমিটি। এতে সংশ্লিষ্ট ছিলেন রহিমা খাতুন ও সালেহা খাতুন।

১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সকল দাবি নাকচ করে দিলে বিচ্ছিন্নভাবে শুরু হয় ছাত্র আন্দোলন। পরে ১১ মার্চ ডাকা হল সাধারণ ধর্মঘট। আর এ ধর্মঘটেও সম্পৃক্ত ছিলেন জাগ্রত নারী সমাজ। তাদের মধ্যে অন্যতম নিবেদিতা নাগ, নাদেরা বেগম, লিলি খান, লায়লা সামাদ প্রমুখ। এ সময়ে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য গ্রেফতার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এ ক্লাসের ছাত্রী নাদেরা বেগম।

বরিশালের বি এম কলেজের ছাত্রী রওশন আরা বাচ্চু শিক্ষার্থীদের নিয়ে ধর্মঘট, সভা ও মিছিল করেন। ঐ সময়ে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বাইরে বের হওয়া নিষেধ থাকলেও তিনি রাজপথে অন্যান্য ছাত্রীদের সাথে নেতৃত্বে ছিলেন।

যশোরে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ। ঐ দিন হরতাল ডাকা হলে যশোরের রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসাবে হরতাল পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বি,এ, পড়ুয়া ছাত্রী হামিদা রহমান। সে সময় প্রায় সব স্কুল কলেজের ছাত্রীরা ধর্মঘটে যোগ দেন। কিন্তু শোমিন গার্লস স্কুলের শিক্ষার্থীদের কর্তৃপক্ষ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দিচ্ছিল না। কিন্তু হামিদা রহমান তার দৃঢ় নেতৃত্বে ওদের বের করে নিয়ে আসেন। এই ধর্মঘটের মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারী হয়। কিন্তু এরপরেও তিনি মিছিলে যোগ দেন।

বাগেরহাট কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্রী হালিমা খাতুন, রাবেয়া বেগম, সেলিমা খাতুনসহ অনেক ছাত্রী সে সময়ে ছাত্রদের সাথে থেকে পুরো শহরে পিকেটিং করেন।

১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি ‘সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ’ কর্তৃক আয়োজিত প্রথম সম্মেলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। এ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী মাহবুবা খাতুন।

তিনি বলেন ‘বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি স্বীকার করিয়ে নেওয়ার জন্য আবশ্যক হলে মেয়েরা রক্ত বিন্দু পর্যন্ত বিসর্জন দেবে।’

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা নাগাদ হাজারো ছাত্র-ছাত্রীর ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’-স্লোগানে মুখরিত করে তোলে চারদিক। এ সময়ে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করে মুক্তি পেয়েই ভাষা আন্দোলনে আবারো সক্রিয় হন নাদেরা বেগম।

১৪৪ ধারা ভাঙার পক্ষে সিদ্ধান্ত হলে ভাষা সৈনিক গাজীউল হকের সভাপতিত্বে মিছিল বের হতে শুরু করে। প্রথম মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন হাবিবুর রহমান। চতুর্থ মিছিলের চার লাইনে চারজন করে অংশগ্রহণে রাজপথে নেমে আসেন মেয়েরা।

সাদিয়া বেগমের নেতৃত্বে সুফিয়া ইব্রাহীম, রওশন আরা বাচ্চু, হালিমা খাতুন, নাদেরা বেগম, ফিরোজা বেগম, বেগম শামসুন্নাহার, সোফিয়া করিম, সারা তৈফুর, জোহরা আরা, ডা. শরিফা খাতুন, সুফিয়া আহমেদ, মোসলেমা খাতুন, আমেনা আহমেদ, স্কুলছাত্রী জুলেখা, আখতারী পারুলসহ জানা-অজানা অনেক নারী নেমে আসেন রাজপথে।

এ সময় পুলিশের লাঠি চার্জে আহত হন রওশন আরা বাচ্চু। গ্রেপ্তার হন ফরিদা বারী, কামরুনাহার শাইলী, ফিরোজা বেগম, জহরত আরা রাহেলা, জোহরা আরা, খুরাইয়া, নুরুন্নাহার, সালেহা খাতুন, সাজেদা আলী প্রমুখ।

একুশে ফেব্রুয়ারি ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকার কামরুন্নেসা স্কুলের গলিতে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন কবি বেগম সুফিয়া কামাল, বেগম নুরজাহান মুরশেদ, দৌলতুন্নেসা খাতুন, সানজীদা খাতুন,সাজেদা খাতুন প্রমুখ। তারপর এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। নারায়ণগঞ্জে সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন সচেতন নারী সমাজের অনেকে। মায়ের ভাষার প্রতি মমত্ববোধ ও জাতীয়তাবাদের এই সংক্রমণ বস্তুতপক্ষে নারী সমাজের রাজনৈতিক চেতনারই এক স্বতফূর্ত দিক এবং অগ্রসরমানতার স্বাক্ষরও।

নারায়ণগঞ্জের বিক্ষোভ সভায় প্রকাশ্যে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন মর্গান বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে ক্ষিপ্ত জনতা কোর্ট হাউস ঘেরাও করে। তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ জনতা সংঘর্ষে আহত হয় অনেকে। শেষ পর্যন্ত ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল্‌সকে ডাকতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এক পর্যায়ে অন্যান্যদের সাথে গ্রেপ্তার হন ইলা বখসী ও ছাত্রী রেনু। পরবর্তীতে মমতাজ বেগমকে মুক্তি দেয়ার প্রশ্নে সরকার পক্ষ এক স্বীকারুক্তিতে সই করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখান করেন। ভাষা আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে তার স্বামী তাকে তালাক দেন। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় ভাষা আন্দোলনে এ নারীর ত্যাগের কথা কতটুকু লেখা হয়েছে!

ভাষা আন্দোলনের এক পর্যায়ে মর্গান স্কুলেরই ছাত্রী মতিয়া চৌধুরী নিজের আঙ্গুল কেটে রক্ত দিয়ে ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ ব্যানার লিখেন।

একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে সমাবেশের আয়োজন করেন নাজমা বেগম, নুরুন্নাহার শেলী, রওশন আরা ইউসুফ প্রমূখ। ময়মনসিংহে সমাবেশ করেন ড. হালিমা খাতুন ও অন্যান্যরা।

খুলনায় সাজেদা আলীর নেতৃত্বে মেয়েরা মিছিল করে। রংপুর আবতাবুন খাতুনের নেতৃত্বে প্রতিবাদ সভা ও মিছিলের আয়োজনের কারণে গ্রেপ্তার করা হয় তার মেয়ে নিলুফার আহমেদকে। কিন্তু তারপরও তিনি থেমে থাকেননি।

সিলেটে আয়োজিত ছাত্রী মিছিল শেষে সমাবেশে প্রতিবাদী বক্তব্য রাখেন হাজেরা মাহমুদ।

চট্টগ্রামে ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে কবি মাহবুব আলম চৌধুরীকে আহবায়ক করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। এতে যুক্ত হন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী প্রতিভা মুৎসুদ্দী। ২১ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন সৈয়দা হালিমা রহমান, চিনা বিশ্বাস, প্রতিভা মুৎসুদ্দী, শেলী দস্তিদার, প্রণতি দস্তিদার, মীরা, খুলেখা,মিনতিসহ আরো অনেকে। পরবর্তীতে ঢাকায় ছাত্র মিছিলের উপর গুলি বর্ষণে ছাত্র হত্যার খবর পেয়ে বিকেল তিনটায় আবারো রাজপথে নেমে আসে ছাত্রছাত্রীরা। প্রতিভা মুৎসুদ্দীও তালেয়া রহমান মিছিল নিয়ে আসেন ডা. খাস্তগীর স্কুলের সামনে। ওখান থেকে গাড়িতে চড়ে ‘মন্ত্রী সভার পদত্যাগ চাই’ ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’-এ সব স্লোগানে সারা শহরে প্রদক্ষিণে নেতৃত্বে ছিলেন দশম শ্রেণীর ছাত্রী হালিমা খাতুন,জওশন আরা রহমানসহ আরো অনেকে। চট্টগ্রামের ইতিহাসে নারীদের এ ধরনের বিক্ষোভ প্রদর্শন ছিল সেই প্রথম।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশায় ছিলেন চট্টগ্রামেরই এক সৃজনশীল নারী ভাস্কর নভেরা আহমেদ। তিনি শিল্পী হামিদুর রহমানের সাথে শহীদ মিনারের নকশা তৈরি করতে নিরলস শ্রম দিয়েছেন। অথচ শহীদ মিনারের নকশা নির্মানের কথা বলতে গিয়ে যে ভাবে হামিদুর রহমানের কথা বলা হয় সেভাবে নভেরা আহমেদের কথা বলা হয় না।

ভাষা আন্দোলনে নারী সমাজের অবদানে দেখি একদিকে সক্রিয়ভাবে মিছিল প্রতিবাদ সভা ও সাংগঠনিক কাজ ছাড়াও তারা তহবিল গঠন, চাঁদা সংগ্রহ এবং পোস্টার তৈরি করে বিক্রি করেছেন। পুরুষের পাশাপাশি বক্তব্য রেখেছেন গণ জমায়েতে। নেতৃত্ব দিয়েছেন মিছিলে। সহ্য করেছেন পুলিশী নির্যাতনের সকল প্রক্রিয়া। কারাবরণ, হুলিয়া ভোগ, সাময়িক আত্মগোপনকারীদের আশ্রয় দিয়ে একাত্ব প্রকাশ করেছেন।

ইতিহাস বলে, প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণের খরচ যোগার করতে অনেক মেয়ে গায়ের অলংকার খুলে দিয়েছেন। কিন্তু নারীর সে সব অবদান ইতিহাসে উঠে আসে না।

ভাষা আন্দোলনে সুপ্তছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ। অথচ এ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী নারীদের পূর্ণ তালিকা পাওয়া যায়নি আজও!