ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১০:২০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

বামপন্থি দলগুলো এক ছাতায় আনার উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৫৬ এএম, ৩ অক্টোবর ২০২৫ শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো এক ছাতার নিচে আনার প্রস্তুতি চলছে। বিদ্যমান বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত শরিকসহ অন্য বাম দলগুলো নির্বাচন ইস্যুতে একসঙ্গে ভোটে থাকবে। এর বাইরেও তারা ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে। 

পাশাপাশি বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং গণতন্ত্র মঞ্চ নামে যে আলাদা দুটি জোট আছে, তারা নিজেদের শরিক বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। দুই জোটই নিজেদের মতো করে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই ভাবে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়েও নেপথ্যে আলোচনা চলছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য মিলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচন সামনে রেখে বামপন্থিদের এক ছাতার নিচে আসার এই উদ্যোগের অংশ হিসাবে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চের মধ্যে সম্প্রতি কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। জোটের বাইরে থাকা গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, সাম্যবাদী দল, ঐক্য ন্যাপ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ভাসানীসহ আরও একাধিক বামপন্থি দলের সঙ্গেও কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্যের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনি পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়েছে। 

দক্ষিণপন্থি রাজনীতির উত্থানের বিপরীতে বাম বলয় বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েই পর্দার আড়ালে একের পর এক বৈঠক চলছে দলগুলোর মধ্যে। ১৪ নভেম্বর ঢাকায় বড় আকারে সমাবেশ করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি। 

এ সমাবেশে বাম-প্রগতিশীল ঘরানার রাজনৈতিক দল এবং চিন্তার মানুষকে এক মঞ্চে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাজনৈতিক সমঝোতার পুরো চিত্র বোঝা যাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদসহ আটটি বাম ঘরানার রাজনৈতিক দল মিলে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই যাত্রা শুরু করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এই জোটের অন্য শরিকরা হচ্ছে-গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্কসবাদী), বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং গণসংহতি আন্দোলন। 

পরবর্তীতে রাজনৈতিক পথ চলা নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে ২০২২ সালের ২৪ মে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বৈঠকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং গণসংহতি আন্দোলনের সদস্য পদ স্থগিত করা হয়।

যদিও ওই বছরের ৮ আগষ্ট বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলন বাম গণতান্ত্রিক জোট থেকে বেরিয়ে আসে। এই দুই দলসহ মোট সাতটি বাম প্রগতিশীল ঘরানার রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে গণতন্ত্র মঞ্চ নামে আলাদা জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই জোটের প্রথম দিকে যারা ছিল তারা হলো-জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। পরে ভাসানী অনুসারী পরিষদ রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়ে ভাসানী জনশক্তি পার্টি নামে যাত্রা শুরু করে। আর গণঅধিকার পরিষদ গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে বেরিয়ে একলা চলো নীতি অবলম্বন করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বাম গণতান্ত্রিক জোট নিজেদের মতো করে সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। শনিবারের মধ্যে দলগত এবং জোটগত প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা তৈরির কাজ শেষ করবে গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয়টি দল। জোটের শরিক নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের পরিচালনা পরিষদের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চের পরিধি বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সমমনা একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে।

জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা প্রথমিকভাবে আমাদের দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরির কাজ শনিবারের মধ্যে শেষ করব। এরপর পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। গণতন্ত্র মঞ্চের পরিধি বা জোটের শরিক বাড়ানো সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকেই ইতোমধ্যে আমাদের সঙ্গে শরিক হওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনাও করেছেন। আমরাও চাই আমাদের মঞ্চের পরিধি বাড়ুক। তবে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎভাবে রাজপথে ছিল গণতন্ত্র মঞ্চ। আগামী নির্বাচনে তারা বিএনপির সঙ্গে কিছু আসনে সমঝোতা করে ভোট করবে। এর বাইরে জোটগতভাবেও নির্বাচনি মাঠে থাকবে গণতন্ত্র মঞ্চ। এজন্য নিজেদের মধ্যে আসন সমঝোতার পাশাপাশি অন্য দলের সঙ্গেও সমঝোতার চেষ্টা অব্যাহত আছে তাদের। তবে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা ছাড়াই নির্বাচনি মাঠে থাকবে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিকরা। এজন্য তারা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতিও শুরু করেছে। প্রয়োজনে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নিতে দেখা যেতে পারে তাদের।

জানা গেছে, নির্বাচনি প্রস্তুতির পাশাপাশি বাম গণতান্ত্রিক জোটেরও পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ চলছে। বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য ন্যাপ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপসহ একাধিক বাম প্রগতিশীল ঘরানার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার খবর পাওয়া গেছে। দুর্গাপূজার ছুটি শেষে একে একে বিভিন্ন বামপন্থি ও প্রগতিশীল দলের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, আমরা সমননা অনেকের সঙ্গে কথা বলছি। পাশাপাশি নিজেদের মতো করে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এছাড়াও দক্ষিণপন্থিদের মোকাবিলায় বাম প্রগতিশীলদের এক ছাতার নিচে আনারও চেষ্টা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে আমরা জোটগতভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আসন বণ্টন বা সমঝোতা নিয়ে এখনো কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। পূজার ছুটি শেষ হলে আমরা বসব। কার কার সঙ্গে আমরা আলোচনা করতে পারি, সেগুলো নিয়েও কথা বলব।