ঢাকা, সোমবার ১৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:০৭:২২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা ঝুঁকিতে থাকা প্রার্থী ও ব্যক্তিরা পাচ্ছেন গানম্যান-বডিগার্ড বাংলাদেশি শান্তিকর্মীদের ওপর হামলা, সুদানকে সতর্কবার্তা জাতিসংঘের খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন নেই সিডনিতে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত বেড়ে ১৬

ঝুঁকিতে থাকা প্রার্থী ও ব্যক্তিরা পাচ্ছেন গানম্যান-বডিগার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:০২ এএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে যারা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন, তাদের গানম্যান ও বডিগার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে তাদের গানম্যান দেওয়া হবে। আর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ইউনিফর্মধারী বডিগার্ডের ব্যবস্থা করবে। প্রার্থী ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তি ঝুঁকিতে আছেন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারাও একই ধরনের সুবিধা পাবেন। নির্বাচন পর্যন্ত তাদের জন্য এমন নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। 

গতকাল রোববার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তপশিল ঘোষণার পরদিনই ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সরকার এসব ব্যবস্থা নিচ্ছে।

জানতে চাইলে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম রোববার বলেন, প্রার্থীদের মধ্যে যাদের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি রয়েছে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আবার রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ছাড়াও অন্য পেশার যারা ঝুঁকির তালিকায় রয়েছেন, তাদেরও একই ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। কেউ কেউ আমাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার মধ্যে থাকবেন, আবার কারও কারও জন্য কয়েক দফায় প্যাট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। 

আইজিপি জানান, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করে দিয়েছে। ওই কমিটি ঠিক করবে, কে কী রকম নিরাপত্তা পাবেন। কেউ নিরাপত্তার অতিঝুঁকিতে থাকলে তিনি গানম্যান ও বডিগার্ড পেতে পারেন। ঝুঁকি বিবেচনা করে গতকাল রোববার থেকেই কয়েকজনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান। 

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়, সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে পুলিশের তরফে সব রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করা হবে। এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা এবং আসছে নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা ও সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন– সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে। গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতৃত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

পুলিশ সূত্র বলছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তির তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি সিকিউরিটি প্রটোকল তৈরি করা হয়েছে। আজকালের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রটোকলের ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হবে। এর আওতায় তারা কী কী সতর্কতা অবলম্বন করবেন তা উল্লেখ থাকবে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তির জন্য সিকিউরিটি প্রটোকল তৈরি করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা। 

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সারাদেশে অস্ত্রধারী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মধ্যে যারা জামিন পেয়ে বের হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। অভিযানে তাদের গ্রেপ্তারের ওপর বাড়তি জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। 

সূত্র বলছে, নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ– এমন তালিকা তৈরি করার কাজ চলছে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রার্থী ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, ব্লগার ও সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজন ঝুঁকিতে আছেন, তারাও নিরাপত্তা প্রটোকল পাবেন। 

পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত দেওয়া এই নিরাপত্তা ব্যবস্থাটিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের সমন্বিত ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কিছু বিষয় রয়েছে, যেটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজ উদ্যোগে গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হবে। এর মধ্যে বাসস্থানের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয় থাকছে। সিসি ক্যামেরা না থাকলে তা বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হবে। আবার কারও বাসস্থানে ব্যক্তি উদ্যোগে বেষ্টনী তৈরির পরামর্শ দেওয়া হবে। বাসা থেকে বের হয়ে যেসব গন্তব্যে তারা যান, সেটি ঘিরে থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি। 

এক কর্মকর্তা বলেন, জেলা পর্যায়ে কারা নিরাপত্তা পাবেন, সেই তালিকা করছে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা। 

পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, এরই মধ্যে সারাদেশে অপারেশন ডেভিল হান্টের দ্বিতীয় পর্যায় চলছে। অবৈধ ও লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। চিহ্নিত অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করতে মাঠ প্রশাসনকে বলা হয়েছে। 

গত ২৭ নভেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে অন্তত ১১টি গুলির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। এর আগে গত ৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগর বিএনপি আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন।