‘হাঁস বদলে দিয়েছে আমাদের জীবন। হাঁস পালন করেই আজ আমরা সুখি। আমাদের পরিবারে আসছে সচ্ছলতা।’ বলছিলেন হাঁসের সফল খামারি জাহানারা বেগম।

দেশের নারীরা এখন শুধু ঘরে বসে ঘরকন্না নিয়েই ব্যস্ত নেই। তারা অর্থ উপার্জন করে পরিবারে অবদান যেমন রাখছেন, তেমনই আয়-উপার্জনের পথ দেখিয়ে চলেছেন আরও দশজন তরুণী-গৃহিণীকে।

এক সময় পরিবারের নিত্য চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হতো জামালপুরের খুরশিদা বেগম খুশির। এখন তিনি তার এলাকায় আত্ম-কর্মসংস্থানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ৪৬ বছর বয়সী এই উদ্যোক্তা নারী তমাল তলা এলাকায় চালাচ্ছেন “খুশি বস্ত্রালয়” নামের এক বুটিক হাউজ।

ভালবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম উইম্যান চেস্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রির জন্য আয়োজন করছে ‘সিএমএসএমই প্রডাক্টস ফেয়ার’র।

বাংলাদেশ মূলত একটি গ্রাম প্রধান দেশ। দেশের ৬৮ হজার গ্রামের উন্নয়নের ওপরই মূলত নির্ভর করছে দেশের উন্নয়ন। সুতরাং গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (স্কিটি) দেশের শিক্ষিত নারীদের জন্য পাঁচ দিনব্যাপী ‘নারীদের জন্য ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেছে।

নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সারা পৃথিবীতে একটি সুপরিচিত নাম। নারীর নিরাপত্তার ও নির্ভরযোগ্য ঠিকানার নাম হলো বাংলাদেশ। আর এসব সম্ভব হয়েছে সরকারের নেয়া নানা কল্যাণমুখী উদ্যোগের ফলে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, কোভিড-১৯ এর কারণে নারী উদ্যোক্তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের এই ক্ষতি উত্তরণে উদ্ভাবনী ডিজিটাল মডেলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

কর্মবিমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত অসংখ্য বেকারের মধ্যে চাকরি এখন সোনার হরিণ। এ অবস্থায় অনেকেই সাহসী যুবক বেকারত্বের বিষবাষ্প থেকে বেরিয়ে নিজেকে মুখোমুখি করেন উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চ্যালেঞ্জে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের সহায়তায় প্রথমবারের মত দেশের নারী-উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক ১৪টি সংস্থার একটি ডিরেক্টরি প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (আইটিসি) শীট্রেডস।

দেশের নারী উদ্যোক্তাদের নেটওয়ার্কিং প্লাটফর্ম ওমেন অ্যান্ড ই-কমার্স (উই) ফোরামের নারী সদস্যদের বিশ্বখ্যাত ‘এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ মাস্টারক্লাস ১.০’ সিরিজের আওতায় প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা করবে সরকার।

কত টাকা পূঁজি আছে বা কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে তা নয়, বরং একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে বড় মূলধন তার নতুন কিছু করতে চাওয়ার ইচ্ছা।

করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়িদের ক্ষতির পরিমান নিরুপণ করে আর্থিক ও টেকনিক্যাল সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রিন্স গার্মেন্টেসের (প্রা.) চেয়ারম্যান মো. তাসলিম আক্তার বৃহস্পতিবার বিকেলে মারা গেছেন। রাজধানীর কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

পণ্যের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বুধবার রাজধানীতে শুরু হচ্ছে নয় দিনব্যাপী জাতীয় এসএমই মেলা-২০২০।

পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের মল্লিকাদহ শাহাপাড়া গ্রামের বেকার নুর হোসেনের স্ত্রী গুলজান বেগম। গুলজান বেগমের সংসারে সাফল্য এসেছে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের সদস্য হয়ে লোন নিয়ে হাঁসের খামার করে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, নারী উদ্যোক্তা বিকাশ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।

পাটকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশের অনেক উদ্যোক্তা। তাদেরই একজন আফসানা আসিফ সোমা। তিনি পাট নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন এবং মানুষের কাছে পাটকে নতুনভাবে উপস্থাপন করছেন।

ইঞ্জিনিয়ার-এমবিএ বাবার ইচ্ছা ছিল মেয়ে বড় চাকরি করবে। ভারতের মুম্বাইয়ের নামজাদা এমবিএ কলেজে মেয়েকে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মেয়ের ইচ্ছা ছিল অন্য।

কিশোরী মর্জিনা বেগমের স্বপ্ন ছিল নিজে স্বাবলম্বী হয়ে পরিবারের হাল ধরার। কিন্তু তার বাবার ছিলো অভাবের সংসার। ১৯৯৫ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় কিশোরী মর্জিনার বিয়ে হয়ে যায়।

মিনুরা, রাজশাহী জেলার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠি সাঁওতাল পরিবারের মেয়ে। গোদাগাড়ী থানার গোগ্রাম গ্রামে তাদের বসবাস। তার স্বামী শ্রী মানিক। পরিবারের সদস্য ৫ জন। কৃষিনির্ভর এ পরিবারটির আয়ের উৎস তিন বিঘা বর্গা জমি।

নওগাঁর ধামইরহাটের বরেন্দ্র অঞ্চলের মেয়ে রিনা আক্তার। লেখাপড়া শেষ করার পর চাকরি খোঁজার বদলে মন দিয়েছেন কৃষিকাজে। খুব অল্প সময়ে বিদেশী ফল মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এই নারী উদ্যোক্তা।

নওগাঁয় একটি বাড়ি একটি খামার কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়ে শ্যামলী বেগম স্বাবলম্বী হয়েছেন। অভাবের সাথে পাল্লা দিয়ে একদিন যে পরিবার প্রতিদিন হিমশিম খেয়েছে। সেই সংসারেই আজ এসেছে সুখ আর স্বাচ্ছন্দ।

ঘন কালো জমিনের ওপর টকটকে সিঁদুরে লাল রঙের পাড়। তার উপরের দিকটায় একই রঙের আরেকটা ডিজাইন। ঠিক যেন মন্দিরের চূঁড়া। একেকবার সুতার টানে মন্দিরের মতো নকশাটি ফুটে উঠছে কাপড়টিতে। এভাবে একেকটা শাল বুনতে অনুরাণীর সময় লাগে দুই দিন।