ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:০৪:১৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’

সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজনা ছড়ানোর গোপন কৌশল ‘রেজ বেইট’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩৬ এএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগে এখন কমবেশি সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু কনটেন্ট মানুষের আবেগকে নাড়া দিচ্ছে। নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে মানুষ উত্তেজিত বা রাগান্বিত হয়ে যাচ্ছে।  ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব- সব প্ল্যাটফর্মেই এখন এই ধরনের কনটেন্ট দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। যার নাম রেজ বেইট (Rage Bait)।

উদ্দেশ্য একটাই- ব্যবহারকারীদের উত্তেজিত করে রাগ, ঘৃণা বা তর্ক সৃষ্টি করা। আর সেই আবেগই অ্যালগরিদমকে সক্রিয় করে, কনটেন্টকে আরও ছড়িয়ে দেয়। ফলে ‘রেজ বেইট’ এখন ডিজিটাল দুনিয়ার সবচেয়ে সহজ, কিন্তু সবচেয়ে বিপজ্জনক ‘এনগেজমেন্ট ট্যাকটিক’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রেজ বেইট কী?

রেজ বেইট হলো এমন পোস্ট বা ভিডিও, যেখানে বিতর্ক উস্কে দেওয়া হয়, মানুষকে দলের ভিত্তিতে খাটো করা হয়, অর্ধসত্য বা বিকৃত তথ্য ছড়ানো হয়, আর প্রেক্ষিত ছাড়া ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে আবেগকে শোষণ করা হয়। এই কনটেন্টের লক্ষ্য মানুষকে রাগিয়ে তুলতে বাধ্য করা।

কেন এগুলো এতো দ্রুত ভাইরাল হয়?

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যালগরিদম ‘এনগেজমেন্ট’ গণনা করে। যখন মানুষ রাগে কমেন্ট করে, বিতর্কে জড়ায় বা শেয়ার করে, তখন প্ল্যাটফর্ম ধরে নেয় এটা জনপ্রিয় কনটেন্ট। ফলে রেজ বেইট আরও বেশি মানুষের স্ক্রিনে পৌঁছে যায়। অনেক পেজ বা ব্যক্তি এটিকে ব্যবহার করে— ভিউ বাড়াতে, ফলোয়ার টানতে, বিজ্ঞাপন আয় বাড়াতে।

রেজ বেইট চিনবেন যেভাবে

অতিরঞ্জিত বা পক্ষপাতমূলক বক্তব্য, উস্কানিমূলক শিরোনাম, যেমন ‘দেখলে মাথা গরম হবে’। খুব কম তথ্য, কিন্তু প্রচুর নাটকীয়তা, প্রেক্ষিতবিহীন ছোট ভিডিও, যাচাইহীন ‘ব্রেকিং’ দাবি করে মন্তব্যে অযথা ঝগড়া সৃষ্টি করা। যে কনটেন্ট ইচ্ছা করেই মানুষের মধ্যে রাগ ও বিভেদ ছড়ায় সেটিই রেজ বেইট। 

সমাজের জন্য কেন বিপজ্জনক?

এটি দ্রুত ভুল তথ্য ছড়ায়। ধর্ম, রাজনীতি বা গোষ্ঠীভিত্তিক বিভাজন বাড়ায়। মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করে। তরুণদের মানসিক চাপ ও হতাশা বাড়ায়। অনলাইন আলোচনার মান ভয়াবহভাবে কমে যায়। রেজ বেইট ধীরে ধীরে আমাদের সামাজিক বন্ধনকে নষ্ট করছে।

কী করবেন?

আবেগের বশে কমেন্ট করবেন না। তথ্য যাচাই করে নিন। সন্দেহজনক পেজ/প্রোফাইল আনফলো করুন। উত্তেজনামূলক পোস্ট স্ক্রল করে পাশ কাটিয়ে যান ভুয়া বা ক্ষতিকর কনটেন্ট রিপোর্ট করুন। ডিজিটাল স্পেসকে নিরাপদ রাখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ব্যবহারকারীর সচেতনতা।

রেজ বেইট কোনো নিরীহ ট্রেন্ড নয়- এটি সামাজিক অস্থিরতা ও ভুল তথ্যের শক্তিশালী অনুঘটক। আমরা যদি সচেতন না হই, তবে অ্যালগরিদম আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করবে, আমরা নয়। সুতরাং ঘৃণা নয়, তথ্য ছড়ান। উত্তেজনা নয়, সচেতনতা ছড়ান।

অক্সফোর্ডের ২০২৫ সালের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ২০২৫ সালের জন্য ‘রেজ বেইট’ শব্দগুচ্ছটিকে তাদের ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার বা বর্ষসেরা শব্দ ঘোষণা করেছে। অভিধান প্রকাশনা সংস্থাটির মতে, এটি এমন একটি কৌশল যা অনলাইনে ব্যবহারকারীদের এনগেজমেন্ট বা অংশগ্রহণ বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। গত ১২ মাসে এই শব্দটির ব্যবহার তিনগুণ বেড়েছে। বর্ষসেরা হওয়ার দৌড়ে ‘রেজ বেইট’ হারিয়েছে সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অন্য দুটি শব্দ অরা ফার্মিং (Aura farming) এবং বায়োহ্যাককে (Biohack)। মানুষের মেজাজ এবং আলোচনার বিষয়বস্তুকে প্রতিফলিত করতেই এই শব্দগুলো বাছাই করা হয়েছে।