ঢাকা, শনিবার ১৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১৫:৫৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বিশ্বে প্রতি ২০ নারীর মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন না পলাতক ব্যক্তিরা ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান হাদির পরিবারের পাশে ডা. জুবাইদা রহমান

মাইলস্টোন ট্রাজেডি: ‘ভিক্ষা চাই না, আমি বিচার চাই’

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৩৬ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২৫ শনিবার

মাইলস্টোন ট্রাজেডি: ‘ভিক্ষা চাই না, আমি বিচার চাই’

মাইলস্টোন ট্রাজেডি: ‘ভিক্ষা চাই না, আমি বিচার চাই’

রাজধানী ঢাকার বাতাসে পোড়া লাশের গন্ধ। চারদিকে সন্তান হারানোর শোকের মাতম। জীবনের অমোঘ সত্যের মুখোমুখি বাবা-মা সন্তানের গলে যাওয়া লাশ হাতে কাঁদছেন। এতগুলো নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যুতে পুরো জাতি আজ স্তব্ধ-শোকাহত।

গত ২১ জুলাইয়ের দুপুরে সেই অসহনীয় সত্যটাই নামল ঢাকার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সামরিক বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান স্কুল ভবনে আছড়ে পড়ে মুহূর্তেই মৃত্যু ছিটিয়ে দেয় শ্রেণিকক্ষে। শুরু হয় মৃত্যুর ক্লাস। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বই, খাতা, ব্যাগ—আর সবচেয়ে বড় কথা, শিশুমন।

‘আমার ছেলে আর ফেরত আসবে না, কিন্তু যারা এ মৃত্যু বানিয়েছে, তারা যেন শাস্তি পায়’।

শহীদুল ইসলাম জানেন, তার ছেলে আজিম আর কখনও ঘুম থেকে উঠবে না। কিন্তু তবু তিনি বারবার ছুটছেন হাসপাতাল থেকে প্রশাসনের দপ্তরে—কারণ তিনি চান বিচার।

তিনি কাঁপা গলায় বলেন,‘সরকার বলছে সাহায্য দেবে। কী সাহায্য? আমার ছেলের পুড়ে যাওয়া হাত ফেরাবে? আমি ভিক্ষা চাই না, আমি বিচার চাই।’

ভবিষ্যৎ কেড়ে নিয়েছে এক অবহেলার ধাক্কা ২১ জুলাই দুপুরে বিমানটি ধাক্কা দেয় স্কুলের মূল ভবনের একাংশে। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠে সারা এলাকা। আগুনে দগ্ধ হয়ে এখনো অনেক শিশু জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।আর যারা মারা গেছে, তাদের অধিকাংশের মুখই চেনার উপায় নেই।

মাইলস্টোনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সামরিনের মা বললেন, “আমি আর তার মুখ দেখি না, শুধু এক টুকরো পোড়া জামা পেয়েছি। এটাই কি আমি ফেরত পেলাম?”

অভিভাবকদের দাবি, “এটা দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড” বিমান চলাচলের এলাকায় স্কুলের অনুমতি কার দিয়েছে? কেন নেওয়া হলো না কোনো সতর্ক ব্যবস্থা? বিমানবাহিনী কি জানত না এখানে স্কুল রয়েছে?

এসব প্রশ্ন এখন শুধু প্রতিবাদ নয়, কান্নার ভাষা হয়ে উঠেছে রাস্তায়, হাসপাতালে, আর মর্গের বাইরে।

একজন ক্ষুব্ধ অভিভাবক বলেন, “বাচ্চাদের প্র্যাকটিস টার্গেট বানিয়েছে যেন। এই দায় কেউ এড়িয়ে যেতে পারবে না।”

সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল: সাহায্য নয়, বিচার চাই টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম জুড়ে এখন একটাই স্লোগান—
#বিচার_চাই #মাইলস্টোন_হত্যাকাণ্ড

হাসান শরীফ লিখেছেন , “আমার ছোট ভাই স্কুলে গিয়ে আজ বার্ন ইউনিটে। সরকার যদি সত্যিই দায়ী না হতো, তাহলে এত প্রশ্ন উঠত না।”

যে শিশুরা হারিয়ে গেছে, তারা তো আর ফেরত আসবে না। কিন্তু এই কান্না যদি বিচার না পায়, তাহলে এই মাটিতে আবারও এমন কান্না শোনা যাবে। এমটাই বলছিলেন সচেতন নাগরিক সমাজ।

নাজমা বেগম বলেন, “আমার মেয়ে তাসনিম শুধু একটা ছোট্ট স্বপ্ন দেখেছিল—ডাক্তার হবে। আজ তার হাতই নেই। কেউ যেন আর এমন স্বপ্ন না হারায়।”

এটা শুধু একটা দুর্ঘটনা না—এটা যেন গোটা জাতির হৃদয়ে বাজে কফিনের পেরেকের মত।

এই ট্রাজেডি প্রমাণ করে, অবহেলা, দায়িত্বহীনতা আর নিষ্ক্রিয়তার মূল্য কতটা ভয়াবহ হতে পারে। আর সেই মূল্য দিচ্ছে—শিশু, মা-বাবা আর একটি দেশের ভবিষ্যৎ।