ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:০৪:১০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’

কড়াইলে অগ্নিকাণ্ড

সর্বস্ব হারানো মানুষের সংগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:০০ এএম, ২৯ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের তৃতীয় দিনেও খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটছে হাজারো মানুষের। আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে নতুন সংগ্রামে তারা। সংসার সাজাতে  কিনতে হবে সবকিছুই, অথচ সেই আর্থিক সামর্থ্য নেই অধিকাংশ বস্তিবাসীর। 

আগুনের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ ও ব্যক্তির উদ্যোগে বস্তিতে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তিন বেলা রান্না করা খাবার ও সুপেয় পানি বিতরণ করছে সংগঠনগুলো। 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশেন (ডিএনসিসি), ঢাকা জেলা প্রশাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে। পোড়া বস্তিতে স্থাপন করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ শৌচাগার। গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ডিএনসিসি এবং ঢাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস এক হাজার ৯০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, একটি পরিবার মানে একটি ঘর। কারণ প্রতি ঘরে একটি পরিবার বাস করত। ব্র্যাকের তালিকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা দুই হাজার ৬৫০টি।

ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুলকার নায়ন গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করছি। তালিকার কাজ শেষ হলে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে। 

ঢাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দীন ওয়াদুদ জানান, গতকাল বিকেল পর্যন্ত তারাও এক হাজার ৯০০ জনের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করেছেন। এরই মধ্যে দেড় হাজার পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, হলুদসহ প্রায় ১৫ কেজি পণ্যের একটি করে প্যাকেট, দুই লিটার পানি, একটি মশারি ও কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বাকি পরিবারকে শুক্রবার দেওয়া হবে।

ব্র্যাক ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর মো. বজলুর রসিদ জানান, ব্র্যাক থেকে প্রতি পরিবারকে দুই হাজার টাকা ও চারটি পোশাক দেওয়া হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাৎক্ষণিক খাবারের সংকট কিছুটা কাটলেও পরনের কাপড়, বিশেষ করে শীতের কাপড়ের সংকটে আছেন তারা। শিশু ও নারীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। দ্রুত পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার জন্য ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গৃহকর্মী ঊষা বেগম জানান, অগ্নিকাণ্ডের দিন তিনি ছেলেকে গোসল করাচ্ছিলেন। আগুন লাগার পরপরই ওই অবস্থায় ছেলেকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান। ছেলের পরনের পোশাকও নিতে পারেননি। পরে একজনের বাসা থেকে একটি পোশাক সংগ্রহ করে ছেলেকে দেন। তিনি বলেন, থালা-বাটি যে কিনব, সেই টাকাও নেই। কী করব বুঝতে পারছি না। 

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে ঘরের পোড়া টিন, লোহালক্কড় ও ভাঙাড়ি বিক্রি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের মালিকরা। হাতে সামান্য টাকা পেলে অন্তত কিছু কিনতে পারবেন– এমন আশা থেকেই তারা যা পেয়েছেন বিক্রি করছেন স্থানীয় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীদর কাছে। বসতবাড়ির জায়গায় শুধু ছাই আর পোড়া স্তূপ। তা সরিয়ে রাত কাটানোর জায়গা করছেন অনেকে। 

অগ্নিকাণ্ডের সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বস্তির বিদ্যুৎ সংযোগ। বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকেও তার ছিঁড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) গুলশান জোনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বুধ ও বৃহস্পতিবার সেগুলো মেরামত করেন। 

গত বুধবার রাত থেকে আংশিক বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবারও কিছু অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। 

ডেসকোর গুলশান জোনের ফোরম্যান মাসুদ করিম দুপুরে জানান, বুধবার থেকেই তারা কাজ করছেন। এখনও অনেক কাজ বাকি। কিছু কিছু অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।