বাবার উৎসাহে যুদ্ধে যান সাবিত্রী বিশ্বাস
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৯:০৮ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২১ শুক্রবার
বাবার উৎসাহে যুদ্ধে যান সাবিত্রী বিশ্বাস
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবিত্রী বিশ্বাস। রাজশাহীর অহংকার এই সাহসী নারী মুক্তিযোদ্ধা৷ বাবার উৎসাহে মুক্তিযুদ্ধের নিজেকে উৎসর্গ করেন তিনি। আগরতলায় অবস্থিত হাসপাতালে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন নিজ হাতে। দিন-রাত খেটে সেবা করেছেন আহতদের৷ বাবা বলেছিলেন, দেশের জন্য কিছু করো মা, দেশকে বাঁচাও। তা না হলে তো হবে না৷ তুমি কি শুধু বসে থাকবে? এ দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব তোমারও।
রাজশাহীতে ১৯৫৪ সালের ২১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন সাবিত্রী বিশ্বাস৷ তার বাবা মহেন্দ্রনাথ পোদ্দার এবং মা নিহারবালা পোদ্দার৷ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৭ বছর বয়সের তরুণী সাবিত্রী৷ এ সময় মানসমন্দির বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন তিনি৷
গ্রামে বেড়ে ওঠা সাবিত্রী বরাবরই খুব সাদাসিধে ও সহজ-সরল ছিলেন৷ বাবার বলা কথাগুলো এ সময় সাবিত্রীর মনে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। কি করা যায়, কিভাবে দেশের জন্য কাজ করা যায় ভাবছেন তিনি। ঠিক এসময় ২ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা রাজশাহীর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আইনজীবী বিরেন্দ্রনাথ সরকার ও সমাজসেবী সুরেশ পান্ডেকে হত্যা করে। এ ঘটনা তার মনে ব্যাপক দাগ কাটে৷ এর সাথে ছিল বাবার উৎসাহ৷ তিনি সিদ্ধান্ত নেন দেশের জন্য কাজ করবেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়াবেন।
২ এপ্রিলের হত্যাকান্ডের ঘটনার পর আর ভাবেননি সাবিত্রী। দেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমান তিনি। পরের দিন ৩ এপ্রিল মা-বাবা ও অন্যান্যদের সাথে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন৷ পদ্মা নদীর চর দিয়ে সীমান্তের দিকে দলের সাথে এগিয়ে যান সাবিত্রী৷ বিদায় জানান প্রিয় জন্মভূমিকে; ভিটে-মাটি আর আপনজনদের৷
দেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি দেয়ার ঘটনা স্মরণ করে সাবিত্রী বিশ্বাস বলেন, ‘রাজশাহীর আলুপট্টির ধার দিয়ে হাটতে হাটতে এক সময় পদ্মা নদী দেখতে পাই৷ সেখানে থেকে একটি নৌকায় করে আমরা নদী পার হই৷ আবারো পায়ে হেটে কাতলামারী সীমান্তে পৌঁছাই৷ কিন্তু ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী প্রথমে ভারতে ঢুকতে বাধা দেয়৷ দীর্ঘ অপেক্ষার পর অনুমতি পেয়ে ভারতের পশ্চিমবাংলার মুর্শিদাবাদে যাই পরিচিতদের কাছে৷'
বাবা মহেন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় কলকাতায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন নারীদের প্রশিক্ষণ শিবিরে নিজের নাম নিবন্ধিত করেন সাবিত্রী৷ প্রাথমিক পরীক্ষার পর তাকে কলকাতায় গোবরা নারী মুক্তিযোদ্ধা শিবিরে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়৷ সেখানে আত্মরক্ষা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেনে তিনি। এরপর তাকে আগরতলা বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবার দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টাই তিনি হাসপাতালে হাসপালে সেবা করে কাটিয়েছেন।
এ সময়ের স্মৃতি স্মরণ করে সাবিত্রী বিশ্বাস বলেন, ‘আমার বাবা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর প্রশিক্ষণ শিবিরের খোঁজ পেয়ে আমাকে নিয়ে গেলেন সেখানে৷ আমি সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে চিকিৎসা সেবা শুরু করি৷ আহত মুক্তিযোদ্ধাদের ওষুধ খাওয়ানো, ইঞ্জেকশন দেওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ সবকিছুই করেছি৷’
তিনি আরও বলেন, ‘ এই হাসপাতালে কত যে আহত মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের দেখেছি। রক্তাক্ত অবস্থা তারা আসতো। কারো পা নেই, কারো হাত নেই, কারো শরীরের কোনো অংশ উড়ে গেছে বোমার আঘাতে। সে কি বিভৎস দৃশ্য। শিহরিত হয়ে উঠতাম আমরা। চোখের পানি আটকে রাখা কঠিন হয়ে যেত। একদিন বুলেটবিদ্ধ একজন মুক্তিযোদ্ধার দুই হাত থেকে গুলি বের করতে গিয়ে আমি প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলাম৷ পুরো জ্ঞান না হারালেও খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম৷ খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার৷'
১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হবার পর কুমিল্লা দিয়ে প্রথমে ঢাকায় ফিরে আসেন সাবিত্রী এবং তার সঙ্গিরা৷ ঢাকায় এক মাস থেকে নওগাঁর নারী মুক্তিযোদ্ধা আরতী এবং সাবিত্রী রাজশাহী যান৷ ১৯৭৩ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়োগ পান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবিত্রী বিশ্বাস৷ সেই থেকে মানবসেবায় রত সাবিত্রী ২০১১ সালে অবসর নেন৷
১৯৯৬ সালে নারী প্রগতি সংঘ ঢাকায় গোবরা নারী মুক্তিযোদ্ধা শিবিরের নারী মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতারের নারী শিল্পীদের সংবর্ধনা দিয়েছিল৷ সেই অনুষ্ঠানে অন্যদের সাথে সংবর্ধনা পান সাবিত্রী বিশ্বাসও৷ এছাড়া রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনও তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংবর্ধনা দিয়েছে৷
বাংলাদেশের স্বাধীনতার এত বছর পর দেশের অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার প্রত্যাশা সম্পর্কে সাবিত্রী বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা আর কীভাবে ভালো থাকলাম, আমাদের আর কতটুকুই বা মূল্যায়ন হলো! তবে এখন আর এসব নিয়ে ভাবি না। দেশ ভালো থাকলেই আমরা শান্তি পাবো৷ আর সেটাই প্রত্যাশা'
- আজ মহান বিজয় দিবস
- দেশজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’
- বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত
- গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে : রাষ্ট্রপতি
- সাংবাদিকদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে সরকার
- ‘হয়তো জানতেও পারবো না, মা কবে মারা গেছেন’
- মা-মেয়েকে হত্যায় ব্যবহৃত সেই ছুরিও ছিল চুরি করা
- ‘শীত পালাবে তোমায় দেখে’ মিমের রূপে মুগ্ধ ভক্তরা
- আজ থেকে শুরু হচ্ছে নারী ক্রিকেট লিগ
- এবার সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে মধুমিতা
- ১৬ বছর রাতে ঘুমাননি মির্জা ফখরুল: রাহাত আরা বেগম
- এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্প-ক্লিনটনের নতুন ছবি ফাঁস
- প্রেমিকের বাড়িতে দশম শ্রেণির ছাত্রীর লাশ, বিচার দাবি
- ওয়াংখেড়েতে এক ফ্রেমে ক্রিকেট ঈশ্বর ও ফুটবল জাদুকর
- হাদি হত্যাচেষ্টা: আরও তিন সন্দেহভাজন আটক
- আজ থেকে শুরু হচ্ছে নারী ক্রিকেট লিগ
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় নাবিহা, তৃতীয় তাহমিদুল
- যুক্তরাষ্ট্রে অনিশ্চয়তায় টিকটকের বিনিয়োগকারীরা
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন নেই
- নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা
- সিডনিতে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত বেড়ে ১৬
- ‘শীত পালাবে তোমায় দেখে’ মিমের রূপে মুগ্ধ ভক্তরা
- ঝুঁকিতে থাকা প্রার্থী ও ব্যক্তিরা পাচ্ছেন গানম্যান-বডিগার্ড
- ওয়াংখেড়েতে এক ফ্রেমে ক্রিকেট ঈশ্বর ও ফুটবল জাদুকর
- ১৬ বছর রাতে ঘুমাননি মির্জা ফখরুল: রাহাত আরা বেগম
- মা-মেয়েকে হত্যায় ব্যবহৃত সেই ছুরিও ছিল চুরি করা
- বাংলাদেশি শান্তিকর্মীদের ওপর হামলা, সুদানকে সতর্কবার্তা জাতিসংঘের
- এবার সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে মধুমিতা
- হাদি হত্যাচেষ্টা: আরও তিন সন্দেহভাজন আটক
- প্রেমিকের বাড়িতে দশম শ্রেণির ছাত্রীর লাশ, বিচার দাবি

