ঢাকা, শনিবার ২৭, এপ্রিল ২০২৪ ৪:৪০:২৫ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাহেদ র‌্যাব সদর দফতরে, জিজ্ঞাবাদ চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০০ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২০ বুধবার

সাহেদ র‌্যাবে সদর দফতরে, জিজ্ঞাবাদ চলছে

সাহেদ র‌্যাবে সদর দফতরে, জিজ্ঞাবাদ চলছে

বহুল আলোচিত রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান  মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্তবর্তী এলাকা ইছামতি নদী থেকে এলিট ফোর্স র‌্যাব সদস্যরা তাকে গ্রেফতারের পর ঢাকায় নিয়ে আসেন। এরপর সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকার র‌্যাবের সদর দফতরে নেয়া হয়েছে। এখন তিনি র‌্যাবের সদর দফতরে আছেন। সেখানে তাকে  র‌্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জিঞ্জাসাবাদ করছেন।

আজ বুধবার র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া ইউংয়ের মুখপাত্র (পরিচালক) লেফটেন্ট্যান্ট কর্ণেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা দিয়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে যাবার সময়  রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদকে গোপনে অভিযান চালিয়ে  র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশী অবৈধ পিস্তল ও ম্যাগজিনভর্তি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ আরও জানান, ছদ্মবেশে সাহেদ সাতক্ষীরা সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করছিলেন। এসময় তাকে একটি অবৈধ পিস্তলও ম্যাগজিনভর্তি গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়।  তিনি (সাহেদ) ছদ্মবেশে বোরকা পরে নৌকা দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল। আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য পেয়ে তাকে গ্রেফতার করি। তার বাসা সাতক্ষীরায়। কিন্ত তিনি তারই জেলায় ছদ্মবেশে বিভিন্ন যানবাহনে চলাফেলা করেছিলেন। সেখান থেকে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আজ র‌্যাব সদর দপ্তরে  এ ব্যাপারে দুপুর ৩ টার দিকে  এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা। ওই সংবাদ সম্মেলনে এলিট ফোর্স র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বক্তব্য রাখবেন।

প্রতারক সাহের ওরফে সাহেদ করিম গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেন র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লেফটেন্ট্যান্ট কর্লেল সারোয়ার বিন কাশেম। এসময় তার সাথে গোয়েন্দা ইউনিটের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাথে ছিলেন।

এদিকে, আজ সকালে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে র‍্যাবের এডিজি অপারেশন কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, গত ৯ দিন ধরে আমরা সাহেদকে (তাকে) ফলো করেছি। কিন্তু তিনি ঘন ঘন জায়গা পরিবর্তন করছিলেন। এজন্য কয়েকবার আমরা তার খুব কাছাকাছি যাওয়ার পরও ধরতে পারিনি।

তিনি বলেন, এছাড়া সে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও ফেলে দিলেছিল। অবশেষে আজ ভোররাতে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়।  
আজ ভোর ৫টা ১০ মিনিটে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্তে ইছামতি নদী থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে হেলিকপ্টারে করে তাকে সাতক্ষীরা থেকে সকাল ৯টায় ঢাকা নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান তিনি।

র‌্যাব জানিয়েছে, ক্ষণে ক্ষণে অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন ধুরন্ধর সাহেদ। চেহারা পরিবর্তনের জন্য চুলে রঙ করেছিলেন তিনি। কেটে ফেলেছিলেন গোঁফ। নৌকায় করে নদী পার হয়ে চলে যাচ্ছিলেন তিনি। র‌্যাবের বিশেষ টিম পৌঁছানোর পর পালানোরও চেষ্টা করেন। র‌্যাবের টিম দেখে নৌকার মাঝি সাঁতরে পালিয়ে যান।

কিন্তু মোটা হওয়ায় আর দৌড়ে কিংবা সাঁতরে পালাতে পারেননি প্রতারক সাহেদ। এ সময় তার পরনে ছিল কালো রঙের বোরকা। আটকের পর দেখা গেছে, সাহেদের গায়ের বিভিন্ন জায়গায় লেগে ছিল কাদা। কোমরে বাঁধা ছিল পিস্তল।

রিজেন্ট হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযানের পর গা ঢাকা দিয়েছিলেন কখনো রাজনীতিবিদ, কখনো ব্যবসায়ী কিংবা সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সাহেদ। সে সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোনও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আত্মসমর্পণের আহ্বানে সাড়া দেননি। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান সাহেদের পিতা। কিন্তু সাহেদ আর প্রকাশ্যে আসেননি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে বলা হচ্ছিল, সাহেদ আত্মসমর্পণ না করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। সেজন্য সবোর্চ্চ সচেষ্ট আছেন তারা। মঙ্গলবার র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, সাহেদ দেশ ছাড়ার চেষ্টা করতে পারেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় বিশেষভাবে তৎপর আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সেদিন রাতেই গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি মাসুদ পারভেজকে। তারপর থেকে যেকোনো সময় সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে এমন গুঞ্জন জোরালো হতে থাকে। সাহেদকে গ্রেপ্তারে বিশেষ তৎপর ছিল র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স।

করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে গত ৮ জুলাই মামলা করে র‌্যাব। উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।

এর আগে গত ৬ জুলাই সোমবার র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রিজেন্ট হাসপাতালের দুটো শাখায় (উত্তরা ও মিরপুর) অভিযান চালায়। বিভিন্ন অভিযোগের কারণে শাখা দুটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৭ জুলাই বিকেলে উত্তরায় রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দেয় র‌্যাব।