আলোর দিশারী অধ্যাপক ডা. জোহরা বেগম কাজী
অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:৪২ পিএম, ১ জানুয়ারি ২০২১ শুক্রবার

আলোর দিশারী অধ্যাপক ডা. জোহরা বেগম কাজী
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মুসলমান বাঙালি মহিলা চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জোহরা বেগম কাজী। সারা জীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন নিঃস্বার্থভাবে।
বাংলাদেশে তিনিই প্রথম স্ত্রীরোগ ও ধাত্রীবিদ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করে অজ্ঞ ও অবহেলিত নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। অবগুণ্ঠিত নারী সমাজের উন্নত চিকিৎসার সংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
সামাজিক কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির শক্ত বাধাকে অতিক্রম করে নারী সমাজের মুক্তিদাত্রী হিসেবে ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন ডা. জোহরা। বাংলাদেশের অনগ্রসর চিকিৎসাবিজ্ঞানে তিনিই প্রথম আলোকবর্তিকা হাতে এগিয়ে এসেছিলেন।
এ মহীয়সী নারী ১৯১২ সালের ১৫ অক্টোবর ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ-ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজনানগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার গোপালপুর গ্রামে। তার বাবা ডা. কাজী আবদুস সাত্তার অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী ও আধুনিক চিন্তাশীল মানুষ ছিলেন। তার মায়ের নাম আঞ্জুমান নেসা।
তখন ‘ব্রিটিশ খেদাও’ আন্দোলনের উত্তাল সময়। ছাত্রজীবনে তিনি বরাবরই মেধাবী ছিলেন। ক্লাসে সব সময় প্রথম হতেন। ফলে সাফল্যের সঙ্গে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯২৯ সালে তিনি আলীগড় মুসলিম মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে আইএসসি পাস করেন। এরপর উপমহাদেশের প্রথম মহিলা মেডিকেল কলেজ দিল্লির লেডি হার্ডিং গার্লস মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এ কলেজে তিনিই প্রথম মুসলিম বাঙালি ছাত্রী। এখান থেকে ১৯৩৫ সালে এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করেন। তখন তাকে সম্মানজনক ‘ভাইস রয়’ পদক প্রদান করা হয়।
ডা. জোহরা বেগম কাজী ১৯৪৭-পরবর্তী বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেন। তিনি একাধারে চিকিৎসাশাস্ত্রে বাঙালি নারী চিকিৎসকদের অগ্রপথিক, মানবতাবাদী ও সমাজ-সংস্কারক ছিলেন।
১৯৩৫ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করার পর জোহরা কাজী প্রথমে ভারতের ইয়োথমাল ওমেন্স পাবলিক হাসপাতালে ডাক্তার হিসেবে যোগ দেন৷ এরপর বিলাসপুর সরকারি হসপিটালে যোগ দেন৷ পরবর্তীকালে মানুষের সেবার জন্য মহাত্মা গান্ধী নির্মাণ করেন সেবাগ্রাম৷ এই সেবাগ্রামে অবৈতনিকভাবে কাজ করেন জোহরা৷ এছাড়াও তিনি ভারতের বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডাক্তার হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
বঙ্গভঙ্গের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন৷ ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন৷ ঢামেক হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় অবসর সময়ে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (ঢাকা)-এ সাম্মানিক কর্নেল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন৷ মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (বর্তমানে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ও সাম্মানিক অধ্যাপিকা ছিলেন৷
১৯৭৩ সালে চাকরি থেকে অবসর নেবার পর বেশ কিছু বছর হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) হিসাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন৷ পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে সাম্মানিক অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন৷
ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্ব পালন করার সময় নারী রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কুসংস্কার তাকে আহত করে। তিনি তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদের ভুল ধারণা দূর করার চেষ্টা করতেন। তাঁর কারণে পরবর্তীতে চিকিৎসা শাস্ত্রে এদেশে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়।
গর্ভবতী মায়েরা হাসপাতালে এসে যেন চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন, সেজন্য তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারীদের জন্য পৃথক চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
পিছিয়ে পড়া নারীদের জাগরণ তথা চিকিৎসাশাস্ত্রে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছেন। তারই দেখানো পথে আজ বাংলাদেশে অসংখ্য নারী চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন।
শুধু তা-ই নয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তিনি একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক ছিলেন। এছাড়া একজন ইতিহাস-সচেতন মানুষ হিসেবেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। বাংলাদেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস বিনির্মাণের লক্ষ্যে তিনি ২০০১ সালের ১১ জুলাই তার কাছে সংরক্ষিত মহাত্মা গান্ধীর ব্যক্তিগত ঐতিহাসিক পত্র, ভাইস রয় পদক, সনদগুলো এবং আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি-স্মারক আমাদের জাতীয় জাদুঘরে দান করে গেছেন।
জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরে ডা. জোহরা বেগম কাজী বিভিন্ন খেতাব ও পদকে ভূষিত হয়েছেন। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘তখমা-ই পাকিস্তান’ খেতাবে ভূষিত করেন। তিনি ‘ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল অব ঢাকা’ নামে পরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) তাকে বিএমএ স্বর্ণপদক দেয়। ২০০২ সালে সরকার তাকে ‘রোকেয়া পদক’ দেয়। ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সরকার তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’ (মরণোত্তর) দিয়ে সম্মানিত করে।
৩২ বছর বয়সে আইনজীবী ও সংসদ সদস্য রাজু উদ্দিন ভূঁইয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন জোহরা বেগম। আজীবন মানব সেবায় নিয়োজিত জোহরা বেগম কাজী ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর ৯৫ বছর বয়সে ঢাকার নিজ বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
- মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের জন্মদিন আজ
- ওয়ানডে সিরিজ জয় করায় জাতীয় ক্রিকেট দলকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
- করোনায় আরও ১৫ মৃত্যু, শনাক্ত ৬১৯
- মিয়ানমারকে ১৫ লাখ ডোজ করোনা টিকা দিচ্ছে ভারত
- বায়ুদূষণে আবারও শীর্ষ অবস্থানে রাজধানী ঢাকা
- প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছেন খুলনার ৯২২ গৃহহীন পরিবার
- টিকা উপহার দেয়ায় মোদিকে ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীর
- বান্ধবী সোফিয়াসহ করোনায় আক্রান্ত আগুয়েরো
- করোনা মোকাবিলায় ১০ নির্বাহী আদেশে বাইডেনের সই
- ইউক্রেনে নার্সিং হোমে আগুন, নারীসহ ১৫ জনের মৃত্যু
- বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ২১ লাখ ছাড়াল
- করোনা নিয়ে আমার পরিকল্পনা বিজ্ঞানভিত্তিক: বাইডেন
- আবারও করোনায় বিপর্যস্ত স্পেন, আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড
- পাথরঘাটায় গ্যাস বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ আহত ৫০, মৃত ১
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতির সকল অর্জনের বাতিঘর: প্রধানমন্ত্রী
- ভ্রমণকাহিনি: চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলে একদিন
- ছড়া : ছোট্ট পাখি টুনাটুনি
- আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
- বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী দেশের অধিকাংশই এশিয়ায়
- শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নে কমিটি গঠন
- কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই
- আনুশকা হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি জানাল মহিলা পরিষদ
- রাজধানীতে শীতের পিঠা বিক্রির ধুম
- করোনা আক্রান্ত নজরুল ইসলাম খান
- স্কুলে ভর্তির বিষয়ে কাল শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
- নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
- দেশে মাস্ক নিয়ে ফের কারসাজি, বাড়ছে দামও
- বরিশালে ঘরের আড়ায় মা আর বিছানায় মেয়ের লাশ
- রাজধানীর মিরপুরের বস্তিতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
- বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উন্মুক্ত স্থানে নয়