ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৪:৫৪:১৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

আগুন বরণ শিমুল ফুলের কথা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:০০ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রবিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বাংলার মায়াময় ছায়াময় রূপ,
নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যের অপূর্ব কূপ।
ফুলে-ফলে ভরা আর মাটি-বায়ু-জল,
এসব দেখিলে মন হয় উচ্ছ্বল।
কবি মাহামুদুর রহমানের এই কবিতা অনেকেই পড়েছেন। এমনসব কবিতা পড়ার পরে আপনার ঘরের বারান্দায় রাখা রকিং চেয়ারটায় বসলেন আপনি। যেন আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে এল চোখের পাতা। হয়ত মনে পড়বে সেই গ্রামটিকে। যে গ্রামে রয়েছে আপনার জন্মস্মৃতি। যে যেথায় থাকুক না কেন, অনেকেরই শেকড় যে গ্রামেই। এ যেন শেকড়ের টান।

রিকিং চেয়ারে দুলতে দুলতে আপনার মনে পড়ে যাবে সেই মেঠপথ আর দূরন্ত ছেলেবেলার গল্পগুলো। মনে পড়ে যায়, সেই শিমুল ফুলে জড়ানো বসন্তকালের বিকেলের কথা।

আজ সেই আগুন বরণ শিমুল ফুল নিয়েই কথা হোক।

গাঁও-গ্রামের পথ-প্রান্তরের এক নজরকাড়া সৌন্দর্যের নাম ‘শিমুল ফুল’। গাছে শিমুল ফুলের আগমনের মাধ্যমে প্রকৃতি বসন্তের বার্তা দেয়। গ্রাম বাংলার মানুষ ক্যালেন্ডারের তারিখ গণনা করতে না পারলেও শিমুল গাছে ফুল এলেই বলতে পারে এখন ফাল্গুন মাস এসেছে। কিন্তু দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের সৌন্দর্যের এই বাহনটি।

গাঢ় লাল রঙের পাপড়ি আর সবুজ রঙের বোঁটায় শোভিত এক অপরূপ ফুলের নাম শিমুল। ফাল্গুনের প্রথম দিকেই শিমুল গাছে ফুটে লাল রঙের ফুল। আর চৈত্রের শেষে ফুটন্ত তুলা বাতাসের সঙ্গে উড়ে উড়ে প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখে। ফুলের হাসি দেখে মনে হয় সবুজের বুকে আগুন লেগেছে। যা দূর থেকেও মানুষের নজর কাড়ে, হৃদয় কাড়ে।

শিমুল আমাদের অত্যন্ত পরিচিত একটি ফুল। তাই শিমুল শব্দটা উচ্চারণ করলে সবার আগে এর রক্তরাঙা চেহারার কথাই মনে আসে। শীত মৌসুমের শেষ দিকে এই গাছের সব পাতা ঝরে যায়। ফুল ফোটার শুরু থেকেই গাছ হতে থাকে পাতাশূন্য। আর ফুল শেষেই গাছে ফল ধরে।

শিমুলের ইংরেজি নাম Silk Cotton Tree। যার বাংলা নাম- শিমুল, রক্ত শিমুল, লাল শিমুল। এর বৈজ্ঞানিক নাম- B.ceiba। Bombax গণের অন্তর্গত পাতাঝরা বৃক্ষ জাতীয় তুলা উৎপাদক উদ্ভিদ।

বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় এ গাছ প্রচুর জন্মে। লম্বায় প্রায় ১৫-২০ মিটার অবধি হয়। এর শাখা-প্রশাখা অপেক্ষাকৃত কম। সরল ও বৃত্তাকারভাবে চারদিকে বিস্তৃত। বাকলে কাঁটা থাকে। কাঁটার অগ্রভাগ সরু ও তীক্ষ্ণ এবং গোড়া বেশ মোটা।

পথের ধারে শিমুল ফুল পথচারীদের আকৃষ্ট করে। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে দেখা যায় শিমুল গাছ। তবে বাংলার মাঠে-ঘাটে রাস্তার পাশে অনাদর অবহেলায় বেড়ে উঠে এই গাছ। সে গাছের সবুজ পাতা, মুকুল, ফুল আর কোকিলের ডাক মনে করিয়ে দেয় বসন্তের বার্তা।

তবে আগের মতো অত শিমূল আজ আর নেই। গ্রামে শিমুল গাছ তেমন একটা চোখে পড়ে না। শিমুল যেন হতে চলেছে অতীত স্মৃতি। গাছ কেটে কাঠ সংগ্রহ, বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক কাঠামো উন্নয়ন, অগ্নিকাণ্ড, বাণিজ্যিক বৃক্ষরোপণ, আগ্রাসী বনায়ন এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এই প্রজাতির বৃক্ষটি আজ হুমকির মুখে।